নোয়াখালী: নোয়াখালীর কবিরহাট উপজেলায় সাত এসএসসি পরীক্ষার্থীর ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান হারুনের বিরুদ্ধে।
সোমবার (৯ ডিসেম্বর) সকাল ১১টার দিকে উপজেলার ঘোষবাগ ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কোম্পানির হাট বাজারে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
হামলার শিকার শিক্ষার্থীরা হলের- সালমান হোসেন (১৬), আব্দুল লতীফ অন্তর (১৭), ইমদাদুল হক মাহীম (১৬), আব্দুর রহিম (১৭), নাজমুল হক (১৭), রিয়াজ উদ্দিন সাইম (১৭) ও মো. রিয়াজ (১৬)। তারা সবাই স্থানীয় কোম্পারিরহাট আবদুর রহিম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে।
শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন, আবদুর রহিম উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য ও কোম্পানির হাট বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি নুরুল হুদা।
হামলার শিকার শিক্ষার্থী সালমান হোসেন অভিযোগ করে বলেন, আমরা সাতজন শিক্ষার্থী এসএসসির নির্বাচনী পরীক্ষায় (টেস্ট পরীক্ষা) ফেল করি। এজন্য সোমবার সকালে আসন্ন এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার অনুমতির জন্য বিদ্যালয়ে যাই। বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখি সেখানে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির বৈঠক চলছে। এরপর আমরা সাতজন শিক্ষার্থী বিদ্যালয় সংলগ্ন কোম্পানির হাট পশ্চিম বাজার এসে অপেক্ষা করতে থাকি।
এক পর্যায়ে সেখানে সাবেক ছাত্রদল নেতা হারুন কোনো কারণ ছাড়াই আমাদের ওপর অতর্কিতভাবে হামলা চালায়। এ সময় আমাদের সাত শিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারধর করা হয়। এরপর তিনি ও সাবেক ইউপি সদস্য শাহজাহান আমাদের পুরো বাজারে দৌড়াতে দৌড়াতে পিটায়। আমরা আতঙ্কিত হয়ে বাজার কমিটির সভাপতির দোকানে আশ্রয় নিলে সেখানেও আমাদের মারধর করে হারুন।
আবদুর রহিম উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য ও কোম্পানির হাট বাজার পরিচালনা কমিটির সভাপতি নুরুল হুদা বলেন, সকালে ছাত্রদল নেতা হারুন কয়েকজন ছাত্রকে এলোপাতাড়ি চড়-থাপ্পড় দেন। এরপর ছাত্রদের সঙ্গে ঝগড়া করে হারুন আমার দোকানে এসে পুনরায় ছাত্রদের ওপর হামলা করেন। এক পর্যায়ে হারুন লাঠি, হকিস্টিক, কিরিচ নিয়ে বাজারে অবস্থান নেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কবিরহাট উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান হারুন অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, ছাত্রদের হামলায় সাবেক ইউপি সদস্য মো. শাহজাহানসহ তার পাঁচ অনুসারী আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
এ বিষয়ে তিনি বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলতে বলেন।
আবদুর রহিম উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নিখিল চন্দ্র দাস জানান, কয়েকজন ছাত্র এসএসসির টেস্ট পরীক্ষায় ফেল করে। সাকিব নামে এক ছাত্রদল নেতা তাদেরকে এসএসসির ফরম পূরণ করার বিষয়ে আশ্বস্ত করে। গত সোমবার সকাল ১১টার দিকে ছাত্রদল নেতা হারুনের সঙ্গে ছাত্রদের দেখা হয়। দেখা হলে দাঁড়িয়ে থাকার কারণ জানতে চাইলে ছাত্ররা জানায় ছাত্রদল নেতা সাকিব তাদেরকে ফরম পূরণের ব্যবস্থা করে দেবে। ওই সময় হারুন জানতে চান, তোমরা কয় বিষয়ে ফেল করেছো। ছাত্ররা উত্তর দেন, তারা কয় বিষয়ে ফেল করেছে জানেন না। ছাত্ররা রেজাল্ট জানতো, তারা বলেছে জানি না। এ কারণে মনে হয় কয়টা চড়-থাপ্পড় দেওয়া হয়েছে। বাজারে এর বেশি কী হয়েছে, সে বিষয়ে আমার কিছু জানা নেই।
কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহীন মিয়া জানান, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তবে এ ঘটনায় কেউ থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দেননি। অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০২৪
এসআরএস