ঢাকা, শুক্রবার, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

সৌদির প্রবাসী কর্মীরা বেতন না পেলে শাস্তি পাবেন নিয়োগকর্তা

তৌহিদুর রহমান, ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭, ২০২৪
সৌদির প্রবাসী কর্মীরা বেতন না পেলে শাস্তি পাবেন নিয়োগকর্তা

রিয়াদ থেকে ফিরে: প্রবাসী কর্মীদের নির্ধারিত সময় অনুযায়ী বেতন-ভাতা দেওয়ার জন্য কঠোর নিয়ম চালু করেছে সৌদি আরব।  

বিদেশি কর্মীদের জন্য বেতন-ভাতা নিশ্চিতে ওয়েজ প্রোটেকশন সিস্টেম (ডাব্লিউপিএস) চালু করেছে দেশটি।

এই নিয়মের আওতায় নিয়োগকর্তা কর্মীদের বেতন না দিতে পারলে শাস্তি পাবেন।

সৌদি আরবের ওয়েজ প্রোটেকশন সিস্টেম (ডাব্লিউপিএস) হলো একটি ইলেকট্রনিক ট্র্যাকিং পদ্ধতি। এই নিয়মের আওতায় কর্মীদের বেতন-ভাতা নিয়োগ কর্তা  তার কর্মীদের কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পরিশোধ করবেন।

ডাব্লিউপিএসে কর্মী ও নিয়োগ কর্তাদের ডাটা সংরক্ষণ করা হয়। চুক্তি মতো কর্মীরা নিয়োগ কর্তার কাছ থেকে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন কি না, সেটা এই সিস্টেমে রেকর্ড করা হয়ে থাকে। যেটা সৌদি আরবের শ্রম মন্ত্রণালয় মনিটরিং করে। নিয়োগকর্তা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে বেতন-ভাতা পরিশোধ না করলে সরকার থেকে শাস্তি দেওয়া হয়।

মানব সম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সৌদি আরবে বর্তমানে ২৭ লাখ ৯০ হাজার ৪২৫ জন বাংলাদেশি কর্মী রয়েছেন। এর মধ্যে সাধারণ খাতে রয়েছে পুরুষ কর্মী রয়েছেন ২১ লাখ ১ হাজার ৫৯০ জন। একই খাতে নারী কর্মী রয়েছেন ১৯ হাজার ৮৭৩ জন। আর গৃহখাতে ৪ লাখ ৩২ হাজার ৯৩৪ পুরুষ ও নারী কর্মী রয়েছেন ২ লাখ ৩৫ হাজার ২৮ জন।

সম্প্রতি ঢাকা থেকে যাওয়া একটি সাংবাদিক প্রতিনিধি দল রিয়াদে মানব সম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে মত বিনিময় করেন। সে সময় সৌদি কর্মকর্তারা দেশটিতে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশি কর্মীদের অবদান স্বীকার করেন। তারা সৌদি আরবে কর্মরত প্রবাসীদের নিয়োগকর্তা সময় মতো বেতন-ভাতা না দিলে শাস্তির বিষয়টি তুলে ধরেন।

সৌদি আরবের মানব সম্পদ ও সামাজিক উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানান, বাংলাদেশি প্রবাসীরা কয়েক দশক ধরে সৌদি আরবের কর্মীবাহিনীর একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। তারা সৌদি শ্রমবাজারের বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাদের দক্ষতা নিয়ে এসেছে। তাদের এই অবদান স্থানীয় কর্মীবাহিনীর পরিপূরক। তাদের অবদান সৌদির উন্নয়ন এবং সামাজিক কাঠামোকে সমৃদ্ধ করে। সৌদি আরবে বিশ লাখেরও বেশি বাংলাদেশি প্রবাসী শ্রমিক রয়েছেন। তারা আমাদের সমাজে যে অবদান এনেছে তা আমরা গভীরভাবে মূল্যায়ন করি। আমরা তাদের কল্যাণ রক্ষা, তাদের অধিকার সমুন্নত, তাদের ক্যারিয়ারের বিকাশ ও বৃদ্ধির জন্য বিস্তৃত সুযোগ দেওয়ার জন্য সম্পূর্ণভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

২০২১ সালের সৌদির শ্রম সংস্কার উদ্যোগ (এলআরআই) একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক চিহ্নিত করেছে। যার লক্ষ্য আরও স্বচ্ছ, ন্যায্য এবং ন্যায়সঙ্গত শ্রমবাজার তৈরি করা। এলআরআই শ্রম খাতে নতুন মান স্থাপন করে সমগ্র দেশ জুড়ে প্রবাসী শ্রমিকদের ক্ষমতায়ন করেছে।

মুখপাত্র আরও বলেন, শ্রমিক-কর্মীদের জন্য সৌদি আরবের ওয়েজ প্রোটেকশন সিস্টেম (ডাব্লিউপিএস) চালু হয়েছে। এটা একটি ইলেকট্রনিক ট্র্যাকিং পদ্ধতি। চুক্তির সাথে সামঞ্জস্য রেখে সময়মত মজুরি প্রদান নিশ্চিতে শ্রমিকদের আর্থিক অধিকার রক্ষায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই পদ্ধতির আওতায় যেসব নিয়োগকর্তা যদি  তার চুক্তি মেনে চলতে ব্যর্থ হন, তাদের কঠোর শাস্তি প্রয়োগ করা হয়। ডব্লিউপিএস এখন সমস্ত প্রতিষ্ঠান জুড়ে সম্পূর্ণরূপে চালু। এমনকি একজন কর্মচারীকেও এটা কভার করে। এই পদ্ধতি বাংলাদেশিসহ বৃহত্তর প্রবাসী কর্মীবাহিনীর জন্যই একটি ব্যাপক স্তরের সুরক্ষা প্রদান করে। আমাদের লক্ষ্য কর্মী-নিয়োগকর্তা উভয়ের জন্য ন্যায্যতা এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। বাংলাদেশি শ্রমিকরা সৌদি আরবের শ্রমবাজারের মূল্যবান এবং অবিচ্ছেদ্য সদস্য হিসাবে অব্যাহত থাকবে বলে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭, ২০২৪
টিআর/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।