ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ফরিদপুরে ছাগলের পিপিআর টিকা কর্মসূচিতে নয়ছয়ের অভিযোগ!

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট   | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৪, ২০২৪
ফরিদপুরে ছাগলের পিপিআর টিকা কর্মসূচিতে নয়ছয়ের অভিযোগ!

ফরিদপুর: ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে ছাগলের পিপিআর টিকা কর্মসূচিতে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে এক প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। ছাগলের পিপিআর নির্মূলের পিপিআর রোগ নির্মূল এবং ক্ষুরারোগ নিয়ন্ত্রণ প্রকল্পে ভ্যাকসিনের অতিরিক্ত ব্যবহার দেখিয়ে প্রায় দুই লক্ষাধিক টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করেছেন আবুল কাশেম নামে এক ব্যক্তি।

তবে টিকায় অনিয়ম ও অর্থ আত্মসাতের বিষয়টি অস্বীকার করেছেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. শওকত আলী।

বোয়ালমারীবাসীর পক্ষে স্থানীয় আবুল কাশেম স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মী ও বিভিন্ন সংস্থা'সহ সচেতন নাগরিকদের উদ্দেশে ডাকযোগে খোলা চিঠিতে উল্লেখ করেছেন, বোয়ালমারীতে ছাগলের ক্ষুরারোগ নির্মূলের লক্ষ্যে মোট ৯১ হাজার ৭০০টি পিপিআর টিকা বরাদ্দ দেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর। কমিশন ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া কর্মীদের জনপ্রতি একটি টিকার বিপরীতে ৫ টাকা কমিশন হিসেবে চুক্তিবদ্ধ করা হয় ২২ জন মাঠকর্মীকে। নির্ধারিত সময় সীমার মধ্যে উপজেলায় মোট ব্যবহৃত ভ্যাকসিনের পরিমাণ ৫৫ হাজার খরচ করা হলেও ৯১ হাজার ৭০০টি ভ্যাকসিনের খরচ দেখিয়ে জেলা কার্যালয়ে হিসাব বিবরণী পাঠায় উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর। সেখানে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৫০০ টাকা নিজের পকেটস্থ করার লক্ষ্যেই ডা. শওকত আলী পরিকল্পিতভাবে পিপিআর টিকা ব্যবহারের হিসাবে নয়ছয় করেছেন বলে অভিযোগে বলা হয়েছে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত অক্টোবর মাসে ছাগলের ক্ষুরারোগ নির্মূলের লক্ষে মোট ৯১ হাজার ৭০০টি পিপিআর টিকা বরাদ্দ দেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রকল্প পরিচালক। তিন সপ্তাহ ধরে টিকার কার্যক্রমটি চলে। এর মধ্যে ৬১ হাজার ৯০০টি পিপিআর টিকা ব্যবহৃত করা হয়। বাকি ২৯ হাজার ৮০০ টিকা প্রকল্প পরিচালকের দপ্তরে ফেরত দেওয়া হয়েছে। চলতি বছরের ১ অক্টোবর থেকে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত চলে প্রকল্পটি। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে উপজেলার ১০ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ২২ জন মাঠ কর্মী নিয়োগ দেওয়া হয়।

পিপিআর টিকা কর্মসূচিতে কিছুটা এলোমেলো হাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বোয়ালমারী উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. শওকত আলী বলেন, আমি এখানে নতুন যোগদান করেছি। এখানে যোগদানের আগে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্বে থাকা ডা. আলীম মোল্যা দায়িত্বে ছিলেন। আমি দুই সপ্তাহ টিকা কর্মসূচি চালানোর পরে ট্রেনিংয়ে চলে যাই। পুনরায় ডা. আলীম মোল্যা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পান। তিনি (আলীম) দায়িত্ব পালনকালে পিপিআর টিকা কর্মসূচি না চালিয়েও সম্পূর্ণ টিকা ব্যবহৃত হওয়ার রিপোর্ট পাঠিয়ে দেন। এ নিয়ে তাকে শোকজও করা হয়। পরে ট্রেনিং শেষে আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর সংশোধন করে রিপোর্ট পাঠিয়েছি। এ প্রকল্পে কোনো টাকা আত্মসাতের ঘটনা ঘটেনি। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করতে চেয়েছিল কেউ!

তবে আগে থেকেই ডা. আলীম মোল্যার সঙ্গে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. শওকত আলী আলফাডাঙ্গায় ভি.এস থাকাকালে মনোমালিন্য ছিল বলে তিনি জানান।

এ ব্যাপারে বোয়ালমারী উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের ভেটেরিনারি সার্জন (ভি.এস) ডা. আব্দুল আলীম জানান, তিনি দায়িত্বে থাকাকালে কোনো টিকাও আসেনি এবং উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ট্রেনিংয়ে গেলে তিনি (ডা. আলীম) ভারপ্রাপ্ত হিসেবে দায়িত্বে থাকলেও কোনো টিকার কার্যক্রম হয়নি।  

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সনজিব বিশ্বাস বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমি অবগত আছি। উপজেলা কর্মকর্তা নতুন এসেছে। অনেক বিষয়ে তিনি বুঝে উঠতে পারেননি। ব্যবহৃত হয়নি এ রকম কয়েক হাজার পিপিআর টিকা ফেরত দিছিল। সেগুলো আবার উপজেলায় পাঠানো হয়েছে, মাইকিং করে প্রচার প্রচারণার মাধ্যমে বাকি থাকা ছাগলকে দিয়ে দিতে। অনেক বড় উপজেলা হওয়ায় দেখা যাচ্ছে অনেক ছাগল বাদ পড়তে পারে।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।