ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

গাইবান্ধায় অসময়ে ভাঙন, নদীগর্ভে ৫ শতাধিক বসতভিটা-বিস্তীর্ণ এলাকা

মোমেনুর রশিদ সাগর, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০২৪
গাইবান্ধায় অসময়ে ভাঙন, নদীগর্ভে ৫ শতাধিক বসতভিটা-বিস্তীর্ণ এলাকা

গাইবান্ধা: গাইবান্ধায় অসময়ে দেখা দিয়েছে তিস্তা ও যমুনা নদীর ভাঙন। এতে সদরসহ সুন্দরগঞ্জ, সাঘাটা ও ফুলছড়ি উপজেলায় গেল দুই মাসে নদীতে বিলীন হয়েছে ৫ শতাধিক ঘরবাড়ি, শত শত একর ফসলি জমিসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা।

 

ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব অনেকেই এলাকা ছেড়ে অন্যত্র গিয়ে বসবাস করছেন। কেউবা নাড়ির টানে ভাঙনের মুখে থাকা শেষ জমিটুকু আঁকড়ে পড়ে আছেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে।  

তিস্তার ভাঙনের তীব্রতা সবচেয়ে বেশি সুন্দরগঞ্জ উপজেলার হরিপুর, কাপাসিয়া ও কাশিম বাজার এলাকায়। অপরদিকে যমুনায় ভাঙন দেখা দিয়েছে ফুলছড়ি উপজেলার এরেন্ডাবাড়ি, উড়িয়া, ফজলুপুর এবং সাঘাটা উপজেলার ভরতখালি, হলদিয়া ও ঘুড়িদহসহ অন্তত ২০টি পয়েন্টে।

মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) সরেজমিন ঘুরে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী জানান, দু’দফা বন্যার আগে ও পরে ভাঙনের পর এখন অসময়েও বেড়েছে নদী ভাঙন। অব্যাহত ভাঙনে গত দুই মাসে বিলীন হয়েছে এসব এলাকার পাঁচ শতাধিক পরিবারের বসতভিটে, শত শত একর ফসলি জমি ও গাছপালাসহ অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। বাড়িঘর হারিয়ে অনেকেই আশ্রয় নিয়েছেন উঁচু বাঁধ ও সড়কসহ অন্যের জায়গায়। নদী ভাঙনে সব হারিয়ে নিঃস্ব হলেও কেউ তাদের খোঁজ নেয়নি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, নদী ভাঙন রোধে ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৮৩০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪৬টি প্রকল্পের কাজ চলমান থাকলেও নেই কাজের অগ্রগতি। ফলে ভাঙন ঠেকাতে জিও ব্যাগ ফেলে দায়সারা কাজ করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।  

তাদের দাবি দায়সারা নয় বরং ভাঙন প্রবণ এলাকাগুলো চিহ্নিত করে স্থায়ী প্রতিরোধমূলক প্রকল্প গ্রহণের উদ্যোগ নিতে হবে। একই সঙ্গে ডান তীর রক্ষায় চলমান প্রকল্পের কাজগুলো দ্রুত শেষ করতে হবে।  

এ ব্যাপারে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক বলেন, তিস্তা ও যমুনা নদীর ডান তীরে ভাঙন রক্ষায় চলতি অর্থ বছরে ৪৬টি প্রকল্পে ৮৩০ কোটি ৯৬ লাখ টাকা ব্যয়ে তীর সংরক্ষণ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ মেরামত কাজ চলমান রয়েছে। কার্যাদেশ অনুযায়ী ২০২১ সালের জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এসব প্রকল্পের কাজ ২০২৬ সালের ডিসেম্বরে শেষ হওয়ার কথা। এখন পর্যন্ত এসব প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি ৪৬.৮০ শতাংশ।

নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। অসময়ে যেসব পয়েন্টে নদী ভাঙন দেখা দিয়েছে সেখানে জরুরি পদক্ষেপ হিসেবে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা চলছে। এছাড়া নতুন করে বেশ কয়েকটি স্থায়ী প্রকল্প অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। যা অনুমোদন- বাস্তবায়িত হলে নদীভাঙন থেকে মুক্তি মিলবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০২৪
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।