ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

শীতকালীন সবজি চাষে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা ফেনীর কৃষকদের 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০২৪
শীতকালীন সবজি চাষে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা ফেনীর কৃষকদের 

ফেনী: সাম্প্রতিক হয়ে যাওয়া বিপর্যয়কর বন্যায় ফেনীতে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় কৃষকরা। নষ্ট হয়ে যায় হাজার কোটি টাকার কৃষি পণ্য।

সেই ক্ষতি থেকে ঘুরে দাঁড়াতে বন্যার দুই মাস পর ফের মাঠে নেমেছে কৃষকরা। শীতকালীন সবজি চাষের মাধ্যমে ঘুরে দাঁড়াতে চেষ্টা করছেন কৃষকদের একটি অংশ। সার, বীজ ও শ্রমিকের দাম বেশি হওয়ায় লাভের বিষয়ে শঙ্কা থাকলেও মাঠে খেটে যাচ্ছেন কৃষক। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে প্রণোদনাসহ সার্বিক সহায়তা দিয়ে কৃষকের পাশে থাকবেন তারা।  

শহর থেকে গ্রাম, গেল বন্যায় চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ফেনীর জনজীবন। ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় কৃষিখাত। সেই অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছেন কৃষকরা।  

ফেনীর উত্তরের উপজেলা ফুলগাজীর পূর্ব দরবারপুর এলাকায় ৪০ শতক জমিতে শসার আবাদ করেছিলেন কৃষক নুরুল আফসার। গাছে ফলও এসেছিল। বাজারে বিক্রির জন্য অপেক্ষা করছিলেন তিনি। কিন্তু বন্যায় তার সব শেষ হয়ে যায়। ১০ দিনের বেশি ডুবে থাকে তার ফসলের ক্ষেত। ক্ষতি হয় আড়াই লাখ টাকার বেশি।  

বন্যার দুই মাস অতিবাহিত হওয়ার পর কৃষক নুরুল আফসাার ফের মাঠে নেমেছেন। চেষ্টা করছেন ঘুরে দাঁড়াতে। ৬০ শতক জমিতে চাষ করেছেন লাল শাক, মুলা, মিষ্টি কুমড়া, লাউ ও শসা। তবে সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় শঙ্কায় আছেন তিনি। চেয়েছেন কৃষি বিভাগের সহায়তা।  

আবু তাহের নামে আরেক কৃষক জানান, বন্যার পর সবজি চাষে নতুন সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে লেদা পোকা। শীতের সবজি ফুলকপি, পাতাকপি ও মুলাসহ বিভিন্ন সবজির চারা খেয়ে ফেলছে এ পোকা।  

জেলার পরশুরাম, সোনাগাজী, ছাগলনাইয়া, ফেনী সদর ও দাগনভূঁঞাতেও সবজির আবাদে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে অনেক কৃষকই আছেন আর্থিক সংকটে। কৃষি বিভাগের সহায়তা চাচ্ছেন তারা।  

কৃষি বিভাগ জানিয়েছে ফেনীতে চলতি শীত মৌসুমে ৫ হাজার ৩৩৫ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে।

সর্বমোট ৪৯.৩০ মেট্রিক টন বীজের মূল্য বাবদ ৭৩ লাখ ৭৬ হাজার ৪০০ টাকা, ২১৯.৫০ মেট্রিক টন সারের মূল্য বাবদ ৪০ লাখ ৭৬ হাজার টাকা এবং পরিবহন ব্যয় বাবদ ৪ লাখ ৩ হাজার ২০০ টাকা, আনুষঙ্গিক ব্যয় বাবদ ২ লাখ ৬৮ হাজার ৮০০ টাকা। সর্বমোট ১২১ লাখ ২৪ হাজার ৪০০ টাকা প্রণোদনা মঞ্জুরির আদেশ পাওয়া গেছে।  

মাঠ পর্যায়ে পরামর্শসহ সামগ্রিক বিষয়ে কৃষি কর্মকর্তারা কৃষকদের সহায়তা করছেন বলে জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. একরাম উদ্দিন বলেন, কৃষি বিভাগ কৃষকদের পরামর্শসহ সব ধরনের সহায়তায় মাঠে কাজ করছে।  

গত জুলাই-আগস্টে মাসের ব্যবধানে তিন দফার বন্যায় পানির তীব্র স্রোতের সঙ্গে ভেসে গেছে হাজারো হেক্টর ফসলি জমি, মাছের ঘের ও খামার। এতে ছয় উপজেলা নিয়ে নানা খাতে সমৃদ্ধ ৯২৮ দশমিক ৩৪ বর্গকিলোমিটারের এ জেলায় আগামীর খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। সেই সংকট থেকে উত্তরণের চেষ্টা কৃষকদের।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫০০ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০২৪
এসএইচডি/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।