ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কোটা ব্যবস্থা বৈষম্যমুক্ত সমাজ গঠন ধ্বংস করছে: জি এম কাদের

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪৯ ঘণ্টা, জুলাই ৩, ২০২৪
কোটা ব্যবস্থা বৈষম্যমুক্ত সমাজ গঠন ধ্বংস করছে: জি এম কাদের

ঢাকা: মুক্তিযুদ্ধের চেতনার নামে চাকরিতে কোটা ব্যবস্থার মাধ্যমে বৈষম্যমুক্ত সমাজ গঠন ধ্বংস করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের।

বুধবার (৩ জুলাই) দ্বাদশ জাতীয় সংসদের ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেট অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে জি এম কাদের এ কথা বলেন।

এ সময় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।

জি এম কাদের বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী প্রজন্মের জন্য চাকরি লাভে বিশেষ বড় অঙ্কের কোটায় চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করা স্বাধীনতার চেতনার নামে স্বাধীনতার মূল উদ্দেশ্য বৈষম্য মুক্ত ন্যায় বিচার ভিত্তিক সমাজ গঠন ধ্বংস করে। যে কোনো পরিস্থিতিতে দেশের মানুষের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি কখনই মঙ্গল বলে আনে না।

জাতীয় পার্টির এ নেতা বলেন, এ কথা যেন আমরা ভুলে না যাই যে, ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় এদেশের মানুষ বৈষম্যের বিরুদ্ধে সংগ্রাম আন্দোলনে জয়লাভের জন্য যেকোনো ত্যাগ স্বীকার করতে ও যে কোনো পর্যায় যেতে প্রস্তুত থাকে। স্বাধীনতা যুদ্ধে আমাদের মূল অর্জন সংবিধান, সেখানে সুযোগ-সুবিধাদির ক্ষেত্রে সাম্যের কথা বলা হয়েছে।

জি এম কাদের বলেন, আমাদের শহিদ মিনার বৈষম্য থেকে মুক্তিসংগ্রামের আত্মত্যাগের প্রতীক। আমাদের জাতীয় স্মৃতিসৌধ বৈষম্যহীন ন্যায় বিচারভিত্তিক নিজ দেশ গঠনে অঙ্গীকারের প্রতীক।

কোটা পদ্ধতি নিয়ে সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা বলেন, ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে প্রথম শ্রেণি, দ্বিতীয় শ্রেণি, তৃতীয় শ্রেণি এবং চতুর্থ শ্রেণিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে ৫৬ শতাংশ কোটি ছিল। (৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা, ১০ শতাংশ নারী, ১০ শতাংশ অনগ্রসর জেলার বাসিন্দাদের জন্য, পাঁচ শতাংশ ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষদেরও জন্য, এক শতাংশ প্রতিবন্ধীদের জন্য সংরক্ষিত)। বাকি ৪৪ শতাংশ মেধায় নিয়োগ দেওয়া হতো।

তিনি বলেন, ২০১৮ সালে মেধাবী ছাত্রদের দাবি ছিল সরকারি চাকরিতে ১ম, ২য়, ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণি থেকে শুধু মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের। আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে সে সময় ১ম ও ২য় শ্রেণির নিয়োগের ক্ষেত্রে সব কোটা পদ্ধতির এ নীতি বাতিল করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় পরিপত্র জারি করে। কিন্তু তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে পূর্বের ন্যায় কোটা পদ্ধতি বহাল থাকে।

জি এম কাদের বলেন, ২০২১ সালে সেই পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের অংশটিকে চ্যালেঞ্জ করে কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান উচ্চ আদালতে রিট করে। ৫ জুন ২০২৪ রিটের রায় প্রকাশ করে আদালত। সেখানে জনপ্রশাসন কর্তৃক পরিপত্রের মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সংরক্ষিত অংশটির বাতিলকে অবৈধ ঘোষণা করেন। ফলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে চাকরিপ্রত্যাশী ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা সরকারের জারি করা সেই পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে পুনরায় মাঠে নামছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৯ ঘণ্টা, জুলাই ০৩, ২০২৪
এসকে/এমইউএম/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।