ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

অর্থনৈতিক মুক্তির হাতিয়ার হিসেবে পাটের ভূমিকা স্বীকৃত ইতিহাস: পাটমন্ত্রী

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৮ ঘণ্টা, জুন ১, ২০২৪
অর্থনৈতিক মুক্তির হাতিয়ার হিসেবে পাটের ভূমিকা স্বীকৃত ইতিহাস: পাটমন্ত্রী

নরসিংদী: বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, পরিবেশবান্ধব সোনালী আঁশ পাট বাঙালির সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িয়ে আছে। শুধু তাই নয়, বাঙালির অর্থনৈতিক মুক্তির হাতিয়ার হিসেবে পাটের ভূমিকা একটি স্বীকৃত ইতিহাস।

 

মন্ত্রী আরও বলেন, স্বাধীনতার পর সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাটশিল্পের উন্নয়নে উদ্যোগ নিয়েছিলেন। এরই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় পাটখাতে নানামুখী কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা পাট ও পাটজাত পণ্যের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারেও গুরুত্ব সহকারে বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। পাটপণ্যে বৈচিত্র্য আনতে এবং পাটশিল্পকে লাভজনক করার উদ্যোগকে উৎসাহিত করা হয়েছে।  

শনিবার (১ জুন) দুপুরে নরসিংদী শিশু একাডেমিতে পাট অধিদপ্তর আয়োজিত পাট চাষি, মিল মালিক, ব্যবসায়ী এবং পাটখাত সংশ্লিষ্ট অংশীজনের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব  কথা বলেন।

পাট বীজ উৎপাদনের বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, সোনালী আঁশের দেশ বাংলাদেশ পাট বীজের জন্য প্রতিবেশী দেশের উপর নির্ভরশীল এটা আমাদের জন্য মোটেও সুখকর নয়। পাট বীজের চাহিদার প্রায় তিন-চতুর্থাংশ বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। আমরা মাত্র এক-চতুর্থাংশ পাট বীজ উৎপাদন করি। বৈদেশিক নির্ভরতা কাটিয়ে পাট বীজ উৎপাদনে স্বনির্ভর হওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে আমি সংশ্লিষ্টদের আহ্বান জানাই। আমরা পাট ও পাট বীজ উৎপাদনে স্বনির্ভর এবং বিশ্বে প্রথম হতে চাই।

মন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কথা চিন্তা করে প্লাস্টিক ও পলিথিন বর্জন করতে হবে। আমরা সুন্দর একটি পৃথিবীর স্বপ্ন দেখি। একটি সুন্দর বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি। এজন্য পরিবেশকে দূষণ ও ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে হবে। কাজেই ব্যবসায়ী ভাইদের বলব আপনারা শতভাগ পাটের তৈরি বস্তা ব্যবহার করুন। সামগ্রিক বিবেচনায় আপনারা লাভবান হবেন। পাটকল মালিক ভাইদের বলব ৫০ কেজির চালের বস্তা ছাড়াও আপনারা ২৫-৩০ কেজির বস্তা করেন। এখনকার দিনে বেশিরভাগ পরিবারে মাসে ২৫-৩০ কেজি চাল লাগে। কাজেই ছোট বস্তা পেলে আপনাদের বিক্রি বেড়ে যাবে।

মন্ত্রী আরও বলেন, আমরা সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করলে সফল হতে পারবো এবং পাটের হারানো গৌরব ফিরিয়ে আনা যাবে। সেই সঙ্গে পাটপণ্য বৈদেশিক মূদ্রা অর্জনের অন্যতম উৎসে পরিণত হয়ে জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে এবং প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।

নরসিংদী জেলা প্রশাসনের সহায়তায় পাট অধিদপ্তর আয়োজিত পাটখাত সংশ্লিষ্ট অংশীজনের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,  নরসিংদী সদর আসনের সংসদ সদস্য লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম হীরু, পলাশ আসনের সংসদ সদস্য ও বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. আনোয়ারুল আশরাফ খান দিলীপ, সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য ফরিদা ইয়াসমিন, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সম্মানিত সচিব মো. আব্দুর রউফ, পাট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জিনাত আরা, নরসিংদী জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জিএম তালেব হোসেনসহ পাট চাষিরা উপস্থিত ছিলেন।

পরে মন্ত্রী নরসিংদীর বঙ্গবন্ধু পৌরপার্কে তিনদিন ব্যাপী বহুমুখী পাটপণ্য মেলার উদ্বোধন করেন। পরে তিনি মেলার স্টল পরিদর্শন করেন। মেলায় প্রায় অর্ধশতাধিক পাটজাত পণ্যের স্টল পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৫৮ ঘণ্টা, জুন ১, ২০২৪
জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।