ঢাকা, বুধবার, ১৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

দুর্যোগে মৃত্যুতে আর্থিক সহায়তা যথেষ্ট নয়: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪০ ঘণ্টা, মে ১১, ২০২৪
দুর্যোগে মৃত্যুতে আর্থিক সহায়তা যথেষ্ট নয়: ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী

ঢাকা: সাম্প্রতিক ‘তাপপ্রবাহ’ দুর্যোগ হিসেবে পরিগণিত করা হয়েছে। যেকোনো দুর্যোগে হতাহতের জন্য ১০ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকা অর্থ সহায়তা প্রদান যথেষ্ট নয়।

এটি বাড়ানোর পরিকল্পনা আছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী মো. মহিববুর রহমান।  

শনিবার (১১ মে) রাজধানীর এফডিসিতে ‘তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণ নিয়ে’ ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি আয়োজিত ছায়া সংসদ বিতর্ক প্রতিযোগিতায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।  

মহিববুর রহমান বলেন, এবারে হিট স্ট্রোকে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের তালিকা করা হচ্ছে। অতিমাত্রায় গরমের কারণে যারা কর্মহীন হয়েছে তাদের সামাজিক নিরাপত্তা বলয়ের আওতায় আনা হচ্ছে। দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে হিট অফিসার নিয়োগের কোন পরিকল্পনা নেই। তীব্র তাপদাহে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে পানি ছিটানোর উদ্যোগ অসম্পূর্ণ। জল কামানে পানি ছিটানো যথেষ্ট নয়, এটি আরও সাইন্টিফিক ওয়েতে করতে হবে। বিল্ডিং কোড না মেনে অপ্রয়োজনীয় কাঁচের ব্যবহার ভবনে অতি তাপমাত্রা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। অনেক শিক্ষিত ব্যক্তিরাও আইন না মেনে মনমতো ঘরবাড়ি তৈরি করে নিজের ঘরকে নিজেই মৃত্যু ফাঁদে পরিণত করছে। তাই আইন মানার জন্য প্রয়োজনে আরও কঠোর আইন করতে হবে।

সভাপতির বক্তব্যে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ বলেন, চলতি বছর হিট স্ট্রোকে মারা যাওয়া ব্যক্তিদের সঠিক কোন হিসাব সরকারের কাছে নেই। তাদের আর্থিক সহায়তা প্রদানের ব্যাপারেও তেমন কোন তথ্য নেই। বর্তমান বাস্তবতায় দুর্যোগজনিত কারণে মারা যাওয়া অসহায় ব্যক্তিদের পরিবারকে অন্তত তিন লাখ টাকা প্রদান করা উচিৎ। প্রতিবছর অতি তাপমাত্রায় ২৭ বিলিয়ন ডলারের উৎপাদনশীলতা নষ্ট হয়। অতিমাত্রার গরমের কারণে ২০৩০ সাল নাগাদ শুধু পোশাক খাতে ৬ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এতে পোশাক খাতসহ বিভিন্ন শিল্প কারখানার কর্মীরা চাকরি হারানোর ঝুঁকিতে রয়েছে। আমরা আশা করবো চলতি বছর আর কোন উচ্চ মাত্রার তাপদাহ তৈরি হলে সরকার তার ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করবে। এবং অতিমাত্রার তাপদাহের কারণে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াবে।

কিরণ আরও বলেন, বড় বড় শহরগুলোতে কোথাও খেলার মাঠ নেই, পার্ক নেই, প্রাকৃতিক পানির প্রবাহ নেই, পর্যাপ্ত গাছপালা নেই, বিশুদ্ধ বাতাস নেই। আছে শুধু যানজট, ঘনবসতি, অপরিকল্পিত ঘরবাড়ি, শব্দ দূষণ, বায়ু দূষণ, যত্রতত্র দোকানপাট,পার্কিং সমস্যা, ফুটপাত দখলসহ অনিয়মের আখড়া। যা তাপদাহ বৃদ্ধির অন্যতম কারণ। আবার আমরা যদি শহরের বাইরের দিকে তাকাই সেখানেও সামাজিক বনায়ন নেই জলাশয় নেই, খাল দখল, নদী দখল চলছে। ফলে গ্রামেও এখন প্রকৃতির যে স্নিগ্ধতা, মুগ্ধতা আগের মতো নেই। অন্যদিকে বাংলাদেশ বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক কারণে জলবায়ুর প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। শিল্পোন্নত দেশগুলোর খামখেয়ালিপনা, হিমালয়ের বরফ গলে যাওয়া, দক্ষিণ এশিয়া ও চীনের নদীগুলো বিভিন্ন প্রকল্পের কারণে মেরে ফেলাসহ নানা বৈশ্বিক কারণে বাংলাদেশ অতিমাত্রায় তাপদাহসহ বন্যা, খরায় পর্যবেশিত হচ্ছে।

'অসহনীয় তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য অপরিকল্পিত নগরায়নই দায়ী শীর্ষক ছায়া সংসদে সরকারি তিতুমীর কলেজের বিতার্কিকদের পরাজিত করে ঢাকা কলেজের বিতার্কিকরা বিজয়ী হয়। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন অধ্যাপক আবু মুহাম্মদ রইস, সাংবাদিক ইফতেখার মাহমুদ, সাংবাদিক ফালগুনী রশীদ, সাংবাদিক দিপক কুমার আচার্য, সাংবাদিক আতিকুর রহমান। প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ী দলকে ট্রফি, ক্রেস্ট ও সনদপত্র দেওয়া হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৮ ঘণ্টা, মে ১১, ২০২৪
এমএমআই/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।