ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত: ভোরের স্নিগ্ধ হাওয়ায় জুড়ায় প্রাণ

ইমতিয়াজ আহমেদ, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৪১ ঘণ্টা, মার্চ ২, ২০২৪
কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত: ভোরের স্নিগ্ধ হাওয়ায় জুড়ায় প্রাণ

কুয়াকাটা থেকে: ভোরের সূর্য ততক্ষণে উঁকি দিয়েছে। সূর্যের সোনালি আলোয় ঝলমল করছে সমুদ্রের নোনাজল।

হালকা বাতাস বইছে। সূর্যোদয় দেখতে ভোরেই সমুদ্র সৈকতে এসে হাজির হয়েছেন অসংখ্য পর্যটক। রাতের আয়েশি ঘুমে যারা সূর্যোদয় দেখতে ব্যর্থ হয়েছেন, তারাও স্নিগ্ধ হাওয়ায় প্রাণ জুড়াতে একে একে এসে হাজির হচ্ছেন সৈকতে। সাগর কন্যা কুয়াকাটায় ভোরের নির্মল সৌন্দর্যে মুগ্ধ দূর-দূরান্ত থেকে আসা পর্যটকেরা।

শনিবার (২ মার্চ) ভোরে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে দেখা গেছে পর্যটকদের মুখর বিচরণ।

সমুদ্র সৈকত ঘুরে দেখা গেছে, নানা বয়সী মানুষ দলে দলে আসছেন সৈকতে। পরিবার-পরিজন ছাড়াও দল বেঁধে বন্ধুদের নিয়ে ঘুরতে এসেছেন হাজারো মানুষ। কেউ নেমে গেছেন সমুদ্রে, আবার কেউ পা ভিজিয়ে হাঁটছেন পাড় ধরে। কেউ বা বসে বসে উপলব্ধি করছেন সমুদ্রের গর্জন। পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় ঘিরে বাহারি দোকানে বেড়েছে বিক্রি। সমুদ্র সৈকতে থাকা হালকা খাবারের দোকানগুলোতে দর্শনার্থীদের ভিড় রয়েছে। এছাড়া ভোর থেকেই সূর্যোদয় দেখতে ঝাউবনে ছুটে যায় অসংখ্য দর্শনার্থী। এরপর লেবুবন, লাল কাঁকড়ার চর, ফাতরার বনের উদ্দেশে পর্যটকদের যেতে দেখা গেছে। কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত থেকে জন প্রতি ৩৫০ টাকা করে ফাতরার বনের উদ্দেশে ট্রলার ছেড়ে যায় সকাল ৯টা থেকে। ফাতরার বনে যাওয়া-আসা নিয়ে তিন থেকে চার ঘণ্টা সময় লাগে। এছাড়া মোটরসাইকেল নিয়ে লেবু বন, লাল কাঁকড়ার চর, বৌদ্ধ মন্দির ও কুয়াসহ অন্যান্য স্থানে যাচ্ছেন পর্যটক।

দর্শনার্থীরা জানান, সমুদ্র বার বার টানে। সুযোগ পেলেই ছুটে আসা হয় সাগরকন্যা কুয়াকাটাতে। দুই/একদিন থেকে প্রশান্ত মনে ফিরে যাওয়া হয় বাড়িতে, কর্মস্থলে। সমুদ্রে ভোরের বাতাস আর সাগরের গর্জন অন্যরকম এক প্রশান্তি এনে দেয় মনে। কর্মজীবনের এক ঘেয়েমী দূর করতে সমুদ্র ভ্রমণের কোনো বিকল্প নেই।

মাদারীপুর থেকে আসা নুপুর বলেন, সমুদ্রের টানে চলে এসেছি কুয়াকাটা! তবে প্রচুর ভিড়। সমুদ্র সৈকত, হোটেল-রেস্টুরেন্ট- সব জায়গাতে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়। সব মিলিয়ে ভালো লাগছে।

পুতুল আক্তার বলেন, আমরা দুদিন ধরে এখানে এসেছি। কুয়াকাটার সব দর্শনীয় স্থানগুলোতে ঘুরছি। ট্রলারে করে ফাতরার বন গিয়েছি। সকাল-বিকেল আমরা সবাই আনন্দ করছি। শনিবার সন্ধ্যায় ফিরবো। এখন দর্শনার্থী বেশি থাকায় সি-বিচে কোলাহল বেশি।

মিয়াউল আলম চৌধুরী নামে এক পর্যটক বলেন, সূর্যোদয় দেখে সি-বিচের দীর্ঘপথ হেঁটেছি। ভোরে শারীরিক ব্যায়াম হয়ে গেলো। আমরা পদ্মাপাড়ের শিবচর থেকে এসেছি। কুয়াকাটা আসার পথে সবগুলো নদীতে সেতু থাকায় এখন আর তেমন কোনো ভোগান্তি নেই। সব মিলিয়ে ভোরের সমুদ্র ভালোভাবেই উপভোগ করলাম।

বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার সকাল। কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত লোকে লোকারণ্য। সি-বিচ, হোটেল, রাখাইন মার্কেট, শুঁটকির দোকান, লেবু বন আর সন্ধ্যায় ফিস ফ্রাই বা বারবিকিউ খেতে মাছের দোকানে মানুষের ভিড় লেগেই থাকে।  

কুয়াকাটায় আসা পর্যটকদের মতে, সমুদ্র মানুষকে টানে। ভোরের সমুদ্রের স্নিগ্ধতা মানব মনকে দেয় আলাদা প্রশান্তি! এ প্রশান্তির খোঁজেই প্রতিদিন হাজারো মানুষের বিচরণ ঘটে সমুদ্রতীরে।

বাংলাদেশ সময়: ০৮৪১ ঘণ্টা, মার্চ ০২, ২০২৪
আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।