ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, ড্রেজার ডুবিয়ে দিল গ্রামবাসী

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০২৩
অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, ড্রেজার ডুবিয়ে দিল গ্রামবাসী

নরসিংদী: নরসিংদীর রায়পুরার মেঘনা নদীর তীর ঘেঁষে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করার সময় একটি ড্রেজার আটক করে গ্রামবাসী। পরে ড্রেজারটি তারা পানিতে ডুবিয়ে দেয়।

বুধবার বিকেলে মেঘনা নদীর তীরবর্তী উপজেলার চাঁনপুর ইউনিয়নের চাঁনপুর গ্রামে ড্রেজারটি আটক করা হয়। পরে স্থানীয়রা ড্রেজারটি আটক করে ডুবিয়ে দেয়। পরে ওই দিন রাতে স্থানীয় প্রশাসনকে বিষয়টি অবগত করলে ড্রেজারটি জব্দ দেখানো হয়।

স্থানীয়রা জানান, জেলা প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে প্রতিনিয়ত কতিপয় প্রভাবশালী ড্রেজার মালিকরা রায়পুরা সীমানায় অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে। গত বুধবার বিকেলে ড্রেজার দিয়ে উপজেলা চাঁনপুরের মেঘনা নদীর পাড় ঘেষে  অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছিল। পরে স্থানীয় বাসিন্দারা নৌকা নিয়ে একটি ড্রেজার আটক করে। পরে ড্রেজারটিতে স্থানীয়রা অগ্নিসংযোগ করে একপর্যায়ে  তারা এটি ডুবিয়ে দেয়। ওই দিন রাতে প্রশাসনকে বিষয়টি অবগত করলে স্থানীয় ইউপি সদস্যের মাধ্যমে ড্রেজারটি জব্দ দেখানো হয়।  

স্থানীয় বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম জানান, প্রায়ই অবৈধভাবে চাঁনপুর সীমানা এলাকা থেকে বালু উত্তোলন করে বালু খেকুরা। এতে দফায় দফায় এলাকাবাসীর বাধা সত্ত্বেও ড্রেজার মালিকরা ক্ষমতা প্রদর্শন করে হামলা মামলার ভয় দেখিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে থাকে। এতে করে এ অঞ্চলের মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাপন ব্যাহত হচ্ছে।

স্থানীয় বাসিন্দা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, নদীর তলদেশ থেকে বালু উত্তোলন করতে না পেরে রাতের আঁধারে মেঘনার পাড়ে ফসলি জমি থেকে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে আমার নিজের জমি বিলীন হয়ে গেছে। বসতভিটাও বিলীন হওয়ার পথে। প্রতিদিনই আমরা এলাকাবাসী ছোট-ছোট নৌকা নিয়ে ড্রেজারগুলোকে প্রায়ই ধাওয়া করি। তারপরও থেমে নেই তাদের অবৈধ বালু উত্তোলন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য বশির মিয়া বলেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর সীমান্তে বালুমহাল ইজারা নিয়ে রায়পুরা উপজেলা সীমান্তে ঢুকে ফসলি জমি থেকে বালু উত্তোলন করছে একটি প্রভাবশালী চক্র। এতে চাঁনপুরের পাঁচটি গ্রামে নদী ভাঙনে ফসলি জমি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ভিটামাটি হারা হওয়ার শঙ্কায় রয়েছেন হাজারো পরিবার। তাই গতকাল বালু উত্তোলনের সময় ক্ষোভে গ্রামবাসী ড্রেজারটি ডুবিয়ে দেয়। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাকে ড্রেজারটি দেখে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

চাঁনপুর ইউপি চেয়ারম্যান মোমেন সরকার বলেন, স্থানীয় একটি প্রভাবশালী চক্র অবৈধ বালু উত্তোলনের সঙ্গে জড়িত। গত আড়াই মাস ধরে এভাবে বালু উত্তোলন করে আসছিল তারা। এতে চাঁনপুর ইউনিয়নের ফসলি জমি বিলীন হওয়ার পথে। বুধবার বিকেলে চাঁনপুর গ্রামবাসী একটি ড্রেজার আটক করে নদীতে ডুবিয়ে দিয়েছে বলে সংবাদ পাই এবং পরে ড্রেজার আটকের বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করি। এর বেশকিছু আগে সুলতান নামে ড্রেজার মালিককে ১০ লাখ টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করে প্রশাসন তবুও তারা বালু উত্তোলন থামায়নি।

উপজেল সহকারী কমিশন ভূমি মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, গতকাল স্থানীয়রা একটি ড্রেজার আটক করার পর ডুবিয়ে দেয়। এমন সংবাদ পাওয়ার পর স্থানীয় ইউপি সদস্যের মাধ্যমে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ড্রেজারটি আটক রাখার জন্য নির্দেশ দেই। বিষয়টি নিয়ে অতিদ্রুতই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০২৩
জেএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।