ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

পাসপোর্ট অফিসে জনগণের ‘উহ’ শব্দটিও শোনতে চাই না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী 

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট    | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৩
পাসপোর্ট অফিসে জনগণের ‘উহ’ শব্দটিও শোনতে চাই না: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী 

ঢাকা: পাসপোর্ট অফিসে সেবা নিতে আসা জনগণের সঠিক সেবা নিশ্চিত করতে হবে, তাদের ‘উহ’ শব্দটিও শোনতে চান না বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। তিনি বলেন, আপনারা যত সেবা দিবেন ততই আপনাদের সুনাম বাড়বে।

 

রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আফতাবনগরে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস ঢাকা পূর্ব (আফতাবনগর) ও ঢাকা পশ্চিম (মোহাম্মদপুর) এবং পাসপোর্ট বাতায়নের (কল সেন্টার) শুভ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।  

আসাদুজ্জামান খান বলেন, বিগত ২০০৮ সালের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা করেন যে বাংলাদেশকে একটি ডিজিটাল দেশ হিসেবে গড়ে তুলবেন। এ ঘোষণার পর থেকে আমরা এমআরপি পাসপোর্ট  হাতে নিলাম। এমআরপি প্রকল্প হাতে নিয়ে আমরা অনেক প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হয়েছিল। সকল প্রতিবন্ধকতা সামলে তখন এমআরপি চালু হয়েছিল। এরপর আমরা ই-পাসপোর্টের জগতে পা রাখি। আমাদের পাসপোর্টের মানও ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে। আগে যেমন আমাদের পাসপোর্টের মান নিম্নের দিকে ছিল, এখন ধীরে ধীরে উন্নতি করে এটা ওপরের দিকে যাচ্ছে। আমাদের পাসপোর্ট ইতিমধ্যে বিশ্বমানের স্বীকৃতি পেয়েছে এবং সামনে আরো এগিয়ে যাবে।

তিনি বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে আমরা এখন স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে যাত্রা শুরু করেছি। ই-পাসপোর্ট এবং ইমিগ্রেশনের  ই-গেইট  স্মার্ট বাংলাদেশের একটি ইঙ্গিত বহন করছে। এছাড়া খুবই দ্রুত ই-ভিসাও চালু হতে যাচ্ছে। আমরা প্যাসেঞ্জার অ্যাডভান্স ইনফরমেশনও চালু করতে যাচ্ছি। যদিও এটি আমাদের মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন নয়, সিভিল এভিয়েশনের পক্ষ থেকে প্যাসেঞ্জার অ্যাডভান্স ইনফরমেশন চালুর ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এটা চালু হলে কোন যাত্রী টিকেট কাটলে আমরা জানতে পারবো কে বাংলাদেশে আসছেন বা কে বাংলাদেশ থেকে বিদেশে যাচ্ছে। আমরা দেশের ৭১ টি পাসপোর্ট অফিস এবং বিদেশে মোট ৩২ টি জায়গা থেকে ই-পাসপোর্ট সেবা চালু করতে পেরেছি। বিদেশে যেখানে আমাদের পাসপোর্ট অফিস আছে তার প্রত্যেকটিতেই আমরা দ্রুত ই-পাসপোর্ট সেবা চালু করব।  

অনুষ্ঠানে উদ্বোধন হওয়া পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এই নতুন দুটি পাসপোর্ট অফিস থেকে জনগণ সুবিধা পাবে এবং সেবা গ্রহণ করবে। এখানে যারা কাজ করবেন তাদের উদ্দেশ্যে আমি বলব আপনারা জনগণের সেবা করবেন এবং জনগণের সেবার জন্যই কিন্তু আপনারা। কাজেই পাসপোর্ট সেবা নিতে আসা জনগণের ‘উহ’ শব্দটিও আমরা শুনতে চাই না। আপনারা যতই তাদের সেবা দিবেন ততই আপনারা সুনাম অর্জন করতে পারবেন।

ইমিগ্রেশনে ই-গেইট চালু হয়েছে সেখানে কোনো যাত্রী যেতে চাইলেও ইমিগ্রেশন পুলিশ সদস্যরা যাত্রীদের নিরুৎসাহিত করছে, সেখানে অনেকটা সমন্বয়হীনতা রয়েছে, এ বিষয়ে পদক্ষেপ কী? সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এটা এখনও ট্রায়াল বেসিসে চলছে। যে কোনো কিছু চালুর আগে ছোটখাটো সমন্বয়হীনতা হয়ে থাকে৷ আপনি নতুন বাড়িতে ওঠলেও দেখবেন যে লাইট ঠিকমত জ্বলে না, সুয়ারেজে পানিটা ঠিকমত পাস হচ্ছে না। আমাদের নজরে যেগুলো আসছে সেগুলো আমরা ইমিডিয়েটলি ব্যবস্থা নিচ্ছি।  ই-গেইট যাতে সঠিকভাবে পরিচালিত হয়ে সে বিষয়টি অবশ্যই দেখবো।  

ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. নূরুল আনোয়ারের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি বেনজির আহমেদ, ঢাকা- ১৩ সংসদীয় আসনের সংসদ সদস্য মো. সাদেক খান ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ সচিব মো. আব্দুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী।  

এদিকে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ডিজিটাল ও স্মার্ট বাংলাদেশের অংশ হিসেবে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর দেশের নাগরিকদের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর, নিরাপদ ও উন্নতমানের পাসপোর্ট ও ইমিগ্রেশন সেবা এবং বাংলাদেশে আগত সকল বিদেশি নাগরিকদের  জন্য উন্নত মানের ভিসা সেবা প্রদান করছে। তারই অংশ হিসেবে আজ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস ঢাকা পূর্ব (আফতাবনগর), ঢাকা পশ্চিম (মোহাম্মদপুর) ও কল সেন্টার (পাসপোর্ট বাতায়ন-১৬৪৪৫) এর আনুষ্ঠানিক শুভ উদ্বোধন করেন।  

ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর সূত্রে আরও জানা যায়, ইতোমধ্যে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ৬৪টি জেলায় মোট ৬৯টি আঞ্চলিক অফিস থেকে দেশের নাগরিকদের পাসপোর্ট সেবা দেওয়া হচ্ছে। একই সাথে ৭টি বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিস থেকে বাংলাদেশে আগত বিদেশি নাগরিকদের ভিসা সেবা দেওয়া  হচ্ছে। এছাড়া  ৩টি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর,  বেনাপোল ও বাংলা বান্ধা স্থল বন্দরে  ৪৪টি ই-গেইট স্থাপনের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে ইমিগ্রেশন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। রোববার (১০ সেপ্টেম্বর)  ঢাকায় নতুন ২টি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস আনু্ষ্ঠানিক উদ্বোধন করার মধ্য দিয়ে দেশের অভ্যন্তরে আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস সংখ্যা হলো ৭১টি।  

আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের ঢাকা পূর্ব (আফতাবনগর) এর আওতাধীন থানাসমূহ হল মুগদা, সবুজবাগ, শাহাজাহানপুর, খিলগাঁও, রামপুরা, মতিঝিল, পল্টন, হাতিরঝিল, বাড্ডা। আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস ঢাকা পশ্চিম (মোহাম্মদপুর) এর আওতাধীন থানাসমূহ হল সাভার, ধামরাই, মোহাম্মদপুর, আদাবর, দারুস-সালাম, শাহ আলী, হাজারীবাগ, নিউমার্কেট। একইসাথে পাসপোর্ট বাতায়ন তথা কল সেন্টারের মাধ্যমে ২৪/৭ যে কোন নাগরিক বাংলাদেশের অভ্যন্তর থেকে ১৬৪৪৫ এবং প্রবাস থেকে ০৯৬৬৬৭১৬৪৪৫ নম্বরে কল করে পাসপোর্ট ও ভিসা সেবা সংক্রান্ত সকল ধরনের তথ্য সেবা পাবেন।  

বাংলাদেশ সময়: ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১০, ২০২৩
এসজেএ/এমএম


 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।