ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

পর্যাপ্ত খাদ্যপণ্য থাকলে দাম বাড়ছে কেন: মোশাররফ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩৯ ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০২৩
পর্যাপ্ত খাদ্যপণ্য থাকলে দাম বাড়ছে কেন: মোশাররফ বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন

ঢাকা: প্রতিদিনই বাজারে খাদ্যপণ্যের দাম হু হু করে বাড়ছে, এ বিষয়ে সরকারের স্পষ্ট ব্যাখ্যা চেয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। তিনি সরকারের কাছে প্রশ্ন রেখে বলেন, পর্যাপ্ত পরিমাণে খাদ্যপণ্য মজুদ থাকলে বাজারে দাম বাড়ছে কেন?

সোমবার (১৩ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে দুটি গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিবের এ সম্পর্কিত এক ব্রিফিংয়ের পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এ প্রশ্ন রাখেন।

রোববার (১২ মার্চ) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে রমজান ও ঈদ-উল-ফিতর সামনে রেখে প্রস্তুতিমূলক এক বৈঠক শেষে রমজানের আগে দেশে পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ রয়েছে, এই মর্মে আশ্বস্ত করে জনসাধারণকে আতঙ্কিত হয়ে কেনাকাটা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া।

এ প্রসঙ্গটি উত্থাপন করে ড. মোশাররফ বলেন, পত্রিকায় এসেছে- জিনিসপত্রের দাম হু হু করে বাড়ছে। রমজান মাসে মানুষ কীভাবে চলবে তা ভেবে দিশেহারা। এর মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে-দেশে নাকি নিত্যপণ্যের মজুদ প্রচুর আছে। জনগণকে বলেছে- আতঙ্কিত হয়ে বেশি কেনাকাটা করবেন না।

তিনি প্রশ্ন করেন, যদি এত মজুদ থাকে তাহলে কেনাকাটা করলে অসুবিধা কোথায়। আসলে কেনাকাটাইতো করতে পারছে না। বাজারের অবস্থা কী! চিনির দাম ১২০ টাকা, গরুর মাংস ৮শ টাকা। গরু ও মুরগির মাংস ভাগ করে কেনাকাটা করার রেওয়াজ এ দেশে ছিল না। ইলিশ মাছ কেটে দুইশ, আড়াইশ গ্রাম করে কেনার রেওয়াজ ছিল না। আজকে কিন্তু বাজারে তা দেখা যাচ্ছে। তাতে যদি সরকার বলে সবকিছু মজুদ আছে। কি রকম চাপাবাজি করছে সরকার। বাজারে গিয়ে দেখেন মানুষ কি পরিমাণ সরকারকে গালাগালি করে। আজকে গরিব মানুষ কিন্তু অর্ধাহারে আছে। এরপরও এ সরকার চাপাবাজি করছে। আমরা জানতে চাই- এ খাদ্যপণ্য যদি এতই মজুদ থাকে তাহলে মূল্য বাড়ছে কেন।

তিনি উল্লেখ করেন, এ দাম বাড়ার সঙ্গে যোগ হয়েছে মূল্যস্ফীতি। দেখেন মূল্যস্ফীতির অবস্থা। গত জানুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি ছিল ৬ দশমিক ১৭। ফেব্রুয়ারিতে তা বেড়েছে ৮ দশমিক ৭১। এর পর আরও বাড়বে। এ মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না সরকার।

কেন এটা হচ্ছে- এমন প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে তিনি বলেন, কারণ, সরকারের যারা ব্যবসায়ী, সিন্ডেকেট-মন্ত্রী-নেতা-ব্যবসায়ীরা জনগণের টাকা লুট করার জন্যই এই দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি। সরকার সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মেগা প্রজেক্ট করে লুটপাট করছে, ব্যাংক লুট করছে।  যাদের ঋণ দিয়েছে তাদের কোনো পরিচয় নেই। তাদের লোক বলে ঋণ দিয়েছে। এ লুটপাটের কারণে অর্থনীতি এখন ধ্বংস।

তিনি বলেন, বিদ্যুতের দামও প্রতি মাসে বাড়ানো হচ্ছে। কিসের জন্য? ইনডেমনিটি দিয়ে সরকার বিদ্যুৎ সেক্টরের লুটেরাদের রক্ষা করেছে। সরকারের লোকদের টাকা পাচার ও দুর্নীতিকে ব্যাকআপ দেওয়ার জন্য বিদ্যুৎ-গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে।

তিনি অভিযোগ করেন, সরকার চাপাবাজি করে গায়ের জোরে ক্ষমতায় টিকে আছে। কিন্তু এভাবে কোনো সরকার বেশি দিন টিকে থাকতে পারে না। জনগণ বুঝতে পেরেছে, এ সরকারকে সরানো ছাড়া দেশের ক্রান্তিকাল অতিক্রম করা সম্ভব নয়।

জিয়া পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত ‘মৃত্যুকূপে ধাবমান বাংলাদেশ’ নামে দুটি গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জিয়া পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. আবদুল কুদ্দুস।

এতে বক্তব্য রাখেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, জিয়া পরিষদের মহাসচিব ড. এমতাজ হোসেন, সহ-সভাপতি মাহফুজুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদা দলের আহ্বায়ক অধ্যাপক লুৎফর রহমান, জিয়া পরিষদের আব্দুল্লাহিল মাসুদ, অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম ও ড. আবু জাফর।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৯ঘণ্টা, মার্চ ১৩, ২০২৩
এমএইচ/জেএইচ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।