ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

জাতীয়

ফ্ল্যাটে ঝুলছিল নারী ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়ের মরদেহ, স্বামী আটক

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৭, ২০২৩
ফ্ল্যাটে ঝুলছিল নারী ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়ের মরদেহ, স্বামী আটক নিহত ফারজানা মিলি ও আটক তার স্বামী নুর আলম

সিলেট: ফ্ল্যাটের এক কক্ষে মিলল সাবেক ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় ফারাজানা হক মিলির (২৫) মরদেহ। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী নুর আলমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ।

শনিবার (৭ জানুয়ারি) বেলা ২টায় সিলেট নগরের তেলিহাওর সিলভ্যালী টাওয়ারের তৃতীয় তলার এ-২ ফ্ল্যাটের একটি কক্ষ থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে কোতোয়ালি পুলিশ। পুলিশের ধারণা ভোররাতের  দিকে মিলির মৃত্যু হয়েছে।  

নিহত ফারজানা হক মিলি ওই বাসার বাসিন্দা নুর আলমের স্ত্রী ও সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা।  তিনি জেলা পর্যায়ের সাবেক নারী ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড়।   

শনিবার (০৭ জানুয়ারি)  সকালে  চাবি মেরামতকারী এনে দরজা খোলে বিছানার উপর সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়না বাঁধা অবস্থায় মিলির ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পান।  

মহানগর পুলিশের উপ কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, মরদেহে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। শনিবার ভোররাতের দিকে মিলির মৃত্যু হয়েছে এমনটি ধারণা করা হচ্ছে।  

মিলি আত্মহত্যা করেছেন কি না প্রশ্নে তিনি বলেন, সিলিংফ্যানের সঙ্গে ঝোলানো মরদেহের হাঁটু বিছানায় লাগানো ছিল। তাতে যথেষ্ঠ সন্দেহের উদ্রেক রয়েছে।  

তিনি আরও বলেন, এসএমপির কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের সহকারী কমিশনার শামসুদ্দিন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এসময় কোতোয়ালি পুলিশের উপ পরিদর্শক (এসআই) শাওন মাহমুদ সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুতের পর মরদেহ ওসমানি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।  

কোতোয়ালি পুলিশের সহকারী শামসুদ্দিন কমিশনার বলেন, মিলি অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন কিনা, তাও জানার চেষ্টা চলছে।  

ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় মিলি

পরিবারের লোকজনের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, পারিবারিক কলহের জেরে মিলির সঙ্গে ঝগড়া করেন স্বামী। ঝগড়ার পর গত বৃহস্পতিবার রাতে বাসার একটি কক্ষে প্রবেশ করে ভেতর থেকে দরজা বন্ধ করে দেন মিলি। এ দুইদিন তিনি না খেয়ে থাকলেও স্বামীসহ বাসার লোকজন তার কোনো খোঁজ খবর নেয়নি।  

নিহতের ভাই সাংবাদিক এনামুলনহক রেনু ও আমিনুল হক সিপনের অভিযোগ, মিলিকে নির্যাতন করে খুন করা হয়েছে।  

তারা বলেন, মিলির স্বামী নুর আলম তার স্ত্রীর ক্রেডিট কার্ড দিয়ে ৬ লাখ টাকা তুলে অনলাইনে জুয়া খেলেছেন। সেই সঙ্গে মিলির ব্যবহৃত স্বর্ণ দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করে জুয়া খেলেছেন। এসব বিষয় নিয়ে তাদের বোনের সঙ্গে কথা কাটাকাটির জের থেকে মারধর করা হয়।  এরই জের ধরে হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে দাবি করেন তারা।  

অভিযোগের বিষয়ে নিহতের স্বামী নুর আলম বলেন, আমাদের প্রায়ই ঝগড়া হতো। সে খুব রাগি ছিল। কখনো রাগ করে ২/৩ দিন ঘুমের ট্যাবলেট থেকে ঘুমিয়ে থাকতো। বৃহস্পতিবার রাতেও ঠিক একইভাবে রাগ করে দরজা বন্ধ করে থাকে মিলি।  

জুয়া নয় পেশা হিসেবে অনলাইনে ডলার কেনা-বেচা করতেন জানিয়ে তিনি বলেন, স্ত্রীর কাছ থেকে কোনো টাকা নেইনি। বাড়ির জমি বিক্রি করে বিনিয়োগ করেছি। মিলির ক্রেডিট কার্ড থেকে টাকা উঠাইনি।  

প্রায় ২ বছর আগে জগন্নাথপুর পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের মরহুম সিরাজুল হকের মেয়ে ফারজানা মিলির সঙ্গে সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার কুলিয়ার কাপন গ্রামের আসকর আলীর ছেলে নুর আলমের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে সিলভ্যালী টাওয়ারের ডা. মোছা মরিয়ম সিদ্দিকীর মালিকানা ফ্লাটে ভাড়া থাকতেন এ দম্পতি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৫ ঘণ্ট, জানুয়ারি ০৭, ২০২৩
এনইউ/এসএএইচ 
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।