ঢাকা, মঙ্গলবার, ৭ মাঘ ১৪৩১, ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ২০ রজব ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

‘গেরিলা’ আসছে বিজয় দিবসে

তোফাজ্জল লিটন | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০১০

একজন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নির্মিত মুক্তিযুদ্ধের চলচ্চিত্র ‘গেরিলা’। সৈয়দ শামসুল হকের উপন্যাস ‘নিষিদ্ধ লোবান’ অবলম্বনে ছবিটির কাহিনী গড়ে উঠেছে।

তবে এতে যুক্ত হয়েছে  পরিচালক নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুর মুক্তিযুদ্ধকালীন নানামুখী অভিজ্ঞতা। তার অভিজ্ঞতা ছাড়াও এখানে দেখা যাবে ঢাকাসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের কিংবদন্তি  গেরিলা  যোদ্ধা খোকন, আজাদ, রুমি, আলম এবং শাহাদাতের প্রতিরূপ।

সরকারি অনুদানে নির্মিত ছবি ‘গেরিলা’র শুটিং হয়েছে ঢাকা ও রংপুরের বিভিন্ন লোকেশনে। শুটিং শেষে বর্তমানে  ছবিটি আছে এডিটিং টেবিলে। চলতি বছর ২২ মে শনিবার চ্যানেল আই ভবনে ছবির  শুভ মহরত অনুষ্ঠিত হয়েছিল। পরিচালক কথা দিয়েছিলেন অক্টোবর মাসের মধ্যেই শেষ করবেন এর কাজ। তিনি তার কথা রেখেছেন। জানিয়েছেন, ছবির ৯৫ ভাগ কাজ শেষ হয়েছে আগস্টের প্রথম সাপ্তাহে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবসে ছবিটি মুক্তি পাবে।

পুনা ফিল্ম ইনস্টিটিউট থেকে ফিল্ম এডিটিংয়ে পড়াশোনা শেষে দেশে ফিরে সামির আহমেদ যুক্ত হয়েছেন ‘গেরিলা’ সম্পাদনায়। ছবিটি সম্পাদনার অভিজ্ঞতা জানিয়ে সামির আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘গেরিলা’র প্রতিটি শট জীবন্ত; দেখলেই  বোঝা যায় এটি একটি পরিশ্রমের ফসল। সম্পাদনার কাজটি আমি করছি যথেষ্ট সময় নিয়ে। ছবিটির সঙ্গে যুক্ত থাকতে পেরে নিজেকে খুব ভাগ্যবান মনে হচ্ছে। আশা করছি এটি মুক্তিযুদ্ধের প্রতিচ্ছবি হবে এবং মানুষের ভালো লাগবেই।
 
কথা হয় ছবির প্রধান সহকারী পরিচালক এবিএম নাজমুল হুদার সাথে। তিনি জানান, কাজটা করতে অনেক পরিশ্রম হয়েছে । আমরা চেয়েছিলাম জুন-জুলাই মাসের আবহাওয়া ব্যবহার করতে, করেছিও তাই। ছবির বেশির ভাগ কাজ এ সময়ে শেষ করতে হয়েছে বলে সবারই বেশি শ্রম দিতে হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আমাদের আজকের প্রজন্মের অধিকাংশেরই  মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা নেই।   আশা করছি এখান থেকে আমরা মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাবো। কারণ এ ছবির সব কিছুই জীবন থেকে নেওয়া।

ছবিটির চিত্রনাট্য লিখেছেন নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু ও এবাদুর রহমান। ছবিতে শিমূল ইউসুফের দুটি গান ব্যবহার করা হয়েছে। একটি কাওয়ালি গানও আছে। এটি  গেয়েছেন সামির কাওয়াল।

ছবিটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন জয়া আহসান, ফেরদৌস, এ টি এম শামসুজ্জামান, পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়, রাইসুল ইসলাম আসাদ, শম্পা রেজা, আজাদ আবুল কালাম, গাজী রাকায়েত, আহমেদ রুবেলসহ প্রায় ৪৫০ জন শিল্পী।

ছবির প্রধান চরিত্র রূপায়ণকারী অভিনেত্রী জয়া আহসান বলেন, অনেক কিছু শিখেছি আমি এ ছবিতে কাজ করতে গিয়ে। মুক্তিযুদ্ধের আবেগ আমি উপলব্ধি করেছি কাজ করার সময়। আমি সব অভিনয়ই  মনোযোগ দিয়ে করি। এ ছবিতে মনোযোগের পরিমাণ ছিল আরও বেশি। শুধু আমি নই, আমার সহ-শিল্পীরা প্রত্যেকেই নিজের সবটুকু ক্ষমতা ঢেলে এখানে অভিনয় করেছেন। এটি আমার জীবনের একটি স্মরণীয় কাজ।

ছবির একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন নায়ক ফেরদৌস। তিনি বলেন, ‘গেরিলা’ ছবিতে অভিনয় করেছি অতিথিশিল্পী হিসেবে। আমার উপস্থিতি এখানে স্বল্প সময়ের। কিছু কাজ আছে যেগুলোকে আমি মনে করি কমিটমেন্টের অংশ। মুক্তিযুদ্ধের এই ছবিতে অভিনয় করাটাকে আমি নিজ কমিটমেন্টের অংশ বলেই মনে করি।  

‘গেরিলা’ প্রসঙ্গে বাংলানিউজ সবশেষে কথা বলে নির্মাতা-পরিচালক নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুর সঙ্গে। তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলো এ ছবিতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস নতুন প্রজন্মকে জানানোর জন্যই ছবিটি নির্মাণের পরিকল্পনা করি। তবে এটি ইতিহাস নয় চলচ্চিত্র, তাই চলচ্চিত্রের মতোই নির্মাণ করা হয়েছে। প্রত্যেক অভিনেতা-অভিনেত্রী ও কলাকুশলী যে আন্তরিকতায় আমার সঙ্গে এখানে কাজ করেছেন, তাতে আমি মুগ্ধ। আমাদের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা আর আন্তরিকতায় নির্মিত হচ্ছে ‘গেরিলা’। আশা করছি আগামী বিজয় দিবসে ছবিটি দর্শকের কাছে পৌছে দিতে পারবো।

‘গেরিলা’ ছবিটি প্রযোজনা করেছে ইমপ্রেস টেলিফিল্ম। এটি তাদের মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ১০তম চলচ্চিত্র।

বাংলাদেশ স্থানীয় সময় ১৬৩০, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।