ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের কথা সন্তানকে জানাবেন কীভাবে?

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০১৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৪
বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের কথা সন্তানকে জানাবেন কীভাবে?

বাবা-মায়ের হাত ধরে বড় হবে সন্তান। এমনটাই হওয়ার কথা।

কিন্তু কখনও পরিচিত সেই সমীকরণ বদলে যায় জীবনে। বোঝাপড়ার অভাব, মানিয়ে নিতে না পারা আর রোজের দাম্পত্য কলহ শেষ হয় বিচ্ছেদে। স্বাভাবিকভাবেই তার প্রভাব এসে পড়ে খুদে সদস্যের ওপর। বাবা-মায়ের আলাদা হয়ে যাওয়া সন্তানের জীবনেও ঝড় তোলে। এমন পরিস্থিতিতে গুরুদায়িত্ব সন্তানকে সুস্থ ভাবে বড় করার। সেই দায় কার? যিনি সন্তানের দায়িত্ব পেলেন তার, না কি দু’জনেরই!

প্রথম যে সমস্যার অসুবিধার সম্মুখীন হন অভিভাবকরা- কীভাবে সন্তানকে বলবেন, তারা একসঙ্গে থাকতে পারবেন না। সন্তানকে হয় মা, নয় তো বাবার কাছে থাকতে হবে।

এ বিষেয় পেরেন্টিং কনসালটেন্টের পরামর্শ, বিষয়টি কঠিন হলেও বাবা-মা দুইজনকে একসঙ্গে সেই কাজ করতে হবে। সন্তানকে বোঝাতে হবে বাবা-মা আর একসঙ্গে ভালো নেই। ভালো থাকতে পারছেন না। তাই আপাতত তারা আলাদা থাকবেন। তবে তার আদর-ভালৈাবাসা কমবে না কোনোমতেই।

* সন্তানের ওপর বিচ্ছেদের প্রভাব

বয়স অনুযায়ী সন্তানের মনে বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের প্রভাব বিভিন্নভাবে পড়ে। খুব ছোট যে, তার যদি দৈনন্দিন রুটিন বদলে যায়, তখনই তার মনে নিরাপত্তাহীনতা তৈরি হতে থাকে।

ছয়, সাত বা তার বেশি বয়সিদের মধ্যে বোঝার ক্ষমতা তুলনায় বেশি। তারা হয়তো পড়াশোনা বাবা-মা দু’জনের কাছেই করত। তাদের ক্ষেত্রে হঠাৎ একজনের না থাকা মন তো বটেই, পড়াশোনাতেও প্রভাব ফেলে। শুধু তা-ই নয়, পুরনো কোনও সুখস্মৃতি তাদের মধ্যে চোরা মন খারাপ তৈরি করে।

সন্তান যদি কৈশোরে পৌঁছায়, তাদের মনে প্রভাবটা বেশ জটিল হতে পারে। স্কুল থেকে গৃহশিক্ষক, বন্ধু, আত্মীয় সবার প্রশ্নের মুখে পড়ার ভয় থাকে। লোকে কী বলবে, আর সে কী বলবে, সেই দ্বন্দ্ব তাড়া করে বেড়ায়।

* অভিভাবকের সঠিক মানসিকতা

স্বামী-স্ত্রীর বিচ্ছেদের পরেও কিন্তু সন্তানকে সুস্থভাবে বড় করে তোলা সম্ভব। বুঝতে হবে, দাম্পত্য সম্পর্ক শেষ হলেও বাবা-মায়ের দায়িত্ব শেষ হয়নি। সন্তানকে তো বাবা-মা দু’জনেই ভালোবাসেন।

চাকরিজীবী নায়না তার যখন বিবাহবিচ্ছেদ হয়, তখন ছেলের বয়স ছিল সাত। এখন নায়নার ছেলে অনেকটাই বড়। ছেলের যখন ইচ্ছা হয়, সে বাবা ও দাদির সঙ্গে থাকে। আবার সপ্তাহ শেষে মায়ের ছুটির দিনগুলোতে মায়ের সঙ্গে থাকে। বেড়াতে যায়। তার পড়াশোনাও বাবা-মা দু’জনেই যতটা পারে দেখে।

বিচ্ছেদের পর সন্তানকে বড় করতে হলে তার মনের দিকটা বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হবে, বলছেন পেরেন্টিং কনসালটেন্ট। তার কথায়, মা অথবা বাবা, যার কাছেই সন্তান থাকুক, একে অন্যের বিষয়ে খারাপ কথা বলা অনুচিত। বরং সন্তান যাতে মা ও বাবা দু’জনকেই ভালোবাসতে পারে, সে দিকটাই দেখা দরকার। সন্তানের স্বার্থে বাবা-মা একসঙ্গে কোথাও খেতে পারেন, আইনি সমস্যা না থাকলে ঘুরতেও যেতে পারেন।

আসলে স্বামী-স্ত্রীর বিচ্ছেদ হলেও বাবা-মায়ের পরিচয়টা যে বদলে যায় না, সেটাই সন্তানকে বড় করার সময়ে মাথায় রাখা খুব জরুরি।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২৪
এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।