ঢাকা, রবিবার, ১ পৌষ ১৪৩১, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

এমসি কলেজে গণধর্ষণ: আরও দুই আসামির স্বীকারোক্তি

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২১ ঘণ্টা, অক্টোবর ৪, ২০২০
এমসি কলেজে গণধর্ষণ: আরও দুই আসামির স্বীকারোক্তি

সিলেট: সিলেটের মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজে গণধর্ষণের ঘটনায় করা মামলার আরও দুই আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারাক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

তারা হলেন-মামলার এজাহারনামীয় তিন নম্বর আসামি তারেকুল ইসলাম তারেক (২৮) ও পাঁচ নম্বর আসামি মাহফুজুর রহমান মাছুম (২৫)।

রোববার (৪ অক্টোবর) সন্ধ্যা সোয়া ৬টায় জবানবন্দি রেকর্ড শেষে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। সিলেট নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (এসি প্রসিকিউশন) অমূল্য কুমার চৌধুরী সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

তিনি জানান, দুপুর ২টার দিকে ধর্ষণ মামলার দুই আসামিকে আদালতে হাজির করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহপরাণ থানার পরিদর্শক ইন্দ্রনীল ভট্টাচার্য্য। পৃথক আদালতে তাদের স্বীকারাক্তি নেওয়া হয়। আদালতে তারা দুইজনের গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত থাকার ব্যাপারে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

আসামিদের মধ্যে তারেকুল ইসলাম তারেককে অতিরিক্ত চিফ মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমানের আদালতে এবং  মাহফুজুর রহমান মাছুমকে মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-দ্বিতীয় আদালতে হাজির করা হয়। ওই আদালতের বিচারক সাইফুর রহমান তার জবানবন্দি দেন।

এরআগে শনিবার (৩ অক্টোবর) অতিরিক্ত চিফ মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমানের আদালতে রাজনের, মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-দ্বিতীয় আদালতে আইনুলকে হাজির করা হলে বিচারক সাইফুর রহমান তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন এবং মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট-তৃতীয় আদালতে শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রণিকে হাজির করা হলে বিচারক শারমিন খানম নীলা তার জবানবন্দি রেকর্ড করেন।

সিলেট নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার ( মিডিয়া) জ্যোতির্ময় সরকার বাংলানিউজকে বলেন, পাঁচদিনের রিমান্ড শেষে রোববার দুই আসামিকে আদালতে জবানবন্দি নেওয়ার জন্য হাজির করা হয়েছে। এর আগে শুক্রবার (২ অক্টোবর) মামলার প্রধান আসামি সাইফুর রহমান, অর্জুন লস্কর ও রবিউল ইসলাম নিজেদের দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন।

গত শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) এমসি কলেজ ছাত্রাবাসে স্বামীকে আটক রেখে নারীকে ছাত্রলীগের ছয়জন নেতাকর্মী গণধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। খবর পেয়ে রাত সাড়ে ১০টার দিকে ওই দম্পতিকে ছাত্রাবাস থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ওই নারীকে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস (ওসিসি) সেন্টারে ভর্তি করা হয়।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, দক্ষিণ সুরমার নবদম্পতি শুক্রবার বিকেলে প্রাইভেটকারে করে এমসি কলেজে বেড়াতে যান। বিকেলে এমসি কলেজের ছাত্রলীগের ছয়জন নেতাকর্মী স্বামী-স্ত্রীকে ধরে ছাত্রাবাসে নিয়ে প্রথমে মারধর করেন। পরে স্বামীকে আটকে রেখে স্ত্রীকে গণধর্ষণ করেন।

এ ঘটনায় শনিবার ভোর রাতে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ২/৩ জনকে অভিযুক্ত করে নগরের শাহপরান থানায় এ মামলা (২১(৯)২০২০) দায়ের করেন ওই নারীর স্বামী। মামলায় এজাহার নামীয় আসামিরা হলেন- সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার উমেদনগরের রফিকুল ইসলামের ছেলে তারেকুল ইসলাম তারেক (২৮), হবিগঞ্জ সদরের বাগুনীপাড়ার মো. জাহাঙ্গীর মিয়ার ছেলে শাহ মো. মাহবুবুর রহমান রণি (২৫), জকিগঞ্জের আটগ্রামের কানু লস্করের ছেলে অর্জুন লস্কর (২৫), দিরাই উপজেলার বড়নগদীপুর (জগদল) গ্রামের রবিউল ইসলাম (২৫) ও কানাইঘাটের গাছবাড়ি গ্রামের মাহফুজুর রহমান মাসুমকে (২৫)।

এছাড়া ঘটনার পর অভিযানে নেমে সাইফুরের কক্ষ থেকে অস্ত্র উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পৃথক আরেকটি মামলা দায়ের করেন শাহপরান (র.) থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিল্টন সরকার। ছাত্রলীগ ক্যাডার সাইফুর রহমানকে আসামি করে মামলাটি (নং-২২(৯)২০২০) দায়ের করেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৯ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৪, ২০২০
এনইউ/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।