ঢাকা, রবিবার, ১ পৌষ ১৪৩১, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

যৌতুক ও ভ্রূণ হত্যা: এএসপি নাজমুস সাকিব কারাগারে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২০
যৌতুক ও ভ্রূণ হত্যা: এএসপি নাজমুস সাকিব কারাগারে ছবি: প্রতীকী

ঢাকা: ভ্রূণ হত্যা, নির্যাতন, যৌতুকের মামলায় সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) নাজমুস সাকিবকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।  

মঙ্গলবার (১৫ সেপ্টেম্বর) নারী ও শিশু ট্রাইব্যুনাল-৬ এর বিচারক আব্দুল্লাহ আল মামুন এ আদেশ দেন।

 

হাইকোর্ট থেকে চার সপ্তাহের আগাম জামিন নিয়েছিলেন এএসপি নাজমুস সাকিব। সেই জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ায় মঙ্গলবার তিনি এ আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চান। অপরদিকে আসামিপক্ষে আইনজীবী জামিন আবেদনের বিরোধিতা করেন। শুনানি শেষে বিচারক তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।  

একই আদালতে তার বাবা সফিউল্লাহ তালুকদার ও মা খালেদা সুলতানা আইনজীবীর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে বিচারক তাদের জামিন মঞ্জুর করেন।  

বাদীপক্ষে আইনজীবী ইশরাত হাসান ও জামিন আবেদনের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী কাজী নজিবুল্লাহ হিরু শুনানি করেন।  

পরে বাদীপক্ষের আইনজীবী ইশরাত হাসান বাংলানিউজকে বলেন, পুলিশ ক্যাডারে চাকরি পাওয়ার আগে এ বিয়ে করেন নাজমুস সাকিব। পরে এএসপি হয়ে তিনি স্ত্রীকে অবজ্ঞা করতে থাকেন। এক পর্যায়ে যৌতুকের জন্য চাপ, মারধর ও ভ্রুণও নষ্ট করান। একবার ভ্রুণ নষ্ট করার পর ফের ভ্রুণ নষ্ট করতে চেয়েছে নাজমুস সাকিব। বাদী তাতে রাজি হননি। তাই নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে গেলে এক পর্যায়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে আসতে বাধ্য হন তিনি। তাই অপরাধের মাত্রা বিবেচনায় আমরা জামিনের বিরোধিতা করেছি। বিজ্ঞ আদালত তা বিবেচনায় নিয়ে নাজমুস সাকিবকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।  

হাইকোর্টে জামিন হলে নিম্ন আদালতে তা বাতিল না করার বিষয়ে নির্দেশনা রয়েছে। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, হাইকোর্ট আগাম জামিন দিয়ে বলেছিলেন, আত্মসমর্পণের পর মামলার গুণাগুণ বিবেচনায় নিয়ে জামিনের বিষয়ে আদেশ দিতে। মামলার গুণাগুণ বিবেচনায় আদালত নাজমুস সাকিবের জামিনের আবেদন নামঞ্জুর করেছেন।  

গত ১৮ আগস্ট বাবা-মাসহ এএসপি নাজমুস সাকিবকে হাইকোর্ট চার সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছেন। চার সপ্তাহ পর তাদের নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়।  

গত ৪ জুন রাতে রমনা থানায় এএসপি নাজমুস সাকিবসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন তার স্ত্রী ইশরাত রহমান।  

মামলার অভিযোগে বলা হয়, নাজমুস সাকিবের (৩৪) সঙ্গে ইশরাত রহমানের ২০১৭ সালে মার্চে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে শ্বশুর মো. সফিউল্লাহ তালুকদার (৬০), শাশুড়ি খালেদা সুলতানা (৫২) তাদের যৌতুকলোভী এবং অত্যাচারী মনোভাব প্রকাশ করতে থাকেন। আসামিরা বিভিন্ন সময় ইশরাতকে তার বাবার কাছ থেকে নগদ টাকা এনে দিতে চাপ দিতে থাকেন। টাকা না দিলে সব আসামি মিলে তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করতেন। নির্যাতনের ভয়ে তিনি তার বাবার কাছ থেকে প্রায়ই নগদ টাকা এনে আসামিদের দিতেন।

অভিযোগে আরও বলা হয়, ১২ লাখ টাকা যৌতুক দিতে না পারায় আসামিরা ইশরাতের ওপর নির্যাতন চালাতে থাকে। ওই সময় ইশরাত গর্ভবতী হলে তার ওপর আসামিদের নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। তারা তালাকের ভয় দেখিয়ে ইশরাতকে গর্ভপাত করানোর জন্য চাপ দিতে থাকেন।  

ইশরাত রাজি না হলে তার ওপর নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে যায়। এক পর্যায়ে ২০১৯ সালের জুলাই মাসে ইশরাতের স্বামী নাজমুস সাকিব তালাকের ভয় দেখিয়ে গর্ভপাত করান।  

বাংলাদেশ সময়: ১৮২২ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১৫, ২০২০
কেআই/আরবি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।