ঢাকা: ফারমার্স ব্যাংকের (বর্তমান পদ্মা ব্যাংক) চার কোটি টাকা স্থানান্তর ও আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহাসহ (এসকে সিনহা) ১১ আসামির বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিলেন সোনালী ব্যাংক সুপ্রিম কোর্ট শাখার তিন কর্মকর্তা।
তারা হলেন—সোনালী ব্যাংক সুপ্রিম কোর্ট শাখার প্রিন্সপাল অফিসার সাদিকুল ইসলাম, শাকওয়াত হোসেন মিশন ও একই শাখার সিনিয়ার অফিসার আওলাদ হোসেন।
মঙ্গলবার (০১ সেপ্টেম্বর) ঢাকার চতুর্থ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ নাজমুল আলমের আদালতে সাক্ষ্য দেন তারা। আদালত আগামী ৪ অক্টোবর পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ধার্য করেছেন।
গত ১৩ আগস্ট একই আদালত অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে তাদের বিচার শুরুর নির্দেশ দেন। গত ১৮ আগস্ট এই মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। ওই দিন মামলার বাদী দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল সাক্ষ্য দেন।
এরপর গত ২৫ আগস্ট সাক্ষ্য দেন আরও তিনজন। তারা হলেন— দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক মনিরুল ইসলাম, পদ্মা ব্যাংকের সহকারী ভাইস প্রেসিডেন্ট (এভিপি) ও ব্যাংকটির এক্সিকিউটিভ অফিসার রেজাউল হাসান।
এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে ১৮ সাক্ষীর মধ্যে ৭ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে।
এদিন কারাগারে থাকা আসামি মাহবুবুল হক চিশতি ওরফে বাবুল চিশতিকে আদালতে হাজির করা হয়। এছাড়া জামিনে থাকা এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট ও প্রাক্তন ক্রেডিট প্রধান কাজী সালাহউদ্দিন, সাবেক এমডি এবিএম শামীম, ভাইস প্রেসিডেন্ট লুৎফুল হক, ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট স্বপন কুমার রায়, টাঙ্গাইলের মো. শাহজাহান ও নিরঞ্জন কুমার সাহা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
এ মামলায় এসকে সিনহাসহ মোট ৪ আসামি এখন পলাতক। বাকি তিনজন হলেন— ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সফিউদ্দিন আসকারী আহমেদ, সাভারের শ্রীমতি সান্ত্রী রায় (সিমি) ও শ্রী রণজিৎ চন্দ্র সাহা।
গত ৯ ডিসেম্বর ১১ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হয়। অভিযোগত্রে ফারমার্স ব্যাংকের নিরীক্ষা কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মো. মাহবুবুল হক চিশতীর (বাবুল চিশতী) নাম নতুনভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। আর তদন্তকালে এজাহারনামীয় আসামি ফারমার্স ব্যাংকের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট ও সাবেক শাখা ব্যবস্থাপক (গুলশান) মো. জিয়া উদ্দিন আহমেদ মারা যাওয়ায় তাকে এই মামলার দায় থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে অসৎ উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করে নিজেরা লাভবান হয়ে এবং অন্যদের লাভবান করে অবৈধভাবে ভুয়া ঋণ সৃষ্টির মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর করে নগদে উত্তোলন ও বিভিন্ন পে-অর্ডারের মাধ্যমে স্থানান্তর করে অর্জিত অপরাধলব্ধ আয় উত্তোলন, স্থানান্তর ও নিজেদের ভোগদখলে রেখে অবৈধভাবে প্রকৃত উৎস, অবস্থান গোপন করে পাচার করেছেন বা পাচারের ষড়যন্ত্রে সংঘবদ্ধভাবে সম্পৃক্ত থেকে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪২০/১০৯ ও ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২)(৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন।
অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে গত ৫ জানুয়ারি এসকে সিনহাসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।
এরপর গত ২০ ফেব্রুয়ারি মামলাটি বিচারের জন্য এই আদালতে বদলির আদেশ দেন ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কে এম ইমরুল কায়েশ।
এর আগে ২০১৯ সালের ১০ জুলাই ক্ষমতার অপব্যবহার করে ভুয়া ঋণের মাধ্যমে চার কোটি টাকা স্থানান্তর ও আত্মসাৎ করার অভিযোগ মামলাটি করে দুদক। গত ৪ ডিসেম্বর এই মামলায় অভিযোগপত্র অনুমোদন দেয় সংস্থাটি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৩৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০১, ২০২০
কেআই/এমজেএফ
