ঢাকা, মঙ্গলবার, ২ পৌষ ১৪৩১, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

শুনানির অপেক্ষায় আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলার আপিল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩০ ঘণ্টা, মে ৭, ২০২০
শুনানির অপেক্ষায় আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলার আপিল আহসান উল্লাহ মাস্টার

ঢাকা: আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যা মামলায় হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে উভয়পক্ষের করা আলাদা লিভ টু আপিলের (আপিলের অনুমতি) শুনানির জন্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের কার‌্যতালিকায় রয়েছে। কিন্তু সময় আবেদনের কারণে এ আপিল শুনানি হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

সর্বশেষ চলতি বছরের ৯ মার্চ প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের কার‌্যতালিকায় মামলাটি ১১৮ নম্বর ক্রমিকে ছিলো।

এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মোমতাজ উদ্দিন ফকির বলেন, আসামিপক্ষের সময় আবেদনের কারণে শুনানি হচ্ছে না।

এখন দেখা যাক, করোনা পরিস্থিতির পর কোর্ট খুললে কি হয়।

এ মামলায় হাইকোর্টের রায়ে যারা খালাস পেয়েছেন এবং যাদের মৃত্যুদণ্ড কমে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে সেসব ক্ষেত্রে বাদীপক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষ আলাদা লিভ টু আপিল করে। এছাড়া দণ্ডিত আসামিরাও আলাদা লিভ টু আপিল করে।

২০০৪ সালের ৭ মে গাজীপুরের টঙ্গীর নোয়াগাঁও এম এ মজিদ মিয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে এক জনসভায় আহসান উল্লাহ মাস্টারকে গুলি করে হত্যা করেন দুর্বৃত্তরা। ঘটনার পরদিন আহসান উল্লাহ মাস্টারের ভাই মতিউর রহমান টঙ্গী থানায় ১৭ জনের নামোল্লেখ করে অজ্ঞাতপরিচয় আরও ১০/১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এরপর বিচার শেষে ২০০৫ সালের ১৬ এপ্রিল বিচারিক আদালত নূরুল ইসলাম সরকারসহ ২২ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৬ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ ও দু’জনকে খালাস দেন। পরে বিচারিক আদালতের রায়ের বিষয়ে হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স ও জেল আপিল হয়।

২০১৬ সালের ১৫ জুন আহসান উল্লাহ মাস্টার হত্যার ডেথ রেফারেন্স ও আপিল মামলার রায়ে ১১ জনকে খালাস দেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ। রায়ে বিচারিক আদালতের দেওয়া বিএনপি নেতা নুরুল ইসলাম সরকারসহ অন্য ছয়জনের ফাঁসির আদেশ বহাল রাখেন উচ্চ আদালত। বিচারিক আদালতে দণ্ড পাওয়া জীবিত ২৬ আসামির মধ্যে ৮ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। আগে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত একজন পলাতক থাকায় তার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি আদালত।  

বিচারিক আদালতের দেওয়া ফাঁসি ও যাবজ্জীবন কারাদণ্ড থেকে খালাস পাওয়া ওই ১১ আসামি হলেন- আমির হোসেন, জাহাঙ্গীর ওরফে বড় জাহাঙ্গীর, ফয়সাল (পলাতক), লোকমান হোসেন ওরফে বুলু, রনি মিয়া ওরফে রনি ফকির (পলাতক), খোকন (পলাতক), দুলাল মিয়া, রাকিব উদ্দিন সরকার পাপ্পু, আইয়ুব আলী, জাহাঙ্গীর ও মনির।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ৮ জনের মধ্যে ৭ জনকে বিচারিক আদালতের দেওয়া ফাঁসির সাজা কমেছে এবং বাকি একজনের আগের সাজাই বহাল রয়েছে। মারা যাওয়া দুই আসামির আপিলের নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন আদালত। আর মামলাটির মোট ৩০ আসামির মধ্যে দু’জন বিচারিক আদালতেই খালাস পেয়েছিলেন।

চূড়ান্ত রায়ে মৃত্যুদণ্ড বহাল থাকা ছয়জন হলেন- নুরুল ইসলাম সরকার, নুরুল ইসলাম দিপু (পলাতক), মাহবুবুর রহমান মাহবুব, শহীদুল ইসলাম শিপু, হাফিজ ওরফে কানা হাফিজ ও সোহাগ ওরফে সরু।   

মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত সাতজন হলেন- মোহাম্মদ আলী, সৈয়দ আহমেদ হোসেন মজনু (পলাতক), আনোয়ার হোসেন ওরফে আনু (পলাতক), রতন মিয়া ওরফে বড় রতন, ছোট জাহাঙ্গীর (পলাতক), আবু সালাম ওরফে সালাম ওমশিউর রহমান ওরফে মশু (পলাতক)। যাবজ্জীবন বহাল থাকা আসামি হলেন নুরুল আমিন।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত অহিদুল ইসলাম টিপু পলাতক থাকায় তার সাজার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি আদালত।

বিচারিক আদালতে ফাঁসির দণ্ডাদেশ পাওয়ার পর মারা যাওয়ায় আল আমিন ও রতন ওরফে ছোট রতনের আপিলের নিষ্পত্তি করে দেন হাইকোর্ট।

৩০ আসামির বাকি দু’জন কবির হোসেন ও আবু হায়দার ওরফে মিরপুরইয়া বাবু বিচারিক আদালত থেকেই খালাস পেয়েছিলেন।

এরপর যারা খালাস পেয়েছেন এবং যাদের মৃত্যুদণ্ড কমে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে সে সব ক্ষেত্রে বাদীপক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষ আলাদা লিভ টু আপিল করে। এছাড়া দণ্ডিত আসামিরাও আলাদা লিভ টু আপিল করে।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২৭ ঘণ্টা, মে ০৭, ২০২০
ইএস/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।