ঢাকা, মঙ্গলবার, ২ পৌষ ১৪৩১, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

সেই ‘ক্যাডার আমিন’র বিরুদ্ধে অনলাইনে মামলা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০২০
সেই ‘ক্যাডার আমিন’র বিরুদ্ধে অনলাইনে মামলা

ঢাকা: করোনা ভাইরাসের প্রার্দুভাব মোকাবেলায় জনগণকে লাঠিপেটা করা টাঙ্গাইল পৌরসভার ১২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে অনলাইনে মামলা করেছেন সুপ্রিম কোর্টের এক আইনজীবী।
 

সোমবার (১৩ এপ্রিল) আইনজীবী জে আর খাঁন (রবিন) টাঙ্গাইল সদর থানায় মামলা হওয়ার বিষয়টি বাংলানিউজকে জানান।
 
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর মোশাররফ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, রোববার (১২ এপ্রিল) টাঙ্গাইল সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

এ বিষয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হবে। আসামিকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

>>>সামাজিক দূরত্ব না মানায় মারধর, ক্ষমা চাইলেন ‘ক্যাডার আমিন’

জানা যায়, ০৭ এপ্রিল দুপুর সাড়ে ১২টা। মানুষের আনাগোনা তেমন একটা চোখে না পড়লেও টাঙ্গাইল শহরের নিরালার মোড়ে নিউ মার্কেটে ওষুধের দোকানে মানুষের ভিড়। রাস্তায় দু-একটি মোটরসাইকেল চললেও রয়েছে চালকের পরিচয়পত্র। বেশিরভাগই ওষুধের বিক্রয় প্রতিনিধি। এসময় লাঠি হাতে কাউন্সিলর আমিন। কিছু বুঝে ওঠার আগেই সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার অজুহাত দেখিয়ে লাঠি দিয়ে পেটাতে শুরু করেন সাধারণ মানুষদের। এরপর সেখান থেকে চলে যান পার্ক বাজার রোডে। সেখানেও কয়েকটি ফুটপাত ব্যবসায়ী ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে আসা কয়েকজনকে পেটান। এরপর নিরালার মোড় দিয়ে সাধারণ মানুষকে পেটাতে তারা চলে যান শহরের শান্তিকুঞ্জ মোড়ে। সেখানেও পেটানো হয় কয়েকজনকে। এরপর চলে যান ছয়আনি বাজারে। সেখানেও বাজার করতে আসা সাধারণ মানুষকে পেটান তিনি। তাদের ওপরও চলে অমানবিকভাবে লাঠিপেটা। এসময় সরকারি এক নারী স্বাস্থ্যকর্মীকেও লাঞ্ছিত করা হয়।
 
এসময় ক্যাডার আমিন সঙ্গে ছিলেন- টাঙ্গাইল পৌরসভার প্যানেল মেয়র সাইফুজ্জামান সোহেল, টাঙ্গাইল চেম্বর অব কমার্সের সভাপতি খান আহমেদ শুভ, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন মানিক ও শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ রৌফ।

সাধারণ মানুষকে করোনার অজুহাতে মারপিটের ঘটনায় পুরো জেলাজুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। চলছে সমালোচানার ঝড়। এরপর টনক নড়ে কাউন্সিলর আমিনুর রহমান আমিনের। পরে কাউন্সিলর আমিনুর রহমান আমিন এ ঘটনায় ক্ষমা চেয়ে ফেসবুকে একটি ভিডিও আপলোড করেন। সেই ভিডিওতে তিনি বলেন, ‘সারাদেশে করোনা ভাইরাস যেভাবে মহামারি আকার ধারণ করেছে। সে লক্ষে টাঙ্গাইলবাসীকে সুরক্ষা করা এবং ঘরে ফেরার জন্য আবেগের বশে জনগণের সঙ্গে খারাপ আচরণ করেছি। এজন্য আমি লজ্জিত, দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী। ’
 
সুপ্রিমে কোর্টের আইনজীবী জে আর খাঁন রবিন বলেন, কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিতে পারে না। তিনি কাউন্সিলর জনগণের সচেতনতার জন্য বুঝাতে পারেন। জনগণ যদি সাড়া না দেয় তাহলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করতে পারতেন। তা না করে আইন বর্হিভূতভাবে তিনি জনগণকে আঘাত করেছেন। একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আমি সেই কাউন্সিলরসহ অজ্ঞাতনাম সহযোগীদের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ রোববার টাঙ্গাইল সদর থানায় ইমেইলের মাধ্যমে পাঠিয়েছে। আজ সোমবার সকালে জেনেছি এটা এজাহার (মামলা নম্বর ৮) হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০২০
ইএস/এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।