ঢাকা, মঙ্গলবার, ২ পৌষ ১৪৩১, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

সাংবাদিক আরিফুলের বিরুদ্ধে মামলাসহ যাবতীয় কার্যক্রম স্থগিত

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭১০ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০২০
সাংবাদিক আরিফুলের বিরুদ্ধে মামলাসহ যাবতীয় কার্যক্রম স্থগিত

ঢাকা: কুড়িগ্রামে মধ্যরাতে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাংবাদিক আরিফুল ইসলামের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলাসহ সব কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট।

এছাড়া কুড়িগ্রামের তৎকালীন জেলা প্রশাসক, তিন ম্যাজিস্ট্রেটসহ অজ্ঞাত ৩৫/৪০ জনের বিরুদ্ধে এ বিষয়ে থানায় করা আরিফুলের অভিযোগ এজাহার হিসেবে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সোমবার (২৩ মার্চ) বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।

রুলে আরিফুলকে দেওয়া সাজার প্রক্রিয়া কেন অবৈধ ও বাতিল হবে করা হবে না তা জানতে চেয়েছেন আদালত। এর আগে আদালতে উপস্থিত হন আরিফুল। পরে আদালত তাকে রিট আবেদনকারী হতে বলেন। সে অনুসারে রিটের আবেদনকারী হন আরিফুল। এরপর আদালত আদেশ দেন।

আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এএম আমিন উদ্দিন ও আইনজীবী ইশরাত হাসান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল প্রতিকার চাকমা।

পরে প্রতিকার চাকমা বলেন, ওই সাংবাদিককে মোবাইল কোর্টে মামলাকরাসহ সব কার‌্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। এখন লিখিত আদেশ পেলে বিস্তারিত জানা যাবে।

এর আগে গত ১৬ মার্চ জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কারাদণ্ড দেওয়ার ঘটনায় সব নথি (রেকর্ড) চেয়েছেন হাইকোর্ট।

গত ১৫ মার্চ সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে দেওয়া সাজা ও দণ্ডের আদেশের অনুলিপি, অভিযান কারা পরিচালনা করেছে মোবাইল কোর্ট নাকি টাস্কফোর্স, রাতে অভিযান পরিচালনার বিষয়ে আইন অনুসারে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে কিনা, অভিযান পরিচালনার কারণ এবং আইন অনুসারে ঘটনা কার সম্মুখে কখন সংঘটিত হলো তা জানাতে রাষ্ট্রপক্ষে জানাতে নির্দেশ দেন। এ আদেশ অনুসারে রাষ্ট্রপক্ষ নথির ফটোকপি দাখিল করে।

দণ্ড দেওয়ার ঘটনায় বাংলা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক হারুন উর রশীদ জনস্বার্থে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট আবেদন করেন।

এদিকে সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগ্যানকে ২৫ হাজার টাকায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. সুজাউদ্দৌলা ১৫ মার্চ জামিন দেন।

কুড়িগ্রামে মধ্যরাতে সাংবাদিককে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে কারাদণ্ড দেওয়ার অভিযোগের তদন্ত করছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

কুড়িগ্রামের সাংবাদিক আরিফুল ইসলামের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, শুক্রবার (১৩ মার্চ) মধ্যরাতে জেলা প্রশাসনের লোকজন তার বাড়িতে গিয়ে দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকেন। পরে তাকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিয়ে বাড়িতে ‘আধা বোতল মদ ও দেড়শ গ্রাম গাঁজা’ পাওয়ার ঘটনায় ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তবে সাংবাদিক আরিফের সহকর্মী ও পরিবারের দাবি, একটি পুকুর সংস্কার নিয়ে পত্রিকায় প্রতিবেদন করায় জেলা প্রশাসক মোছা. সুলতানা পারভীন ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে ফাঁসিয়েছেন।

মধ্যরাতে সাংবাদিককে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে জেলে পাঠানোর ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনার মধ্যে বিষয়টি আমলে নেয় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৭ ঘণ্টা, মার্চ ২৩, ২০২০
ইএস/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।