গ্রন্থটিতে ইতিহাস বিকৃতির ঘটনায় তলবে হাজির হয়ে মঙ্গলবার (১২ মার্চ) বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চে এ ক্ষমা প্রার্থনা করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ব্যারিস্টার এ বি এম আলতাফ হোসেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. আজিজ উল্লাহ ইমন ও শুভঙ্কর সাহার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী যোবায়ের রহমান।
আইনজীবী আজিজ উল্লাহ ইমন পরে সাংবাদিকদের বলেন, বইটি নতুনভাবে প্রকাশিত হয়েছে। যাতে বঙ্গবন্ধুর ছবি ও বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংক অভ্যন্তরীণ নোটিশ দিয়ে প্রকাশিত আগের বইয়ের সমস্ত কপি তুলে নিয়েছে।
বইটি নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা ওঠার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে এক ব্যাখ্যায় বলা হয়, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস’ গ্রন্থের পাণ্ডুলিপি তৈরি ও প্রকাশনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় ২০১৩ সালের জুন মাসে। এ বিষয়ে তখন উপদেষ্টা কমিটি ও সম্পাদনা নামে দু’টি কমিটি গঠিত হয়। ওই কমিটি দু’টি পাণ্ডুলিপি চূড়ান্তের পর গ্রন্থটি ২০১৭ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রকাশিত হয়। গ্রন্থটি প্রকাশনার পরপরই এতে কতিপয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যত্যয় পরিদৃষ্ট হলে বাংলাদেশ ব্যাংক গভর্নর গ্রন্থটির বিতরণ বন্ধের নির্দেশ দেন এবং গ্রন্থটি রিভিউয়ের জন্য একজন ডেপুটি গভর্নরের নেতৃত্বে একটি রিভিউ কমিটি গঠন করেন।
এর মধ্যে ড. কাজী এরতেজা হাসানের রিটের পর গত বছরের ২ অক্টোবর রুল জারি করে এ ঘটনা তদন্তে অর্থ সচিবকে একটি অনুসন্ধান কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
এ আদেশ অনুসারে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (অর্থ বিভাগ) ড. মো. জাফর উদ্দীনকে আহ্বায়ক করে চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়।
তদন্ত প্রতিবেদনের মতামত অংশে বলা হয়, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ ব্যাংকের নামকরণ করেন। ... গ্রন্থটির দ্বিতীয় অধ্যায়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত রয়েছে। এ কারণে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি হিসেবে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি বাংলাদেশ ব্যাংকের ইতিহাস বইয়ে অন্তর্ভুক্ত করা অত্যাবশ্যক ছিলো। বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট বঙ্গবন্ধুর ছবি খুঁজে পাওয়া যায়নি-এ যুক্তিতে বঙ্গবন্ধুর ছবি বইয়ে অন্তর্ভুক্ত না করার বিষয়টি অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত। গ্রন্থটিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি অন্তর্ভুক্ত না করায় ইতিহাস বিকৃত হয়েছে মর্মে কমিটি মনে করে। ’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘গ্রন্থটিতে তদানিন্তন পকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আইয়ুব খান এবং পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর মোনায়েম খানের ছবি সংযোজন না করা শ্রেয় ছিল এবং সেটি সবার ভুল মর্মে বইটির সম্পাদক স্বীকার করেন। ’
এরপর গত ১৯ ফেব্রুয়ারি গ্রন্থটির সম্পাদককে তলব করেছিলেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার এ বি এম আলতাফ হোসেন বলেন, আদালত প্রকাশিত ওই বইগুলো কী করা হয়েছে, তা হলফনামা আকারে জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া পরবর্তী তারিখ রেখেছেন ৯ এপ্রিল। মঙ্গলবার (১২ মার্চ) ইতিহাস বিকৃতির দায় স্বীকার করে শুভঙ্কর সাহা নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৬১৯ ঘণ্টা,মার্চ ১২ , ২০১৯
ইএস/এসএইচ
