ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

এই প্রথম...

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০১ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০১৬
এই প্রথম...

ঢাকা: অর্থপাচারের দায়ে দণ্ডিত হওয়ার মধ্য দিয়ে জিয়া পরিবারের বড় ছেলে ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান এই প্রথম কোনো মামলায় কারাদণ্ডের মুখোমুখি হলেন।
 
অপরদিকে ২০০২ সালের অর্থপাচার আইনে প্রথমবারের মতো একটি অর্থপাচারের মামলায় হাইকোর্টে একজনের সাজা হলো এবং একজনের সাজার রায় রায় বহাল থাকলো বলে মনে করছেন দুদকের কৌসুলি খুরশীদ আলম খান।


 
এ রায়ের ফলে এখন তারেক রহমানকে ধরে আনতে সরাসরি উদ্যোগ নেওয়ার কথা বলছেন আইনমন্ত্রী।
 
বিগত জোট সরকারের আমলে রাজনীতির দৃশ্যপটে আসা তারেক রহমান প্রথম মামলার মুখোমুখি হন সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে। ওই সময় একডজনের বেশির মামলায় পড়েন তিনি। মহাজোট সরকার ক্ষমতায় আসার পর আরও কয়েকটি মামলা হয় তারেক রহমানের বিরুদ্ধে।
 
কিন্তু এসব মামলার মধ্যে ২০ জুলাই পর্যন্ত শুধু একটি মামলারই বিচারিক আদালতে বিচার সম্পন্ন হয়েছিলো। ওই রায়ে ২০১৩ সালে তিনি দণ্ডিত হননি। হাইকোর্টে এসে সে অর্থপাচারের অভিযোগের মামলায় বৃহস্পতিবার (২১ জুলাই) সাত বছরের কারাদণ্ড ও ২০ কোটি টাকা অর্থদণ্ড হয় তারেকের।
 
মামলার শুরু যেখানে
২০০২ সালে তারেক রহমান বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। সেই শুরু। রাজনৈতিক ক্ষমতার প্রভাবে গড়ে তোলেন হাওয়া ভবন। অভিযোগ রয়েছে, ওই সময় হাওয়া ভবনই সকল দুর্নীতির আঁখড়া ছিলো।

কিন্তু রেহাই মেলেনি। তার দল ক্ষমতা ছাড়ার পর ২০০৭ সালের ৭ মার্চ দুর্নীতি মামলার আসামি হিসেবে তারেক রহমানকে তার ঢাকা ক্যান্টমেন্টের মইনুল রোডের বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

প্রায় আঠারো মাস কারান্তরীণ থাকার পর ২০০৮ সালের ৩ সেপ্টেম্বর তার কারামুক্তি ঘটে। পরে একই মাসের ১১ সেপ্টেম্বর রাতেই তারেক রহমান উন্নত চিকিৎসার কথা বলে যুক্তরাজ্যের উদ্দেশ্যে রওনা হন। সেই থেকে তিনি লন্ডনে বসবাস করছেন।
 
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে করা বিভিন্ন মামলা বর্তমানে স্থগিত রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি মামলায় অব্যাহতিও পেয়েছেন তারেক। তবে মা খালেদা জিয়ার সঙ্গে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাতের মামলার আসামি হিসেবে তার বিচার চলছে ঢাকার একটি বিশেষ জজ আদালতে।
 
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের সভাপতি ও তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলা এবং তাতে ২২ জন নিহত হওয়ার ঘটনায় দু’টি মামলা করে পুলিশ। ২০১১ সালের ৩ জুলাই এ দু'টি মামলায় সিআইডি’র দেওয়া সম্পূরক অভিযোগপত্রে তারেক রহমানকে আসামি করা হয়।

সম্প্রতি বঙ্গবন্ধুর নামে কটূক্তিসহ রাষ্ট্রবিরোধী বিভিন্ন বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে আরও অনেকগুলো মামলা হয়।
 
অর্থপাচার মামলা
২০০৯ সালের ২৬ অক্টোবর রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানায় এ মামলাটি করে দুদক। মামলায় অভিযোগ করা হয়েছে, টঙ্গীতে প্রস্তাবিত ৮০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কাজ পাইয়ে দেওয়ার জন্য নির্মাণ কন্সট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান খাদিজা ইসলামের কাছ থেকে গিয়াস উদ্দিন আল মামুন ২০ কোটি ৪১ লাখ ২৫ হাজার ৮৪৩ টাকা নেন। সিঙ্গাপুরে এ টাকা লেনদেন হয়।
 
২০১৩ সালের ১৭ নভেম্বর তারেক রহমানকে বেকসুর খালাস দিয়ে তার বন্ধু গিয়াস উদ্দিন আল মামুনকে অর্থপাচার মামলায় ৭ বছরের কারাদণ্ড ও ৪০ কোটি টাকা অর্থদণ্ড দেন বিচারিক আদালত।
 
এ রায়ের বিরুদ্ধে ওই বছরের ৫ ডিসেম্বর আপিল করে দুদক। এ আপিলের শুনানি শেষে বৃহস্পতিবার অর্থপাচার ‍মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে তারেককে সাত বছরের কারাদণ্ড ও ২০ কোটি টাকা অর্থদণ্ড দেন হাইকোর্ট।
 
বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০১৬
ইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।