ঢাকা, শনিবার, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

লক্ষ্মীপুরে সহকর্মীকে হত্যা: ২ জনের যাবজ্জীবন 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০২৪
লক্ষ্মীপুরে সহকর্মীকে হত্যা: ২ জনের যাবজ্জীবন 

লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে রিয়াজ হোসেন নামে এক যুবককে হাত-পা বেঁধে শ্বাসরোধ করে হত্যার দায়ে তার সহকর্মী মো. কাউসার হোসেন (৩২) ও রাকিব হোসেনের (২৭) যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাদের প্রত্যেকের ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দেন।  রায়ের সময় দুই আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। তাদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।  

ভিকটিম রিয়াজ ও দণ্ডপ্রাপ্ত কাউসার সহকর্মী ছিলেন। পেশায় কাঠমিস্ত্রি ছিলেন তারা।  

জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) জসিম উদ্দিন রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।  

দণ্ডপ্রাপ্ত কাউসার সদর উপজেলার মান্দারী ইউনিয়নের যাদৈয়া গ্রামের আবু তাহেরের ছেলে এবং রাকিব তেওয়ারীগঞ্জ ইউনিয়নের বিনোদধর্মপুর গ্রামের মৃত রুহুল আমিনের ছেলে।  

ভিকটিম রিয়াজ হোসেন দত্তপাড়া ইউনিয়নের করইতোলা গ্রামের মৃত খোকনের ছেলে।  

আদালত সূত্র জানায়, ২০২৩ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি রাত থেকে কাঠমিস্ত্রি রিয়াজ হোসেন নিখোঁজ হন। বিভিন্ন স্থানে তার খোঁজ করেন পরিবারের লোকজন। ১৬ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রিয়াজের মোবাইলফোন থেকে তার পরিবারের লোকজনের কাছে ৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে অজ্ঞাতরা। ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দেওয়ার চুক্তি করে দুই হাজার টাকা বিকাশ করে রিয়াজের ভগ্নিপতি। পরে ১৭ ফেব্রুয়ারি চন্দ্রগঞ্জ থানায় অপহরণ মামলা করে রিয়াজের মা খুরশিদা বেগম (৫২)। বিষয়টি র‍্যাবকে জানালে র‍্যাব মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ এলাকা থেকে কাউসারকে গ্রেপ্তার করে। তার স্বীকারোক্তিতে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার মান্দারী বাজারের দিঘলী সড়কের একটি ভাড়াবাসা থেকে কাউসারের অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ এবং র‍্যাব। এরপর র‍্যাব চট্টগ্রাম থেকে কাউসারের দূর সম্পর্কের ভগ্নিপতি রাকিবকে গ্রেপ্তার করে। রাকিব মুক্তিপণের সহযোগী ছিলেন।  

কাউসার আদালতে রিয়াজকে খুনের দায় স্বীকার করে জানান, তারা দুজন একই সঙ্গে ফার্নিচারের নকশার কাজ করতেন। বিভিন্ন জায়গায় রিয়াজ কাজ কন্ট্রাক্ট নিলেও কাউসারকে কম টাকা দিতেন। এছাড়া কাউসারের স্ত্রীর সঙ্গে রিয়াজ বিভিন্ন সময়ে মোবাইলফোনে কথা বলতেন। এতে রিয়াজের প্রতি সন্দেহ হয় কাউসারের। কাউসার তার বন্ধু রিয়াজের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার পরিকল্পনা করে। তারা দুজন একসঙ্গে মান্দারী বাজারের দিঘলী সড়কের মুখে একটি কক্ষ ভাড়া নিয়ে সেখানে থাকতেন। ২০২৩ সালে ১৪ ফেব্রুয়ারি রাতে ওই বাসায় রিয়াজকে জুসের সঙ্গ চেতনানাশক ওষুধ খাইয়ে দিয়ে অজ্ঞান করে হাত-পা বাঁধে কাউসার। রিয়াজের চেতনা ফিরে এলে তিনি হাত-পা বাঁধার কারণ জানতে চাইলে কাউসার তার মুখে গামছা গুঁজে দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। ওই কক্ষে মৃতদেহ রেখে পরদিন কাউসার তার আত্মীয় রাকিবকে সঙ্গে করে চট্টগ্রামে চলে যান। সেখান থেকে রিয়াজের নম্বর থেকে মুক্তিপণ দাবি করেন কাউসার। এরপর র‍্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হন কাউসার ও রাকিব।  

পরে সাক্ষ্য, প্রমাণের ভিত্তিতে মঙ্গলবার এ দুই আসামির বিরুদ্ধে রায় দেন আদালত।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬১২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬, ২০২৪
এসআরএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।