ঢাকা, রবিবার, ১৬ ফাল্গুন ১৪৩১, ০২ মার্চ ২০২৫, ০১ রমজান ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

নববর্ষে কিমের ভাষণ

আমার টেবিলে নিউক্লিয়ার বাটন আছে!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮১২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১, ২০১৮
আমার টেবিলে নিউক্লিয়ার বাটন আছে! জাতির উদ্দেশ্যে নববর্ষের ভাষণ দিচ্ছেন উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং উন। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: আমার টেবিলেই আমি সব সময় নিউক্লিয়ার লঞ্চবাটন সক্রিয় রেখেছি। যাতে করে যুক্তরাষ্ট কখনোই ‘যুদ্ধ শুরু করতে না পারে’। রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত নববর্ষের ভাষণে হুমকি মেশানো একথাগুলো বলেন উত্তর কোরীয় নেতা কিম জং উন ।

‘যুক্তরাষ্ট্রের সব এলাকা এখন উত্তর কোরিয়ার পরমাণু অস্ত্রের আওতায়’ –যুক্তরাষ্ট্রকে একথা স্মরণ করিয়ে দিলেও নিজের বক্তব্যকে তিনি হুমকি বলতে নারাজ। তার ভাষায়, ‘এটাই হচ্ছে বাস্তবতা।

এটা কোনো হুমকি নয়’।

ব্যাপক বিধ্বংসী পরমাণু অস্ত্রের পাল্লার কথা স্মরণ করিয়ে দিলেও কিছুটা নমনীয়তারও আভাস দিয়েছেন কিম। বলেছেন, সংলাপ শুরু করার ব্যাপারে তার আপত্তি নেই। তিনি ও তার দেশ উত্তর কোরিয়া ‘ওপেন টু ডায়ালগ’।

তিনি সিউলে অনুষ্ঠেয় শীতকালীন অলিম্পিকে একটি টিম পাঠাবেন বলেও উল্লেখ করেন।

কিমের দেওয়া হুমকির ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে বিব্রত ট্রাম্প  ‘দেখি কী করা যায়, ‘দেখি কী করা যায়’—এর বাইরে তার স্বভাবসুলভ হুমকি ধমকির দিকে যাননি। ট্রাম্প ফ্লোরিডায় তার নিজের  ‘মার-এ-লাগো’ নামের রিসোর্টে নববর্ষের অনুষ্ঠান উদযাপনের এক ফাঁকে অন্য একটি অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছিলেন।

টিভিতে সম্প্রচারিত ভাষণে কিম মূলত তার দেশের পরমাণু কর্মসূচি নিয়েই বেশি কথা বলেছেন। কথা বলেছেন এই কর্মসূচির প্রয়োজনীয়তা ও যৌক্তিকতা নিয়েও। আত্মরক্ষার জন্য এর কোনো বিকল্প তার দেশের নেই। তিনি আরও বলেন, উত্তর কোরিয়াকে অবশ্যই পরমাণু অস্ত্রের বিশাল ভাণ্ডার গড়ে তুলতে হবে। তৈরি করতে হবে অধিকতর দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র । পাশাপাশি এসব অস্ত্র দ্রুত মোতায়েনও করতে হবে।

দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে উত্তর কোরিয়ার সম্পর্কের ব্যাপারে কিম জং উন বলেন, দুটো দেশ এখনো সেই আগের মতোই ‘যুদ্ধাবস্থায় আছে’; তবে সামনের বছরগুলোতে উত্তেজনার পারদ কিছুটা নামতে পারে বলে তার ধারণা।

তার ভাষায়, ‘২০১৮ সালটি উত্তর ও দক্ষিণ উভয় কোরিয়ার জন্য তাৎপর্যপূর্ণ। উত্তর কোরিয়া তার জন্মের ৭০ বছর পূর্তি উদযাপন করবে আর দক্ষিণ কোরিয়া আয়োজন করবে শীতকালীন অলিম্পিকের। '

‘শীতকালীন গেমসে উত্তর কোরিয়ার অংশগ্রহণ দুদেশের মানুষের ভালোবাসা ও ঐক্যকেই তুলে ধরবে। আমরা এই গেমসের সফলতা কামনা করছি। আমাদের যোগদানের ব্যাপারে দুদেশের প্রতিনিধিরা চাইলে জরুরিভাবে বসে নিজেদের মধ্যে সব কিছু ঠিকঠাক করে নিতে পারেন। ’

কিমের নববর্ষের এই ভাষণে নমনীয়তার এই সুর গত এক বছর ধরে চলা তার তীব্র আগ্রাসী সুরের ঠিক বিপরীত। গত এক বছরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে কিমের রীতিমতো কথার যুদ্ধ চলছিল। তারা পরস্পরকে নোংরা ভাষায় ব্যক্তিগত আক্রমণ করতেও ছাড়েননি।

দক্ষিণ কোরিয়ার পায়েঅনচাংয়ে অনুষ্ঠেয় শীতকালীন অলিম্পিকে প্রতিনিধি দল পাঠানোর ঘোষণাও কিমের নমনীয় মনোভাবের আরো এক বহিঃপ্রকাশ। এর আগে দক্ষিণ কোরিয়া বলেছিল, উত্তর কোরিয়া প্রতিনিধি দল পাঠালে তাদের স্বাগত জানানো হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪০০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০১, ২০১৮
জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।