ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৫ চৈত্র ১৪৩১, ২০ মার্চ ২০২৫, ১৯ রমজান ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ ‘গণহত্যা ছাড়া কিছু নয়’: অ্যাকশন ফর হিউম্যানিটি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৯ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০২৫
গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ ‘গণহত্যা ছাড়া কিছু নয়’: অ্যাকশন ফর হিউম্যানিটি

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নতুন করে ইসরায়েলি বাহিনীর নৃশংস হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪০৪ জনে দাঁড়িয়েছে। চলমান যুদ্ধবিরতি আকস্মিক এক তরফাভাবে ভঙ্গ করে দখলদার বাহিনীর এই নজিরবিহীন হামলায় বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় চলছে।

এর মধ্যেই মানবাধিকার সংগঠন অ্যাকশন ফর হিউম্যানিটি বলেছে, গাজায় ইসরায়েলের যুদ্ধ ‘গণহত্যা ছাড়া কিছু নয়’। সংগঠনটি গাজায় হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তীব্র নিন্দা প্রকাশ করেছে।

সংগঠনটি বিবৃতি প্রকাশ করে এও বলেছে, তাদের (ইসরায়েল) কর্মকাণ্ড নিঃসন্দেহে স্পষ্ট করে দিয়েছে আন্তর্জাতিক আইনের কাঠামোর মধ্যে থেকে কাজ করা বা তাদের নিজেদের জনগণ অথবা ফিলিস্তিনের জন্য ন্যায্য ও স্থায়ী শান্তি নিশ্চিত করার কোনো নেতানিয়াহু সরকারের নেই।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠনটি দাবি করেছে, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কাইর স্টারমারের সরকার ইসরায়েলি নৃশংসতা ও চলমান গণহত্যার বিরুদ্ধে অবিলম্বে সাহসী ও দ্ব্যর্থহীন অবস্থান নেওয়ার পক্ষে।

অ্যাকশন ফর হিউম্যানিটি বিবৃতিতে আরও বলেছে, আমরা আরও ১৮ মাস নীরবতা ও যুদ্ধাপরাধে জড়িত থাকার ভার বহন করতে পারি না।

যুদ্ধবিরতির মাঝেই গাজায় চালানো ইসরায়েলি বর্বরতা নিয়ে বিশ্বজুড়ে নিন্দার ঝড় বইলেও বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু প্রশাসন কাউকেই পরোয়া করছেন না। নেতানিয়াহু বলেছেন, যুদ্ধবিরতি প্রসারিত করার আলোচনায় অগ্রগতি না হওয়ায় তিনি এই সামরিক অভিযান চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

হামাস বলেছে, ইসরায়েল গাজার অবরুদ্ধ ও নিরস্ত্র সাধারণ মানুষের ওপর বিশ্বাসঘাতকতামূলক হামলা চালিয়ে যুদ্ধবিরতির শর্ত ভেঙেছে। ফিলিস্তিনি ইসলামিক জিহাদও একই অভিযোগ করে বলেছে, ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবেই ১৯ জানুয়ারি থেকে কার্যকর থাকা যুদ্ধবিরতির চুক্তিটি ভেঙে দিয়েছে।

ইসরায়েলের প্রতিনিয়ত হামলা-হত্যায় গাজার পরিস্থিতি একেবারেই ন্যুজ। এই অবস্থায় সেখানকার সব ধরনের খাদ্য, পানীয় ও চিকিৎসা উপকরণ শেষ হয়ে যাচ্ছে। ফলে আহত মানুষকে বাঁচিয়ে রাখা কষ্টসাধ্য হয়ে যাচ্ছে গাজার চিকিৎসকদের জন্য। গাজার ‘মুখ্য’ হাসপাতাল আল-শিফার পরিচালক মুহাম্মদ আবু সালমিয়া জানিয়েছেন, ইসরায়েলি হামলায় আহতের সংখ্যা এত বেশি, তার নড়বড়ে হাসপাতালে সবাইকে সেবা দেওয়া সম্ভব হবে না।

মুহাম্মদ আবু সালমিয়া বলেন, আমাদের সব ধরনের উপকরণ, বিশেষ করে চিকিৎসা সরঞ্জাম নেই। ফলে প্রতি মিনিটে, একজন আহত ব্যক্তি মারা যাচ্ছে। গাজা শহর ও উত্তর গাজায় মাত্র চারটি নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র ছিল। কিন্তু এখন স্বাস্থ্য ব্যবস্থার মৌলিক সরঞ্জামের ব্যাপক ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের উদ্ধারের জন্য নির্দিষ্ট এলাকাগুলোয় পৌঁছানোও ‘অত্যন্ত কঠিন’ ছিল।

ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হামলার পর ধ্বংসস্তূপগুলোর নিচে এখনো বহু মানুষ আটকা পড়ে আছেন। তাই মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। স্থানীয় ব্লাড ব্যাংকগুলোয় প্রয়োজনীয় মজুদ শেষ। একটি বিবৃতি জারির মাধ্যমে জরুরি ভিত্তিতে নাগরিকদের রক্তদানে আহ্বান জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।

বাংলাদেশ সময়: ২১১৭ ঘণ্টা, মার্চ ১৮, ২০২৫
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।