ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ভারত

মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কলকাতায় বিশাল জমায়েত

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৭
মিয়ানমারের বিরুদ্ধে কলকাতায় বিশাল জমায়েত কলকাতায় রোহিঙ্গাদের জন্য মিছিল। ছবি: বাংলানিউজ

কলকাতা: মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের নির্বিচার হত্যার প্রতিবাদে সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) কলকাতায় পথে নেমেছিলো ১২টি মুসলিম সংগঠন। যার নেতৃত্বে ছিলো পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশন। বিক্ষোভ মিছিলে মিয়ানমার সরকার ও অং সান সু চি-র বিরুদ্ধে এবং রোহিঙ্গা হত্যা বন্ধে আন্তর্জাতিক মহলের হস্তক্ষেপের দাবিতে স্লোগান দেওয়া হয়।

পশ্চিমবঙ্গ সংখ্যালঘু যুব ফেডারেশনের সম্পাদক মুহাম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, বিভিন্ন সংগঠনসহ লক্ষাধিক মানুষের জমায়েত হয়েছে। আমরা পার্ক সার্কাস থেকে মিছিল করে মিয়ানমারের দূতাবাস ঘেরাও করবো।

যে ভাবে নির্বিচারে মানুষ হত্যায় মেতেছে মিয়ানমার, তাতে তীব্র প্রতিবাদ জানাই। আজ তো শান্তির মাধ্যমে জমায়েত করে দূতাবাস ঘেরাও করছি। মিয়ানমার সরকার মানুষকে মানুষের মর্যাদা না দিলে আগামী দিনে আরও বড়ো আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।

বিক্ষোভ মিছিলের অন্যান্য বক্তা ও জমায়েত হওয়া মানুষদের ক্ষোভ দেখা গেছে ভারতের সরকারের বিরুদ্ধেও। বিশেষ করে দেশের প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে। রোহিঙ্গাদের যখন মেরে তাড়ানো হচ্ছে, ঠিক সেই সময় মিয়ানমার সফরে যান মোদি। তিনি সেখানে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে কড়া বক্তব্য রাখবেন এমনটাই আশা ছিলো। তা তিনি একাবারের জন্যও করেননি।

কলকাতায় রোহিঙ্গাদের জন্য মিছিল।  ছবি: বাংলানিউজবিক্ষোভকারীরা মিয়ানমারের সর্বোচ্চ নেত্রী অং সান সু চি-র বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিচ্ছিলেন। তাদের স্লোগানে এটাও ছিল যে, বিশ্বশান্তির নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্ত একজন কী করে রোহিঙ্গাদের এই নির্বিচার হত্যা হতে দিচ্ছেন নিজের দেশে!

স্টুডেন্টস ইসলামিক অর্গানাইজেশনসহ বারোটি মুসলিম ও মানবাধিকার সংগঠন সোমবারের বিক্ষোভে সামিল হয়। মিছিলের স্লোগান-পোস্টারে সংগঠনগুলোর ক্ষোভ যে মূলত আং সান সু চি এবং মিয়ানমার সরকারের বিরুদ্ধে, সেটা স্পষ্টতই দেখা যাচ্ছিল।

বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা বলছেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে ভারতের ভূমিকা নিয়ে তারা হতাশা ব্যক্ত করেন। "মানুষ মারার কারবার চলছে সেখানে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী সেদেশে গেলেন, ডিনার করলেন, নানা চুক্তি সই করলেন, অথচ তিনি ওই ঘটনার কোনও প্রতিবাদ করলেন না! আমরা সবাই আশা করেছিলাম তিনি হয়তো কিছু বলবেন। হতাশ হয়েছি।

কলকাতায় রোহিঙ্গাদের জন্য মিছিল।  ছবি: বাংলানিউজআং সান সু চি যখন দীর্ঘদিন গৃহবন্দি ছিলেন, সেই সময়ে তার মুক্তির দাবিতে সারা পৃথিবীর সঙ্গে কলকাতাতেও বহু মিছিল - সমাবেশ হয়েছে। তার অনেকগুলোতেই হাজির ছিলেন মানবাধিকার কর্মী ছোটন দাস। তিনি বলছিলেন, যার মুক্তির দাবিতে ওইসব মিছিল মিটিংয় করেছিলাম, রোহিঙ্গা ইস্যুতে সেই নেত্রীরই ভূমিকা দেখে এখন লজ্জা হয়।

দুপুর একটা নাগাদ দক্ষিণ কলকাতায় পার্ক সার্কাস ময়দান থেকে মিছিল শুরু হয়। সংগঠনের তরফ থেকে জমায়েত লক্ষাধিক বললেও পুলিশ জানায় ৪০ হাজারের মত লোক হয়েছে। মিছিল পার্ক সার্কাস ময়দান থেকে শুরু হয়ে  মিয়ানমারের উপদূতাবাসের সামনে জড়ো হওয়া কথা থাকলে, পরে কলকাতা পুলিশ মিছিলের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। প্রায় পাঁচ কিলোমিটার হেঁটে মিছিল শেষ হয় ধর্মতলার রানি রাসমনি রোডে। সেখান থেকে কামরুজ্জামান সহ দশ জন পুলিশের গাড়ি করে  মিয়ানমারের উপদূতাবাসে স্মারক লিপি জমা দেয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৫০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৭
জেডএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।