ঢাকা, রবিবার, ১ পৌষ ১৪৩১, ১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ভারত

পশ্চিমবঙ্গের একই জেলায় ‘বাবরি মসজিদ’ ও ‘রাম মন্দির’ নির্মাণের ঘোষণা তৃণমূল-বিজেপির

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০২৪
পশ্চিমবঙ্গের একই জেলায় ‘বাবরি মসজিদ’ ও ‘রাম মন্দির’ নির্মাণের ঘোষণা তৃণমূল-বিজেপির

পশ্চিমবঙ্গে ‘বাবরি মসজিদ’ নির্মাণ করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর। মুর্শিদাবাদ জেলার বেলডাঙ্গায় বাবরি মসজিদের আদলে একটি মসজিদ নির্মাণের প্রস্তাব দেন তিনি।

 

তার এই প্রস্তাবনা নিয়ে যখন পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে জোর আলোচনা চলছে তখনই এক ঘোষণা দিয়ে চমকে দিল ভারতের শাসকদল বিজেপি।

এবার বিজেপি ঘোষণা করল- তারা পশ্চিমবঙ্গে রাম মন্দির নির্মাণ করবে। মুর্শিদাবাদ ইউনিট বহরমপুরে একটি রাম মন্দির নির্মাণের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে দলটি।

হিন্দুস্তান টাইমসে প্রকাশিত প্রতিবেদনে প্রকাশ, শুক্রবার বিজেপির পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়- অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে ২০২৫ সালের ২২ জানুয়ারি পশ্চিমবঙ্গে রাম মন্দির নির্মাণ শুরু হবে।

তবে কি হিন্দু ভোটারদের পক্ষে নিতে তৃণমূলের কংগ্রেসের প্রস্তাবনার পর এ ঘোষণা দিল বিজেপি? 

রাম মন্দির নির্মাণের বিজেপির পাল্টা প্রস্তাবকে মুর্শিদাবাদে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে তাদের ভোট ব্যাংক সমৃদ্ধ করার কৌশলগত পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে, যেখানে সংখ্যালঘুরা জনসংখ্যার প্রায় ৭৫ শতাংশ।

বিজেপির এমন ঘোষণার বিষয়ে দলের নেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল বলেছেন, ‘মসজিদ গড়া হবে বলে তার পালটা রাম মন্দির নির্মাণ করা হবে, বিষয়টা এমন হওয়া উচিত নয়। বাবরি মসজিদ নির্মিত হতেই পারে। রাম মন্দিরও তৈরি করা যেতে পারে। ’

বাবরি মসজিদ নির্মাণের ঘোষণা দেওয়া তৃণমূলের কংগ্রেস নেতা হুমায়ুন কবীরের নামে অভিযোগ করেন অগ্নিমিত্রা। বলেন,‘বাবরি মসজিদ বানানের হবে যিনি বলছেন, সেই তিনিই হিন্দুদের গণহত্যা করা হবে এবং ভাগীরথীর পানিতে ভাসিয়ে দেওয়া হবে মন্তব্য করেছিলেন। এমন মন্তব্য করার জন্য তাকে কোনো শোকজ নোটিশ ধরানো হয়নি। ’

শুধু বিধায়ক হুমায়ুন কবীরকে নিয়েই নয় পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধেও সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা সৃষ্টি করার অভিযোগ আনলেন অগ্নিমিত্রা।  

এ বিজেপি নেত্রী বলেন, ‘বাবরি মসজিদ নির্মাণের এই ঘোষণার আড়ালে আসলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রয়েছেন। তিনি তার ভোট ব্যাংক অক্ষুণ্ন রাখাতে আরও একটা বাংলাদেশ তৈরি করতে চাইছেন। তবে রাম মন্দির নির্মাণ করা হবে। আমরা অযোধ্যায় রাম মন্দির নির্মাণের বর্ষপূর্তি পালন করব। বহরপুরে মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে। ’

বিজেপির বহরমপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি শাখারভ সরকার সাংবাদিকদের বলেছেন, আমরা ইতোমধ্যেই বহরমপুর এলাকায় একটি জমি চিহ্নিত করেছি এবং অযোধ্যায় মন্দিরের নকশার ওপর ভিত্তি করে রাম মন্দির নির্মাণের কাজ শিগগিরই শুরু হবে। প্রকল্পটির আনুমানিক ব্যয় ১০ কোটি টাকা।

এর আগে, পশ্চিমবঙ্গে বাবরি মসজিদ নির্মাণ প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতা হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘বাবরি মসজিদ মুসলিমদের কাছে অত্যন্ত আবেগের একটি বিষয়। আমরা সবাই জানি- ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংস করা হয়েছিল। ৩০ বছর পেরিয়ে গেছে। কিন্তু, এখনো বাবরি মসজিদ পুনরায় নির্মাণ করা হল না। ’ 

তিনি বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গে বিশেষ করে মুর্শিদাবাদে একটি নতুন বাবরি মসজিদ গড়া নিয়ে অনেকে বলছেন। এতে নাকি মানুষকে উত্তেজিত করা হবে। কিন্তু এমন কোনো ব্যাপার নয়। ওখানে কোনো সমস্যা নেই। এট সিদ্ধান্ত এই অঞ্চলের উল্লেখযোগ্য সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর অনুভূতিকে সম্মান করবে। আর বাবরি মসজিদের জমি নিয়ে যদি প্রশ্ন ওঠে  কোথায় জমি কেনা হবে, তাহলে আমি স্পষ্টভাবে জানাতে চাই - আমরা বাবরি মসজিদ নির্মাণের জন্য রাজ্য সরকারের কাছে কোনো জমি চেয়ে আবেদন করিনি। আমাদের কোনো সরকারি জমি বা কোনো সরকারি অনুদান নেওয়ার পরিকল্পনা নেই। ’

তবে কবিরের মন্তব্য থেকে দূরে সরিয়ে নিয়েছে তার দল তৃণমূল কংগ্রেস। কবিরের বক্তব্য ও প্রস্তাবকে তার ব্যক্তিগত মতামত বলে বর্ণনা করা হয়েছে।

দলের একজন সিনিয়র নেতা বলেছেন, কবীরের এই বক্তব্যের সঙ্গে তৃণমূলের কোনো সম্পর্ক নেই।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০২৪
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।