ঢাকা, শনিবার, ৬ পৌষ ১৪৩১, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ভারত

ভারতে কমেছে বাংলাদেশি যাত্রী, প্রভাব পড়েছে অর্থনীতিতে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫০ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০২৪
ভারতে কমেছে বাংলাদেশি যাত্রী, প্রভাব পড়েছে অর্থনীতিতে

কলকাতা: বাংলাদেশের পরিস্থিতি উত্তপ্ত থাকায় ভারতের পেট্রাপোল স্থলবন্দর সীমান্ত দিয়ে যাতায়াতকারী যাত্রীর সংখ্যা এক ধাক্কায় অনেকটাই কমে গিয়েছে। ফলে পেট্রাপোল সীমান্ত কেন্দ্রিক অর্থনীতির ওপর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে।

প্রভাব পড়েছে কলকাতার নিউমার্কেট সংলগ্ন মারক্যুইস্ট্রিটেও।

বাংলাদেশের বেনাপোল বন্দর সীমান্ত দিয়ে নিয়মিত ভারতের পেট্রাপোল সীমান্তে প্রবেশ করেন বাংলাদেশিরা। একইভাবে ভারতের পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে বেনাপোল বন্দরে যাতায়াত নিত্যদিন লেগে থাকে।  

কিন্তু বাংলাদেশের উদ্ভূত পরিস্থিতিতে কারণে বর্তমানে যাত্রী সংখ্যা প্রায় ৭০ শতাংশ কমেছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।

বুধবার (৩১ জুলাই) পেট্রাপোলের একটি মুদ্রা বিনিময় সংস্থার কর্মকর্তা মানবেন্দ্র ঘোষ বলেছেন, বাংলাদেশ থেকে আসা যাত্রীর সংখ্যা অনেকটাই কমে যাওয়ায় পেট্রাপোল বন্দরে মুদ্রা বিনিময় কেন্দ্র, পেট্রাপোল-কলকাতা বাস পরিবহন এবং এবং অন্যান্য পরিবহন সংস্থা, স্থানীয় ব্যবসায়ীরা ব্যাপক অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়েছে। পেট্রাপোল বন্দর থেকে বনগাঁ রেল স্টেশন পর্যন্ত যেসব সিএনজি চলাচল করতো তারাও বিপর্যস্ত বাংলাদেশি যাত্রীর অভাবে। স্থানীয় এসব ব্যবসায়ীরা মূলত বাংলাদেশি যাত্রীদের উপরেই নির্ভরশীল।

তথ্য মতে, পেট্রাপোল-বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে গড়ে তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার বাংলাদেশি যাতায়াত করতো। বর্তমানের তা নেমে এসেছে ৫০০ এর নিচে। নামমাত্র যাতায়ত করছেন মেডিকেল ভিসা, ব্যবসায়িক ভিসা হোল্ডার বাংলাদেশিরা। ফলে ব্যবসায়িকভাবে জীবিকায় টান পড়েছে স্থানীয় পেট্রাপোলবাসীর মধ্যে।

তার ওপরে রুপির বিপরীতে পড়েছে টাকার মান। এই মুহূর্তে সীমান্তসহ কলকাতার মুদ্রা বিনিময় দোকানগুলো ১০০ টাকার মান ৭১ রুপিতে ঠেকেছে। ব্যবসায়ীরা জানাচ্ছেন ১৭ জুলাই পর্য়ন্ত রুপির বিপরীতে টাকার মান ছিল ৭৪ দশমিক ২০ পয়সা। ফলে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে এই মুহূর্তে ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশিরাও। বর্তমান ডলার চলছে ৮৮ রুপি।

মানবেন্দ্র জানান, এক সপ্তাহ আগে তো বর্ডার প্রায় শূন্য ছিল। বাংলাদেশ কিছুটা শান্ত হতে বর্তমানে কিছু মানুষের ভারতে আসা শুরু করেছেন।

সাধারণ নিয়মে পেট্রাপোল থেকে কলকাতায় যাত্রী পরিবহন চলাচল করে কমপক্ষে ১২ থেকে ১৩টা বাস। যারা সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত বাংলাদেশি যাত্রী নিয়ে কলকাতায় আসা যাওয়া করত। সোহাগ পরিবহন, গ্রিন লাইন পরিবহন, দেশ ট্রাভেলস, রয়্যাল কোচ, সেন্টমার্টিন ইত্যাদি বাস পরিবহন সংস্থাগুলো বর্তমানে যাত্রীর অভাবে ভুগছে। বর্তমান পরিস্থিতিতে ওই সময়ের মধ্যে সব মিলিয়ে ৫-৬টি বাস যাতায়াত করছে।

প্রভাব পড়েছে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যেও। ভারতের সুস্বাদু আপেল, আঙুর এবং অন্যান্য ফল বাংলাদেশিদের কাছে খুব প্রিয়। পেট্রাপোল থেকে দেশে ফেরার সময় অনেকেই তা কিনে নিয়ে যান। পেট্রাপোল সীমান্তে লাগোয়া রয়েছে বেশ কিছু ফলের দোকান। তাদেরও বিক্রি কমে গেছে অনেকটাই। যাত্রীদের যাতায়াত কমে যাওয়ায় ফল ব্যবসায়ীদের মধ্যে প্রভাব পড়েছে। তারা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।

এই পরিস্থিতিতে কলকাতার নিউমার্কেট সংলগ্ন মারক্যুইস্ট্রিটের হোটেল ব্যবসায়ীসহ নিউমার্কেটের বেচাকেনা ব্যতিক্রম নয়। তারাও ভুগছে বাংলাদেশি ক্রেতার অভাবে। শহরে হোটেলগুলো এখন জনমানবহীন। মারক্যুইস্ট্রিটের ব্যবসায়ীদের অভিমত, প্রতিদিনের দোকান ভাড়া তোলা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। ফলে সকলেরই এখন একটাই প্রার্থনা। বাংলাদেশের সমস্যা তাড়াতাড়ি মিটে যাক। স্বাভাবিক হোক সেখানকার জীবনযাপন। তবেই সচল হবে বর্ডার।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৫ ঘণ্টা, ৩১ জুলাই, ২০২৪
ভিএস/এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।