ঢাকা, শনিবার, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফুটবল

‘ভাগ্যের’ গোলে ফাইনালে মালদ্বীপের টিসি স্পোর্টস

তাসনীম হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৭
‘ভাগ্যের’ গোলে ফাইনালে মালদ্বীপের টিসি স্পোর্টস ‘ভাগ্যের’ গোলে ফাইনালে মালদ্বীপের টিসি স্পোর্টস। ছবি: উজ্জ্বল ধর, বাংলানিউজ

এম এ আজিজ স্টেডিয়াম থেকে: দ্বিতীয়ার্ধের ৩৫মিনিটের খেলা তখন শেষ। মালদ্বীপের টিসি স্পোর্টস ও নেপালের মানাং মারসিয়াংদি ক্লাবের খেলা তখনও গোলশূন্যভাবে এগিয়ে চলছে। সবাই ধরে নিয়েছিল খেলা বুঝি অতিরিক্ত সময়ে গড়াচ্ছে। তাই বাড়তি সময় খেলা দেখার জন্য সবাই যখন আড়মোড়া ভেঙে বসছিল তখনই টিসি স্পোর্টসের আচমকা গোল। এবং এই এক গোলেই ফাইনালে পৌঁছে গেল নিজাম মোহামেদের দল।

এবার গোলটার বর্ণনা দেওয়া যাক। ৮২ মিনিটে ডানপ্রান্ত থেকে আজম মোহাম্মদের ক্রস।

বলটি মানাং এর গোলরক্ষক দিনেশ থাপার হাতে চলেও এসেছিল। কিন্তু বলটি গ্লাভসবন্দি না করে ঘুষি দিয়ে ক্লিয়ার করতে গিয়েই যাবতীয় বিপত্তি ঘটল। দিনেশ বলটি হালকাভাবে ঘুষি দিতেই বলটি বুকে লাগে আগুয়ান টিসি স্পোর্টসের অধিনায়ক নাইফু আলি। নাইফু আলির বুকে লেগে বলটি স্থান করে নেয় জালে।

সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টা থেকে শুরু হওয়া শেখ কামাল ক্লাব কাপ টুর্নামেন্টের প্রথম সেমিফাইনালে শুরু থেকেই সমানে সমানে খেলতে থাকে উভয় দল। তিন মিনিটেই এগিয়ে যেতে পারতো নেপালি ক্লাবটি। স্যামসনের বাড়ানো বল ওলাডিপো পা ছোঁয়াতে ব্যর্থ হলে সেখানে টিসি স্পোর্টসের রক্ষণভাগের খেলোয়াড়রা বলটি কর্নারের বিনিময়ে বিপদমুক্ত করেন। আবার ৮মিনিটে টিসি স্পোর্টসের এজিকিয়েলের জোরালো শট ক্রসবারের উপর দিয়ে চলে যায়। ১৮মিনিটে ডি বক্সের একটু বাইরে থেকে ওলাডিপোর শট বাম বার ঘেঁষে বাইরে চলে যায়।

তবে ২২ মিনিটে বড় সুযোগ পেয়েছিল মালদ্বীপের ক্লাবটি। দলীয় অধিনায়ক নাইফু আলমের বাড়ানো বলে ছোট বক্স থেকে ইব্রাহিম মাহমুদি বাইরে না মারলে তখনি ১ গোলে এগিয়ে যেতে পারতো টিসি স্পোর্টস। প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমেও বড় সুযোগ পেয়েছিল মালদ্বীপের ক্লাবটি। এবারও ইব্রাহিম মাহমুদির শট সাইট বার ঘেঁষে বাইরে মাঠের বাইরে চলে যায়।

প্রথমার্ধ গোলশূন্যভাবে শেষ হয়। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকেই মাঠে আধিপত্য বিস্তার করতে থাকে মানাং মারসিয়াংদি। ৫৫ মিনিটে মানাং এর অধিনায়ক অনিল গুরুংয়ের শট থেকে রোহিত চাঁদের মাপা হেড গোলকিপার দুর্দান্তভাবে সেভ করেন। ৭৭ মিনিটেও গোল পরিশোধের সুবর্ণ সুযোগ এসেছিল নেপালী ক্লাবটির সামনে। স্যাসসনের ক্রস থেকে ওলাডিপোর হেড ক্রসবারের উপর দিয়ে বাইরে চলে যায়। এর পর ৮২মিনিটে মালদ্বীপের ক্লাবটির সেই ভাগ্যোর গোল।

একেবারে ইনজুরি টাইমে ওলাডিপো আবারও মিস না করায় দুর্ভাগ্যভাবে হেরে মাঠ ছাড়ে নেপালের মানাং মারসিয়াংদি। ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছেন পুরো ম্যাচে ‍দুর্দান্ত খেলা টিসি স্পোর্টসের গোলরক্ষক লিমবো কিরন কুমার।

খেলা শেষে টিসি স্পোর্টসের কোচ নিজাম মোহামেদ বলেন, ‘খুব সহজ ম্যাচ ছিল না। তবে ম্যাচ শেষে জেতায় খুশি লাগছে। ’‘ভাগ্যের’ গোলে ফাইনালে মালদ্বীপের টিসি স্পোর্টস।   ছবি: উজ্জ্বল ধর, বাংলানিউজ

ওদের দলে আটজন জাতীয় দলের ফুটবলার রয়েছে। সেই দলের বিপক্ষে আমার ছেলেরা দুর্দান্ত খেলে জয় পেয়েছে। এটা খুব বড় জয়। ’-বলেন মালদ্বীপের সাবেক জাতীয় ফুটবলার।

ফাইনালে বিপক্ষ দল হিসেবে নিজস্ব কোন পছন্দও নেই বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। বলেন, ‘যে দলই আসুক। আমরা জেতার জন্যই মাঠে নামবো। ’

অন্যদিকে টুর্নামেন্টের সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নেওয়ায় কিছুটা হতাশ মারসিয়াংদির কোচ চিরিং লোপসাং গুরুং।

তিনি বলেন, ‘আমরা ছেলেরা চেষ্টা করেছে। কিন্তু কয়েকটা সহজ সুযোগ মিস না হলে আমরাও জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারতাম। পাশাপাশি দুর্ভাগ্যভাবে একটা গোল খেয়ে হারতে হলে আমাদের। ’

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৭

টিএইচ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।