ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফুটবল

টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়ার পর জিতল ঢাকা আবাহনী

তাসনীম হাসান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৭
টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়ার পর জিতল ঢাকা আবাহনী টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়ার পর জিতল ঢাকা আবাহনী। ছবি: উজ্জ্বল ধর, বাংলানিউজ

এমএ আজিজ স্টেডিয়াম থেকে: ম্যাচ শুরুর এক ঘণ্টা আগেই কোরিয়ান পোচন ও মালদ্বীপের টিসি স্পোর্টসের ম্যাচটি ড্র হওয়ায় শেখ কামাল ক্লাব কাপ টুর্নামেন্টে ভাগ্য নির্ধারণ হয়ে গিয়েছিল ঢাকা আবাহনীর। তবুও ‘হতাশ না হয়ে’ নিয়মরক্ষার ম্যাচে এফসি আলগাকে হারিয়ে টুর্নামেন্টে নিজেদের শেষ ম্যাচে জয় তুলে নিল প্রিমিয়ার লীগের চ্যাম্পিয়ন দলটি। কিরগিজস্তানের ক্লাব এফসি আলগারও ঘরে ফেরা হচ্ছে শূন্য হাতেই।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাতটায় এমএ আজিজ স্টেডিয়ামে শুরু হওয়া এ ম্যাচে প্রথম থেকেই দুর্দান্ত খেলতে থাকে ঢাকা আবাহনী। আবাহনীর ফুটবলাররা একের পর এক আক্রমণে তটস্থ করে তুলে এফসি আলগার রক্ষণভাগকে।

১৭মিনিটে প্রথম আক্রমণে যায় ঢাকা আবাহনী। ১৭ মিনিটে জোনাথনের ফ্রি কিক ডিবক্সে সিমন মাথা ছোঁয়াতে ব্যর্থ হলে গোল বঞ্চিত হয় আবাহনী। এর পরের মিনিটে আবারও জোনাথন। এবার বামপ্রান্ত থেকে তার মাইনাস দ্রুত পায়ে লাগাতে না পারায় গোলশূন্যই থাকল আবাহনী। পরের মিনিটে আবারও জুয়েল রানার মিস। এবার জোনাথনের ক্রস থেকে বল পেয়ে তা বারের উপর মেরে দেন জুয়েল রানা। ২৩মিনিটে এমেকার শট আলগার জালে বড় ঝড়ালেও তা অফসাইডের অজুহাতে বাতিল করে দেন রেফারি।

তবে গোলের জন্য ঢাকা আবাহনীর বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি। ২৬ মিনিটে জুয়েল রানার ডানপ্রান্ত থেকে আক্রমণ কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন গোলরক্ষক রুসলান। ডানপ্রান্ত থেকে ওয়ালী ফয়সালের দুর্দান্ত কর্নার কিক কিছুটা বাক খেয়ে ঢুঁকে পড়ে জালে। এর মধ্যে দিয়ে ১-০ গোলে এগিয়ে যায় দেশের প্রিমিয়ার ফুটবল লীগের চ্যাম্পিয়ন দলটি।

গোল খেয়ে সমতায় ফেরার জন্য চেষ্টা চালায় টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত জয়বঞ্চিত থাকা এফসি আলগা। আবাহনীর রক্ষণভাগের ভুলে ৩০মিনিটে আরেকটুর জন্য গোল পেয়েও যাচ্ছিল কিরগিজস্থানের ক্লাবটি। আবাহনীর রক্ষণভাগের এক খেলোয়াড় ভুল করে ডিবক্সের মধ্যে বল দিয়ে দেন এফসি আলগার ইলদার আমিরভের নেওয়া শটটি দুর্দান্তভাবে ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক শাহিদুল আলম।

এই একটি সুযোগ ছাড়া প্রথমার্ধে আর কোনো সুযোগই সৃষ্টি করতে পারেনি এফসি আলগা। উল্টো ৪০মিনিটে ডি বক্সের অনেক বাইরে থেকে নেওয়া জোনাথনের সোজাসুজি নেওয়া ফ্রি কিক জায়গা করে নেয় গোলে। এর মধ্যে দিয়ে ২-০ গোলে এগিয়ে থেকে প্রথমার্ধ শেষ করে ঢাকা আবাহনী। টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে পড়ার পর জিতল ঢাকা আবাহনী।  ছবি: উজ্জ্বল ধর, বাংলানিউজ

তবে প্রথমার্ধের দুর্দান্ত ফুটবল দ্বিতীয়ার্ধে ধরে রাখতে পারেনি আবাহনী। ৫৩ মিনিটে গোলরক্ষক শাহিদুল ইসলাম তিনবার বিপদমুক্ত না করলে তখনই এগিয়ে যেতে পারত কিরগিজ ক্লাবটির। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর ২৫ মিনিট মাঠে প্রাধান্য বিস্তার করতে থাকে এফসি আলগার ফুটবলাররা। আবাহনীর ফুটবলারদের এ সময় খুব ক্লান্ত দেখা গেছে। ৭৫ মিনিটে মধ্যমাঠ থেকে ডিবক্সের উদ্দেশ্যে বাড়ানো বল ক্লিয়ার করতে গিয়ে ভুল করে বসেন আবাহনীর রক্ষণভাগের খেলোয়াড় ইয়াছিন খান। বল তার হাতে স্পর্শ করে। ফলে পেনাল্টির নির্দেশ দেন রেফারি। সেই পেনাল্টি থেকে ব্যবধান কমান এফসি আলগার রক্ষণভাগের খেলোয়াড় হোসনভ। গোল ব্যবধান কমাতে পেরে আরও উজ্জেবিত হয়ে একের পর এক আক্রমণ করতে থাকেন এফসি আলগার ফুটবলাররা। তবে এর মধ্যেই ম্যাচের একেবারে শেষের দিকে ৮৮মিনিটে গোল ব্যবধান বাড়ার বড় সুযোগ পান আবাহনীর বদলী খেলোয়াড় মামুন খান। জোনাথনের বাড়ানো শটটিতে পা লাগাতে গিয়ে শিশুসুলভ ভুল করে বসেন তিনি। গোলপোস্টের বদলে তিনি বল মেরে দেন বারের উপরে।

এরপর উভয় পক্ষ আর তেমন বড় আক্রমণ করতে না পারায় ২-১ গোলে খেলা শেষ হয়।

ম্যাচ শেষে ঢাকা আবাহনীর কোচ ড্রাগন মমিচ বলেন, কয়েকদিনের মধ্যে তিনটি ম্যাচ খেলা খুব কঠিন। তাই আমার ছেলেরা খুবই ক্লান্ত ছিল। তবুও তারা নিয়মরক্ষার ম্যাচ হলেও জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পেরেছে। ভবিষ্যতে এগিয়ে যেতে এটি বড় কাজ দেবে। ’

অন্যদিকে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেওয়া এফসি আলগার কোচ আলেকজান্ডারের কণ্ঠেও একই সুর। তিনিও বলেন, কয়েক দিনের মধ্যেই তিনটি ম্যাচ খেলায় ছেলেদের ফিটনেস ভালোভাবে ধরে রাখতে পারেনি। টুর্নামেন্ট থেকে আমরা কিছু না পেলেও নতুন অভিজ্ঞতা নিয়ে বাড়ি ফিরতে পারছি বলে মনে করছি আমি। ’

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৭

টিএইচ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।