ঢাকা, রবিবার, ১০ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৩ শাবান ১৪৪৬

ফিচার

নির্মল পরিবেশে আর আনন্দযজ্ঞে উদযাপিত চৈত্র সংক্রান্তি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৩৩১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৪, ২০১৯
নির্মল পরিবেশে আর আনন্দযজ্ঞে উদযাপিত চৈত্র সংক্রান্তি চৈত্র সংক্রান্তি উদযাপিত

ঢাকা: ঝড়ো হাওয়া আর ভরা দিয়ে বিকেল শেষ করে নির্মল এক পরিবেশের মধ্য দিয়েই শেষ হলো চৈত্রের শেষ দিনটি। এদিনের সূর্যটি অস্তমিত হওয়ার সাথে সাথেই পুরনো বছরকে বিদায় জানিয়েছে রাজধানীসহ সারাদেশ।

শনিবার (১৩ এপ্রিল) নৃত্য, সঙ্গীত, আবৃত্তি, লাঠিখেলা, লোকগান, লোকজ মেলা, সরোদের পরিবেশনাসহ নানান আয়োজনে চৈত্র সংক্রান্তি পালনের মধ্য দিয়ে পুরনো বছরকে বিদায় জানিয়েছে বাংলা ভাষাভাষী মানুষগুলো।

সন্ধ্যায় চৈত্র সংক্রান্তি উদযাপনে মনোমুগ্ধকর লাঠিখেলার আয়োজন করে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি।

একাডেমির উন্মুক্ত স্থানে হওয়ার কথা থাকলেও বৈরী আবহাওয়ায় আয়োজনটি স্থানান্তরিত হয় সঙ্গীত ও নৃত্যকলা মিলনায়তনের সামনে। লাঠিখেলার মনমাতানো নানা কসরত প্রদর্শন করে নড়াইলের বীরশেষ্ঠ নূর মোহাম্মদ লাঠিখেলা দল। লাঠিয়ালদের হাতের নৈপুণ্যে ঘুর্ণিপাকের মতো ঘুরতে থাকে লাঠি। প্রতিপক্ষকে আক্রমণের সঙ্গে উপস্থাপিত হয় আত্মরক্ষার নৈপুণ্যময় কৌশল।

চৈত্র সংক্রান্তি উদযাপিত

চৈত্র সংক্রান্তি উদযাপিত

বরাবরেরর মতো শিল্পকলা একাডেমিতে চৈত্র সংক্রান্তি উদ্যাপন করেছে বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশান। সন্ধ্যায় একাডেমির পরীক্ষণ থিয়েটার হলে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। ঢাক-ঢোলের বাদনের সাথে বাঁশির সুরের উৎসবমুখরতায় শুরু হয় অনুষ্ঠান। সেই সুরের সঙ্গী হয়ে অতিথিরা প্রবেশ করেন মিলনায়তনে। এরপর সকলে মিলে অংশ নেন মঙ্গলপ্রদীপ প্রজ্জ্বলনে। প্রদীপ প্রজ্জ্বলন শেষে সবার মাঝে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয়া হয় মুড়ি-মুড়কির আতিথিয়তায়।  

অনুষ্ঠানে সরোদ বাজিয়ে শোনান ওস্তাদ শাহাদাত হোসেন খান। পালাগান পরিবেশন করেন সাইদুল ইসলাম বয়াতি।  ছিল সরোদের সাথে কবিতায় সজ্জিত সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। উপস্থাপিত হয় শারীরিক কসরতের নয়নজুড়ানো অ্যাক্রেবেটিক প্রদর্শনী। সব শেষে পুরনো বছরকে বিদায় জানিয়ে গানের সুরে স্বাগত জানানো নতুন বাংলা বছরকে। সম্মেলিত কণ্ঠে পরিবেশিত হয় ‘এসো হে বৈশাখ’ শিরোনামের নববর্ষের আবাহনী সঙ্গীত।

লোকসঙ্গীত ও কারুশিল্প মেলার মধ্য দিয়ে বঙ্গাব্দ ১৪২৫ কে বিদায় জানিয়েছে জাতীয় জাদুঘরও। বিকেলে জাদুঘরের সামনের চত্বরে অস্থায়ী মঞ্চে লোকসঙ্গীত পরিবেশিত হয়। আর ভবনের দক্ষিণ প্রাঙ্গণে বসে কারুশিল্প মেলা। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব ড. আবু হেনা মোস্তফা কামাল। সভাপতিত্ব করেন জাদুঘরের বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সভাপতি শিল্পী হাশেম খান।

এদিকে সন্ধ্যায় চ্যানেল আই ও সঙ্গীত সংগঠন সুরের ধারার যৌথ আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয় ‘লোক সুরে বাংলা বাংলা’ শিরোনামে চৈত্র সংক্রান্তি ১৪২৫। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত এ আয়োজনের উদ্বোধনীতে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক আনিসুজ্জামান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আখতারুজ্জামান, সঙ্গীত শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা প্রমুখ।  

সন্ধ্যা ছয়টা থেকে গভীর রাত পর্যন্ত পরিবেশিত হয় ভাটিয়ালি, ভাওয়াইয়া, মুর্শিদী, মারফতি, রবীন্দ্র, নজরুল, লোকজ ধারার গানসহ  পঞ্চকবির গান। অনুষ্ঠানটির নেতৃত্ব দেন সুরের ধারার চেয়ারম্যান রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা।

এছাড়া রাজধানীর পিপলস ইউনিভার্সিটি শোভাযাত্রা, লোকজ মেলা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে চৈত্র সংক্রান্তি উদযাপন করেছে। বেলুন উড়ানোর মধ্যদিয়ে সকালে শুরু হয় দিনব্যাপী এই আয়োজন। এরপর বর্ণাঢ্য শোভা যাত্রা বের করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা নানা রঙের বৈশাখী পোশাক পরে তাদের ষ্টল গুলোতে নানা ধরনের খাদ্য ও বিভিন্ন পণ্যের পশরা সাজিয়ে বসেন। সকাল থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী ও শিক্ষকরা আবৃত্তি, গানে মেতে ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১১৩০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০১৯
এইচএমএস/এসআইএস

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।