ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ফিচার

আমাজনে মিলল রহস্যঘেরা জনগোষ্ঠী!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০২৪
আমাজনে মিলল রহস্যঘেরা জনগোষ্ঠী!

বিশ্বের সবচাইতে বড় গহীন বন আমাজন। অজানা রহস্য, বিভিন্ন জীব বৈচিত্র্য ও গাছপালা দিয়ে ভরা এ জঙ্গল নানা কারণে প্রতিনিয়ত খবরের শিরোনাম হয়।

এবার লাতিন আমেরিকার এ ঘন জঙ্গলে খোঁজ মিলেছে অন্যরকম এ জনগোষ্ঠীর। নাম মাসাকো।

আধুনিক বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন এ জনগোষ্ঠীর নাম মূলত অঞ্চলটিতে বয়ে যাওয়া একটি নদীর নামে। মাসাকো জনগোষ্ঠীর ভাষা, সামাজিকতা ও বিশ্বাস—সবকিছুই রহস্যের জালে মোড়া!

ব্রাজিল সরকারের বসানো স্বয়ংক্রিয় ক্যামেরায় ধরা পড়েছে মাসাকো জনগোষ্ঠীর কিছু ছবি। তাতে প্রথমবারের মতো জানা গেছে জনগোষ্ঠীটি সম্পর্কে কিছু তথ্য। ছবিগুলো বিচার–বিশ্লেষণ করে মনে হয়েছে, আমাজনজুড়ে চাষাবাদ, কাঠ ব্যবসা, খনি কার্যক্রম ও মাদক চোরাচালানকারীদের ব্যাপক দৌরাত্ম্যের পরও মাসাকোদের সংখ্যা বাড়ছে। দেশটির সরকারি সংস্থা ব্রাজিলিয়ান ন্যাশনাল ইনডিজেনাস পিপলস ফাউন্ডেশন (ফিউনাইয়ের) তথ্য অনুযায়ী, নব্বইয়ের দশকের পর থেকে মাসাকোদের সংখ্যা অন্তত দ্বিগুণ বেড়ে ২০০ থেকে ২৫০–এ দাঁড়িয়েছে।

ব্রাজিল সরকারের স্বয়ংক্রিয় ক্যামেরাগুলো কার্যত জঙ্গলের সুরক্ষার জন্য দশকের পর দশক ধরে কাজ করে যাচ্ছে।

স্যাটেলাইট থেকে ধারণকৃত কিছু ছবি থেকে ফিউনাই কিছু মাসাকো সম্প্রদায় নিয়ে কিছু পর্যবেক্ষণও প্রকাশ করেছে। তা থেকে জানা যায়, মৌসুমভেদে মাসাকোরা তাদের বসতি এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় সরিয়ে নেয়। তির–ধনুক দিয়ে পশু-পাখি শিকার করে খায়। বহিরাগতরা যেন তাদের এলাকায় প্রবেশ না করতে পারে সেজন্য মাটিতে হাজার হাজার ধারালো গজাল পুঁতে রাখে।

আমাজনের গহিনে যেসব আদিবাসী চাষাবাদ ও বসতি স্থাপন করে না, যাযাবর হিসেবে থাকে, তাদের জনসংখ্যাও বাড়তে দেখেছেন বিশেষজ্ঞরা। এমনই এক আদিবাসী জনগোষ্ঠী পাদ্রো নদী অঞ্চলের ‘খাওয়াহিভা’। ব্রাজিলের মাতো গ্রোসে রাজ্যের আমাজন জঙ্গলে তাদের দেখেছেন ফিউনাই’র কর্মকর্তা জইর কনডোর। তিনি বলেন, আমাদের ধারণা, বর্তমানে এই জনগোষ্ঠীতে ৩৫ থেকে ৪০ জন রয়েছে। ১৯৯৯ সালে যখন আমরা কাজ শুরু করেছিলাম, তখন তা ২০ জনের মতো ছিল।

ব্রাজিল, বলিভিয়া, কলম্বিয়াসহ ৯টি দেশের ২১টি আদিবাসী ও নাগরিক সংগঠনের জোট ইন্টারন্যাশনাল ওয়ার্কিং গ্রুপ অব ইনডিজেনাস পিপলস ইন আইসোলেশন অ্যান্ড ইনিশিয়াল কন্ট্রাক্টের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, লাতিন আমেরিকার আমাজন ও গ্রান চাকো অঞ্চলে আনুষ্ঠানিক হিসাবে ৬১টি আদিবাসী গোষ্ঠী রয়েছে। এর বাইরে আরও ১২৮টি জনগোষ্ঠী রয়েছে, যাদের এখনো সরকারিভাবে যাচাই করা হয়নি।

শত শত বছর ধরে আমাজনে আদিবাসীদের ভূখণ্ড দখল করছে আদিবাসী নয়, এমন লোকজন। মানুষের হাতে পরিবেশ ধ্বংস হওয়াও বাড়ছে। এমন বিপর্যয়ের মুখে পড়েও আমাজনজুড়ে জনবিচ্ছিন্ন আদিবাসী জনগোষ্ঠীগুলোর সদস্যসংখ্যা বাড়তে দেখা গেছে। ২০২৩ সালে বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িকী নেচারের তথ্য অনুযায়ী, পেরু ও ভেনিজুয়েলা–সংলগ্ন ব্রাজিল সীমান্তে জনসংখ্যা বাড়ছে। স্যাটেলাইট থেকে ধারণ করা ছবিতে সেখানে বড় এলাকাজুড়ে চাষাবাদের জমি এবং আদিবাসী বসতি দেখা গেছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০২৪
এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।