ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৪ বৈশাখ ১৪৩২, ১৭ এপ্রিল ২০২৫, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৬

পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য

আশ্বিনবৃষ্টির পরশ মধুমঞ্জরিদের গায়ে 

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৮
আশ্বিনবৃষ্টির পরশ মধুমঞ্জরিদের গায়ে  সাদা-লাল রঙে মাখামাখি ‘মধুমঞ্জরি’। ছবি: বাংলানিউজ

মৌলভীবাজার: আকাশে মেঘ সকাল থেকেই। পরক্ষণেই নেমে গেছে গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি। শরৎকালের এমন বৃষ্টি জানান দেয় এ যেন কোনো অপ্রত্যাশিতের আগমন। এমন সিক্ত পরিস্থিতির জন্য যেন প্রস্তুত ছিল না প্রকৃতি। 

আশ্বিনবৃষ্টির ফোটাগুলো বেশ করে গায়ে মাখলো মধুমঞ্জরিরা। দুলে দুলে উঠলো তাদের শরীর।

ফুলের মধুর লোভে ছুটে আসা ভ্রমরকীটগুলো বৃষ্টির ভয়ে ততক্ষণে উধাও। মধুমঞ্জরিদের মতো বৃষ্টির ফোটা গায়ে মাখতে রাজি নয় তারা।

প্রতিদিন সকালে যে টুনটুনিরা (Common Tailorbird) এসে মধুমঞ্জরিদের গান শুনিয়ে যায়। এ আশ্বিনবৃষ্টিতে দেখা নেই তারও। এ গুঁড়িগুঁড়ি বৃষ্টি তার প্রতিও নিষেধজ্ঞা করেছে আরোপ যেন। সাদা-লাল রঙে মাখামাখি ‘মধুমঞ্জরি’।  ছবি: বাংলানিউজ

সাদা-লাল রঙে মাখামাখি ‘মধুমঞ্জরি’। ছবি: বাংলানিউজ

টুনটুনিদের কথা তো বলা হলো, কিন্তু বাদ পড়ে গেল বেগুনিকোমর-মৌটুসিদের (Purple-rumped Sunbird) কথা। সেও টুনটুনি পাখির মতোই মাঝে মাঝে মধুমঞ্জরিদের ভিড়ে এসে মধু খুঁজে বেড়ায়। থোকা থোকা ফুলগুলোর মাঝে সময় কাটিয়ে ডানা মেলে অন্য ফুলের খোঁজে।  

এই ‘মধুমঞ্জরি’ ফুলটিকে ‘মধুমালতী’ নামেও ডাকা হয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এই ফুলটির নামকরণ করেছেন ‘মধুমঞ্জরি লতা’ হিসেবে। এই ইংরেজি নাম Rangoon Creeper এবং বৈজ্ঞানিক নাম Combretum indicum

শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াসমিন মোনালিসা সুইটি বাংলানিউজকে বলেন, আসলে এই ফুলটির নাম ‘মধুমঞ্জরি’। এটি সুগন্ধি জাতীয় ফুল। তবে এই ফুলটিকে অনেকেই মাধবীলতা হিসেবে ভুলভাবে চেনেন। সাদা-লাল রঙে মাখামাখি ‘মধুমঞ্জরি’।  ছবি: বাংলানিউজ

সাদা-লাল রঙে মাখামাখি ‘মধুমঞ্জরি’। ছবি: বাংলানিউজ

দুটোর পার্থক্য উল্লেখ করে তিনি বলেন, আসলে এটি মাধবীলতা নয়, মাধবীলতা সম্পূর্ণ অন্য রঙের একটি ফুল। এটি হালকা বাদামি রঙের, আর মধুমঞ্জরি হলো সাদা এবং লাল। প্রথমে সাদা, তারপর গোলাপি, পরে গাঢ় লাল ধারণ করে মধুমঞ্জরি ফুলগুলো।

‘মধুমঞ্জরি’ প্রসঙ্গে তিনি আরো জানান, এটি আসলে গ্রীষ্ম ও বর্ষার ফুল। তবে শরৎকালেও ফুটে থাকতে দেখা যায়। একটি ফুলে পাঁচটি পাপড়ি থাকে। এর রঙ, সুবাস ও সৌন্দর্যের জন্য এটি পুষ্পপ্রেমিদের হৃদয়ে স্থান করে নিয়েছে। এটিকে সারাদেশেই পাওয়া যায়।

দক্ষিণ আফ্রিকা এবং ইন্দো-মালয়েশিয়ায় এই ফুলটির আদি জন্মস্থান বলে জানান শ্রীমঙ্গল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নিলুফার ইয়াসমিন মোনালিসা সুইটি।

বাংলাদেশ সময়: ১১১৮ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৮
বিবিবি/এএটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।