পছন্দের ফল, ফুল, ওষুধি ও ঘর সাজানোর জন্য বিভিন্ন জাতের গাছের চারা কিনতে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রকৃতিপ্রেমী-ক্রেতা ও দর্শনার্থীরা। মেলা উদ্বোধনের প্রথমদিন ২৫ হাজার ৫৬৫টি চারা বিক্রি হয়েছে।

কিনের জন্য চারা গাছ দেখছেন ক্রেতারা। ছবি: শাকিল আহমেদ
রামপুরা থেকে মেলায় পুরো ফ্যামিলি নিয়ে এসেছেন নাজনীন আক্তার নামে এক নারী।কী গাছের চারা কিনতে মেলায় এসেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বাংলানিউজকে জানান, ছাদে লাগানোর জন্য বিভিন্ন জাতের ফলের চারা কিনতে মেলায় এসেছি। ঘর ও বেলকুনি সাজাতে ক্যাকটাস ও অর্কিড কেনার ইচ্ছা আছে। তবে এবার দামটা আমার কাছে একটু বেশি মনে হচ্ছে।
মেলায় ঘুরে দেখা গেছে গাছভর্তি শোভা পাচ্ছে লটকন, আমলকি ও আম। একটা বড় জাতের আমলকির গাছ ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা হাঁকাচ্ছেন বিক্রেতা। লটকনের বড় একটি গাছ ১০ থেকে ১২ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এসব গাছ কিনে ফলের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। তবে মেলায় সূর্যডিম, ইটওয়েন, মহাচনিক, কিং অফ চাপাকাত, জাম্বুরা, আম্রপালি, কিউজাই, ব্ররুনাই বারোমাসি, ফজলি, তোতাপুরি, পালমার আম গাছের চারা পাওয়া যাচ্ছে ৫০ টাকা থেকে ২৫ হাজার টাকায়।
চারা হাতে নার্সারির শ্রমিক। ছবি: শাকিল আহমেদ
ঘর সাজাতে পাতাবাহারের মধ্যে মিলবে বিভিন্ন জাতের ফার্ন, ক্যাটালিয়া, অনসিডিয়াম, পলিসিয়াম, লাল প্যাশন দুল, অগ্নিস্বর, পিচু টিয়া, এয়ার কন্ডিশন, সালেম, প্যাগোডা, ভিক্টোরিয়া ড্রসিনা, ওয়াটার লিলি, এগনোলিমা, ফ্যালাগেন। উৎসবে ঘর সাজাতে ক্রিসমাস-ট্রি, মিরান্ডা, ভূমিলিয়া, বাঁশপাতা, কালারিং কচুর দাম পড়বে ৪০০ টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা।ক্যাকটাসের সেটের দাম পড়বে ১০০০ টাকা। ফার্নের দাম প্রকারভেদে ৭০০ থেকে শুরু হবে ৩০০০টাকা পর্যন্ত। একটা লাকি ব্যাম্বু ৫০০ থেকে আড়াই হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ১০১টি স্টলে ৪০০ থেকে ৫০০ প্রজাতির চারা মিলছে। গাছের চারা নেই যা মেলায় পাওয়া যাবে না।
কাশবন নার্সারির মালিক সফিকুল ইসলাম মুকুল বাংলানিউজকে জানান, ঢাকাবাসী ছাদ ও ঘর সাজাতে ব্যস্ত। এবার ক্রেতাদের গাছ কিনের প্রতি আগ্রহ ভালো। নগরবাসীর রুচি বদলে গেছে। তারা আগে থালা-বাসন দিয়ে ঘর সাজাতেন, এখন গাছের চারা দিয়ে সাজাই।
বাবাকে পছন্দের ক্যাকটাস দেখাচ্ছে মেলায় আগত শিশু। ছবি: শাকিল আহমেদ
উদ্বোধনের পর থেকে বৃক্ষমেলায় ক্রেতার সমাগম ভালো। গতবছর ১৫ লাখ চারা বিক্রি হয়েছিল। এর বিক্রি মূল্য ৬ কোটি টাকা। এবার আরও মানুষের সাড়া পাওয়া যাবে বলে আশা করছে বন অধিদফতর।সহকারী বন সংরক্ষক শ্যামল কুমার ঘোষ বাংলানিউজকে বলেন, দিন দিন গাছের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। প্রথমদিনে ক্রেতাদের ভালো সাড়া পেয়েছি। আশা করছি গতবারের চেয়ে এবার ভালো বিক্রি হবে। ঢাকায় জমি নেই তারপরও ছাদ ও ঘরের সৌন্দর্যে মানুষ চারা কিনছেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রাজধানীর বিআইসিসি কেন্দ্রে বৃক্ষমেলার উদ্বোধন করেন। এ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী ৩০ লাখ বীর শহীদের স্মরণে সারাদেশে একযোগে জেলা ও উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৩০ লাখ বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিরও উদ্বোধন করেন। প্রতিদিন মেলা শুরু সকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত। মেলায় বিনামূল্যে প্রবেশ করা যায়। চলবে ১৭ আগস্ট পর্যন্ত।
বাংলাদেশে সময়: ১৪১৭ ঘণ্টা, জুলাই ২০,২০১৮
এমআইএস/এএটি