বরিশাল: বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার একটি গ্রামে এসে আটকে পড়ে হিমালয়ান একটি শকুন। প্রায় এক মাস পর মুক্ত আকাশে ডানা মেলল শকুনটি।
এর আগে ঢাকা থেকে আসা আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংঘের (আইসিইউএন) কর্মকর্তারা শকুনটির শরীরে স্যাটেলাইট ট্যাগ বসান।
গত ৩০ নভেম্বর শকুনটি দাড়িয়াল গ্রামের বাসিন্দা মুদি দোকানি মো. সোলায়মানের ঘরের চালের ওপর এসে পড়ে। তখন তিনি শকুনটিকে ধরে ঘরের পাশে একটি পরিত্যক্ত দোকান ঘরে আটকে রাখেন।
গ্রামের মুন্সীর হাটের মুদি দোকানি মো. সোলায়মান জানান, গত ৩০ নভেম্বর দুপুর ২টার দিকে শকুনটি চালে এসে পড়ে। চাল থেকে নিচে পড়ার পর শকুনটি উদ্ধার করে পরিত্যক্ত দোকান ঘরে রাখেন তিনি।
এরপর থেকে প্রতিদিন একটি করে ব্রয়লার মুরগি ও পানি খেতে দেন। প্রতিদিনের মুরগি কেনার টাকা বন বিভাগ থেকে দেওয়া হয়েছে। শকুনটি সুস্থ হওয়ার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
বাকেরগঞ্জ উপজেলা বন কর্মকর্তা মনিন্দ্র নাথ হালদার বলেন, আমি খবর পেয়ে বন্যপ্রাণী শাখায় যোগাযোগ করে জানতে পারি, শকুনটি হিমালয়ান গৃধিনী প্রজাতির। বিশেষজ্ঞরা জানান, এটি মারা যাবে না। সুস্থ রয়েছে। সেবা করলে এটি সুস্থ হবে। তখন দোকানি সোলায়মানের হেফাজতে রাখি এবং খাবারের ব্যবস্থা করি।
আইসিইউএনের সিনিয়র প্রোগ্রাম অ্যাসিস্ট্যান্ট কাজী জেনিফার আজমিরি বলেন, বাংলাদেশ কান্ট্রি অফিসে আমরা বন্যপ্রাণী নিয়ে কাজ করি। এটি হিমালয়ান গৃধিনী প্রজাতির। শকুনটির ওজন সাড়ে সাত কেজি। এটি পুরোপুরি অ্যাডাল্ট হয়নি। পুরোপুরি অ্যাডাল্ট শকুন কখনো আসতে দেখিনি।
তিনি জানান, শকুনগুলো হিমালয় থেকে আসে। উত্তরবঙ্গে এই শকুন বেশি পাওয়া যায়। কিন্তু দক্ষিণাঞ্চলে একটি-দুটিও পাওয়া যায় না। শীতের শেষে মার্চ-এপ্রিলে গরম পড়া শুরু করলে ফিরে যায়।
কাজী জেনিফার আজমিরি বলেন, শকুন যখন আকাশে ওড়ে, তখন মরা গরু দেখলে নিচে নেমে আসে। বাংলাদেশে এখন খাবার সংকট রয়েছে। কারণ, এখন গরু মারা গেলে মাটি চাপা দেওয়া হয়। খাবার সংকটের কারণে অনেক দূর থেকে উড়ে এসে খাবার না পেয়ে এরা দুর্বল হয়ে যায়। তখনই মানুষের হাতে ধরা পড়ে। খাবার দিলে সুস্থ হলে বিশ্রাম নিলে ওরা আবার ফিরে যেতে পারে।
তিনি বলেন, এখানে পাওয়া শকুনটি সুস্থ রয়েছে, দুর্বলতা নেই। এ কারণে এর পেছনে একটি স্যাটেলাইট ট্যাগ লাগিয়ে দিয়েছি। এটি দিয়ে শকুনটির গতিবিধিতে নজর রাখা যাবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫০০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০২৪
এমএস/আরএইচ