ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

বিনোদন

‘কারার ওই লৌহ কপাট’ গানের এ আর রহমান ভার্সন সরাতে নোটিশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০২৩
‘কারার ওই লৌহ কপাট’ গানের এ আর রহমান ভার্সন সরাতে নোটিশ

ঢাকা: বলিউডের ‘পিপ্পা’ সিনেমায় এ আর রহমানের রিমেক করা কবি নজরুল ইসলামের বিখ্যাত ‘কারার ওই লৌহ কপাট’ গান  সামাজিকমাধ্যম থেকে অপসারণ বা ব্লক করতে আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।

রোববার (১৯ নভেম্বর) সুপ্রিম কোর্টের ১০ আইনজীবী ও ল’ অ্যান্ড লাইফ ফাউন্ডেশনের পক্ষে ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির ডাক ও ই-মেইলে এ নোটিশ পাঠান।

 

তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়, ও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং বিটিআরসির চেয়ারম্যানকে এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে।  

অবিলম্বে বাংলাদেশে ‘কারার ওই লৌহ কপাট’ গানের এ আর রহমান ভার্সন ফেসবুক, ইউটিউব, নেটফ্লিক্স, অ্যামাজন প্রাইম, ওটিটি প্ল্যার্টফর্ম, ওয়েবসাইট ও অন্যান্য সামাজিক মাধ্যম থেকে অপসারণ বা ব্লক না করলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে নোটিশে উল্লেখ করা হয়েছে।    

১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের কাহিনি অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে বলিউড সিনেমা ‘পিপ্পা’। এতে কবি নজরুল ইসলামের বিখ্যাত ‘কারার ওই লৌহ কপাট’ গানের রিমেক ব্যবহার হয়েছে।

রিমেকটি তৈরি করেছেন উপমহাদেশের বিখ্যাত সংগীতশিল্পী এ আর রহমান। এতে প্রশংসার বদলে বাংলা ভাষাভাষীদের সমালোচনার ঝড়ে পড়েছেন এ অস্কারজয়ী কম্পোজার। পশ্চিমবঙ্গসহ বাংলাদেশের নজরুল অনুরাগীরা নতুন সুরের গানটিকে মেনে নিতে পারছেন না।

অনেকের ভাষ্য, গানটিকে বিকৃত করেছেন এ আর রহমান।  

গানটি নিয়ে মুখ খোলেন বিদ্রোহী কবির নাতি অনির্বাণ কাজী। এক রকম চটে গিয়ে তিনি বলেন, গানের ক্রেডিট থেকে তার পরিবারের নাম মুছে ফেলা হোক।

কলকাতার গণমাধ্যম অন্য সময়কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অনির্বাণ বলেন, ‘আমরা বুঝতে পারিনি যে রহমানের মতো একজন শিল্পী এতটা অসংবেদনশীল হতে পারেন এবং এভাবে গানটিকে হত্যা করতে পারেন। প্রতিবাদ হিসেবে, আমি চলচ্চিত্রের ক্রেডিট লাইনে বিশেষ ধন্যবাদে আমাদের পরিবারের নাম চাই না। ’

কাজী নজরুল ইসলামের পরিবার থেকে অনুমতি নিয়েই গানটি রিমেক করা হয়েছিল বলে তথ্য দেন অনির্বাণ।

তিনি বলেন, ‘২০২১ সালে মা অনুমতি দিয়েছিলেন। সুর ও কথা না বদলে গানটা রিমেক করতে অনুমতি দিয়েছিলেন তিনি। সেই সময় তাদের (নির্মাতা) পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল, গানটা তাড়া নিজেদের মতো করে ব্যবহার করতে চায়। তখন মা তাদের বলেছিলেন, গানটা তৈরি হয়ে গেলে একবার শোনাতে। কিন্তু ওরা কিছুই শোনায়নি। এরপর মা-ও মারা যান। ’

গানটিকে বিকৃত করা হয়েছে অভিযোগ এনে অনির্বাণ বলেন, ‘রহমানকে সম্পূর্ণ শ্রদ্ধা জানিয়েই জানতে চাই, তাকে কে অধিকার দিল গানটি বিকৃত করার? স্বত্ব দেওয়ার সময় তো সুর বদলের কথা বলা হয়নি। কী রকম একটা করে দিয়েছে গানটাকে! একটা গ্রামীণ সংগীতের মতো, ভাটিয়ালির মতো করে দিয়েছে। অনেক সস্তা করে দিয়েছে। ’

১৯২২ সালের ২০ জুন ‘কারার ওই লৌহ কপাট’ গানটি লিখেছিলেন কবি কাজী নজরুল। মুক্তিযোদ্ধা চিত্তরঞ্জন দাস কারারুদ্ধ হলে তার স্ত্রী বাসন্তী দেবী নজরুলকে বলেছিলেন, বাংলার মানুষকে নিয়ে কিছু লিখতে। সেই অনুরোধের প্রতি সম্মান রেখেই নজরুল রচনা করেছিলেন ‘কারার ওই লৌহ কপাট’ কালজয়ী গান। ১৯৪৯ সালের জুন মাসে যা রেকর্ড করা হয়। গিরিন চক্রবর্তীর গলায় প্রথম ভেসে ওঠে দ্রোহের এই গান।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৯, ২০২৩ 
ইএস/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।