ঢাকা, রবিবার, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন

আখাউড়া থেকে আবু খালিদ

আ’লীগ ‘দুই’ বিএনপি ‘দুই’, জাপা শূন্য

আবু খালিদ, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৩২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৫
আ’লীগ ‘দুই’ বিএনপি ‘দুই’, জাপা শূন্য ছবি: দেলোয়ার হোসেন বাদল / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ব্রাহ্মণবাড়িয়া, আখাউড়া থেকে: পৌরসভা নির্বাচনে নিজ নিজ দলের মনোনয়ন নিয়ে মাঠে নেমেছেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীরা। দল থেকে সমর্থন পাওয়ায় বেশ উজ্জীবিত হয়েই ভোটের লড়াইয়ে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন তারা।



তবে থেমে নেই এ দুই দল থেকে মনোনয়ন না পাওয়া বড় মাপের দুই নেতা। যদিও ‘বিদ্রোহী প্রার্থীর’ তকমা লেগেছে, কিন্তু তাতে কী! নিজেদের যোগ্যতা ও ইমেজ নিয়ে মাঠে দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়ে গেছে তাদের।

আর জাতীয় পার্টির পক্ষ থেকে মেয়র পদে কোনো প্রার্থী না থাকায় এ দলের কোঠা একেবারে শূন্য।

বড় ওই দুই দলের বিদ্রোহী প্রার্থীরা ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া পৌরসভার ভোটের সব হিসাব-নিকাশ বদলে দিতে পারেন বলে আলোচনা, গুঞ্জন চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে।

ওই পৌরসভায় আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পেয়েছেন তাকজিল খলিফা কাজল ও বিএনপি থেকে পেয়েছেন উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মন্তাজ মিয়া।

আর বিদ্রোহীর তকমা নিয়ে আ’লীগ থেকে সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বোরহান উদ্দিন ও উপজেলা বিএনপি’র সহসভাপতি জয়নাল আবেদিন আবদু।
 
জাতীয় পার্টির কোনো তৎপরতা বা নির্বাচন নিয়ে তেমন কোনো আওয়াজ পাওয়া গেলো না। মাঠে তাদের উপস্থিতি নেই বলেও জানালেন এলাকাবাসী। আর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এ পৌরসভায় প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন তিনজন প্রার্থী।
 
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় মোট পাঁচ পৌরসভার মধ্যে শুধু আখাউড়া পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

বাংলানিউজের সরেজমিনে ওই পৌরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখা যায়, প্রথমবারের মতো দলীয় প্রতীক নিয়ে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া পৌর নির্বাচনের চেয়ে বিদ্রোহী প্রার্থীর ইস্যুটিই মুখ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।
Borhan_8
শেষ মুহুর্তে বিদ্রোহী প্রার্থীরা নিজেদের প্রার্থীতা প্রত্যাহার করবেন কি-না। যদি না করেন তাহলে কেমন হবে ভোটের যুদ্ধ। আর যদি শেষ মুহুর্ত পর্যন্ত মাঠে থাকেন তাহলে কেমন হবে নির্বাচনের ফল। এরকম নানা জল্পনা, গল্প ভোটারের মুখে মুখে।

তবে ভোটাররা স্থানীয় নির্বাচনে বিদ্রোহী তকমা লাগানো পছন্দ করছেন না। এলাকাবাসীরা স্থানীয় এ নির্বাচনে জনপ্রতিনিধির ইমেজ, গুণ ও যোগ্যতাকে গুরুত্ব দিয়ে ভোট বাক্সে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে সমর্থন জানাবেন।  
শুক্রবার (১১ ডিসেম্বর) সকালের দিকে আখাউড়া পৌরসভার পাঁচ নম্বর ওয়ার্ড এলাকার কয়েকজন আসন্ন পৌর নির্বাচন নিয়ে মতামত জানালেন এই প্রতিবেদককে।
 
এদের মধ্যে বজলুর রহমান বলেন, ১৯৯৯ সালের পর এ পৌরসভায় চারবার (উপনির্বাচনসহ) ভোট দিলাম। এবার সারাদেশের ন্যায় এ পৌরসভাতেও দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হচ্ছে। বড় দুই দল থেকে বিদ্রোহী প্রার্থীও আছেন। তাই নির্বাচনটা অনেক বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হবে। জমে ওঠবে নির্বাচনের মাঠ।
 
আ’লীগ থেকে মনোনয়ন পাওয়া সাবেক পৌর চেয়ারম্যান তাকজিল খলিফা কাজল বাংলানিউজকে বলেন, যোগ্যতা ও দক্ষতা দেখেই দল থেকে আমাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। আর জনগণেরও আমার ওপর আস্থা আছে। অল্প সময় পেয়েছি মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালনের। কিন্তু সেবা দিতে একটুও কার্পণ্য করিনি।

আলোচনা আছে, তিনি বর্তমান সরকারের আইন মন্ত্রী আনিসুল হকের আশীর্বাদপুষ্ট। এ কারণেই দল থেকে মনোনীত হয়েছেন।
 
একই দল থেকে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে পৌর নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন পর পর তিন বার নির্বাচিত উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শেখ বোরহান উদ্দিন।
 
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, জনগণের চাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতেই আমি নির্বাচন করছি। কেননা ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়।
 
কোনো চাপ আছে কি-না এমন প্রশ্নের উত্তরে এ প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও মুক্তিযোদ্ধা বলেন, কেন্দ্র ও জেলা থেকে চাপ আসছে। কিন্তু নির্বাচন আমার জন্য অতীব জরুরি হয়ে পড়েছে।
 
এসময় তিনি রোষানলে পড়েছেন বলেও দাবি করে নির্বাচন থেকে সরে না আসার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
 
বিএনপি থেকে মনোনয়ন নিয়ে ভোটের ময়দানে নেমে গেছেন মন্তাজ মিয়া।

একাধিকবার কাউন্সিলর, প্যানেল ও ভারপ্রাপ্ত মেয়রের দায়িত্ব পালন করা প্রবীণ এ রাজনীতিবিদ বলেন, বিশাল ভোট ব্যাংক রয়েছে তার এলাকায়। এলাকাবাসীর চাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতেই তিনি নির্বাচন করছেন।

মন্তাজ মিয়া বলেন, দলীয়ভাবে মনোনীত হওয়ার পর আমার দায়িত্ব আরও বেড়ে গেছে। দলের আস্থা টিকিয়ে রাখতে আপ্রাণ পরিশ্রম ও চেষ্টা করে যাবো। তবে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে বিজয়ী তিনি হবেন বলেও আশা ব্যক্ত করেন।
 
আর আখাউড়া পৌরসভায় বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী জয়নাল আবেদিন আবদু বলেন, সবাই চাইছে বলেই আমি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি। ভোটারের কাছ থেকে ভালো সাড়াও পাচ্ছি। দলের অনুরোধে নির্বাচন থেকে সরে যাবেন কি-না এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বিষয়কে সরাসরি নাকচ করে দেন।
 
তবে বিদ্রোহী ও বিরোধী প্রতিটি মেয়র প্রার্থীই কেউ কারো সম্পর্কে নেতিবাচক কথা বললেন না। সবাই সবার যোগ্যতা দিয়েই ফলাফল নিজেদের করে নেবেন বলেও জানান সীমান্তবর্তী এ পৌর মেয়র প্রার্থীরা।
 
প্রার্থী ও ভোটারের চাওয়া সুষ্ঠু পরিবেশে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। বিজয়ী প্রার্থী এলাকার উন্নয়নে কাজ করবেন এমন আশা নিয়েই ভোট কেন্দ্রে যাবেন ভোটাররা।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৫৩২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০১৫
একে/জেডএস

** মার্কা আইলেই মাঠ গরম
** রসুলপুরে দু’ঘণ্টা আটকে থেকে ছাড়লো কর্ণফুলী এক্সপ্রেস
** জনগণে জনগণে একটা আলোচনা আছে না!

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।