ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

নির্বাচনের ১৩ দিন পরেও সরেনি পোস্টার, বহাল ক্যাম্প অফিস

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৯
নির্বাচনের ১৩ দিন পরেও সরেনি পোস্টার, বহাল ক্যাম্প অফিস এখনও ঝুলছে পোস্টার-ছবি-অনিক খান 

ময়মনসিংহ: একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষ হয়েছে আরও ১৩ দিন আগে। নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচন শেষ হওয়ার পর পরই প্রার্থীদের নিজস্ব উদ্যোগেই নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকার পোস্টার-ব্যানার অপসারণ করার কথা। কিন্তু ময়মনসিংহের ১১টি সংসদীয় আসনের বিভিন্ন স্থানে এখনও দড়িতে ঝুলছে সাদা-কালো পোস্টার।

শুধু নির্বাচনী পোস্টারই নয়, অনেক সংসদীয় আসনের অলিতে-গলিতে গড়ে ওঠা নির্বাচনী ক্যাম্প অফিসও রয়ে গেছে বহাল তবিয়তে। পোস্টার এবং নির্বাচনী ক্যাম্প অফিস অপসারণে দায়িত্বশীল আচরণ করতে দেখা যায়নি বেশিরভাগ প্রার্থীকেই।

ভোট শেষ হলেও পোস্টারের সমারোহে নষ্ট হচ্ছে প্রতিটি এলাকার সৌন্দর্য।  

নির্বাচন নিয়ে মাতামাতি শেষ হলেও চোখের সামনে ঝুলতে থাকা এসব পোস্টার বেখাপ্পাও বটে! এ নিয়ে নেই নির্বাচন কমিশনের (ইসি) তদারকি। এসব এলাকায় পরিচ্ছন্নতা কর্মীরা অভিযান শুরু না করলে চলমান এই অবস্থার উন্নতিরও সুযোগ নেই।  

জানা গেছে, ময়মনসিংহ-৪ (সদর) আসনের নতুন বাজার, গাঙ্গিনারপাড়, বাইপাস মোড়সহ বিভিন্ন পয়েন্টে এখনও দড়িতে দুলছে মহাজোট প্রার্থী রওশন এরশাদ ও ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী আবু ওয়াহাব আকন্দের পোস্টার।  

এই নির্বাচনী এলাকার কোথাও ব্যানার বা বিলবোর্ড চোখে না পড়লেও কোনো কোনো স্থানে অস্থায়ী ক্যাম্প রয়ে গেছে। সেখানে বসে নিজ নিজ কর্মী-সমর্থকরা চা-পান খাচ্ছেন, আড্ডা জমাচ্ছেন।  

তবে ময়মনসিংহ সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসনিক কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জাহাঙ্গীর বাংলানিউজকে জানান, নগরীর গাঙ্গিনারপাড় মোড়, জিলা স্কুল মোড়, চরপাড়া, মাসকান্দা, টাউন হলমোড়সহ নগরীর গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন মোড় ও অলিগলিতে বিদ্যুতের খুঁটি, পিলার বা রশিতে ঝুলানো বেশিরভাগ পোস্টার অপসারণ করে নগরীর স্বাভাবিক সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনা হয়েছে।  

এরপরেও কোথাও পোস্টার থাকলে দ্রুত সময়ের মধ্যেই সরিয়ে নেওয়া হবে।  

গত দু’দিন সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ময়মনসিংহ-৩ (গৌরীপুর), ময়মনসিংহ-৫ (মুক্তাগাছা), ময়মনসিংহ-৬ (ফুলবাড়িয়া), ময়মনসিংহ-২ (ফুলপুর-তারাকান্দা) আসনসহ প্রায় সব ক’টি আসনেই উপজেলা সদর এখনও বড় দু’টি রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের পোস্টারে ঠাসা। দেখে বোঝার উপায় নেই সপ্তাহ দুয়েক আগেই সংসদ নির্বাচনের পাট চুকেছে।  

কোনো কোনো উপজেলায় নির্বাচনের পর পরই নিজ নিজ দায়িত্বে পোস্টার অপসারণ করতে প্রার্থীদের আহ্বান জানিয়ে উপজেলা প্রশাসন মাইকিং করলেও তাতে সাড়া দেননি কোনো প্রার্থীই।  

এমনকি পোস্টার নামিয়ে ফেলতে উদ্যোগী নয় দলটির নেতাকর্মীরাও। বাতাসে বা ঘন কুয়াশায় পোস্টার নষ্ট হয়ে রাস্তায় পড়ে নোংরা পরিবেশের সৃষ্টি করলেও ভ্রুক্ষেপ নেই প্রার্থীদের।  

ক্ষোভ জানিয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ফুলবাড়িয়া উপজেলার স্থানীয় একটি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক বাংলানিউজকে বলেন, নির্বাচন কমিশন (ইসি) নির্বাচনের মাসখানেক আগেই পোস্টার-ব্যানার অপসারণ করতে দুই দফা সময় বেঁধে দিলেও কাজের কাজ কিছুই হয়নি। আর এখন তো নির্বাচনই শেষ। এসব দেখার সময় নেই কারো।

গৌরীপুরের কলতাপাড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় সরকার দলীয় প্রার্থীর নির্বাচনী পোস্টারে ছেয়ে থাকার দৃশ্য দেখিয়ে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকুরে বোরহান উদ্দিন রসিকতা করে বলেন, ‘ভোটের পরেও প্রার্থীদের প্রচারণা শেষ হয় না! 

বহু পোস্টার উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় টাঙানো আছে। এগুলো সরানোর মতো সময় হাতে নেই প্রার্থীদের। স্থানীয় প্রশাসনকে এই বিষয়ে কঠোর হতে হবে। ’ 

ফুলপুর প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক খলিলুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, উপজেলা সদরের পুরোটা জুড়েই এখনও নৌকা-ধানের শীষের পোস্টারের ছড়াছড়ি। গ্রামগুলোতেও একই অবস্থা। এক সপ্তাহ আগে উপজেলা প্রশাসন মাইকিং করলেও কর্ণপাত করছে না কোনো প্রার্থীই।  

জানতে চাইলে মুক্তাগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুবর্ণা সরকার বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমি প্রতিদ্বন্দ্বী সব প্রার্থীর প্রতি এই বিষয়ে আহ্বান জানিয়েছিলাম। তারা শুনেননি। এখন পৌরসভার মেয়র ও সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানদের পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু করতে বলবো।  

এসব বিষয়ে ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার মাহমুদ হাসান বাংলানিউজকে বলেন, ‘পোস্টার অপসারণ ত্বরান্বিত করতে জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দ্রুত নির্দেশনা দেওয়া হবে। কোথাও নির্বাচনী ক্যাম্প অফিস থাকলে সেটিও দ্রুত উচ্ছেদ করতে বলা হবে। ’ 

বাংলাদেশ সময়: ১৭১১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০১৮ 
এমএএএম/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।