ঢাকা, রবিবার, ৭ পৌষ ১৪৩১, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

টাঙ্গাইলে জামানত হারাচ্ছেন ৪০ প্রার্থী 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৯, ২০২৪
টাঙ্গাইলে জামানত হারাচ্ছেন ৪০ প্রার্থী 

টাঙ্গাইল: দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল জেলার আটটি সংসদীয় আসনে মোট ৫৬ জন প্রার্থী নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এ আসনের মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী পাঁচটি এবং স্বতন্ত্র তিনটিতে জয়লাভ করেছে।

এর মধ্যে জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে ৪০ জন প্রার্থীর।  

গত রোববার (৭ জানুয়ারি) সংসদ নির্বাচন শেষে রাতে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক কায়ছারুল ইসলাম আটটি আসনের প্রার্থীদের বেসরকারিভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন।  

টাঙ্গাইল-১ (মধুপুর-ধনবাড়ী) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত (নৌকা) প্রতীকের প্রার্থী আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক এক লাখ ৭৪ হাজার ১২২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র (ট্রাক) প্রতীকের প্রার্থী খন্দকার আনোয়ারুল হক ৪ হাজার ১৭৮ ভোট পেয়েছেন।  

এ আসনে জামানত হারাচ্ছেন তিন প্রার্থী। তারা হলেন- স্বতন্ত্র (ট্রাক) প্রতীকের প্রার্থী খন্দকার আনোয়ারুল হক। তিনি পেয়েছেন চার হাজার ১৭৮ ভোট, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ (গামছা) প্রতীকের প্রার্থী ফারুব আহাম্মেদ। তিন পেয়েছেন এক হাজার ৭৪২ ভোট, জাতীয় পার্টি (লাঙ্গল) প্রতীকের প্রার্থী মোহাম্মদ আলী। তিনি পেয়েছেন তিন হাজার ৬৭৪ ভোট।  

টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত (নৌকা) প্রতীকের প্রার্থী বর্তমান এমপি ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান ছোট মনির এক লাখ ৫১ হাজার ৭৩০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী গোপালপুর উপজেলা পরিষদের পদত্যাগকারী চেয়ারম্যান ইউনুছ ইসলাম তালুকদার ঠান্ডু ৩০ হাজার ৪৮৬ ভোট পেয়েছেন। কিন্তু ঠান্ডু রোববার দুপুর ২টার দিকে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন।  

এ আসনে জামানত হারাচ্ছেন চারজন প্রার্থী। তারা হলেন- জাতীয় পার্টি মনোনীত প্রার্থী হুমায়ুন কবির তালুকদার (লাঙ্গল)। তিনি পেয়েছেন ৪০২ ভোট, গণফ্রন্টের গোলাম সারোয়ার (মাছ)। তিনি পেয়েছেন ৩১২ ভোট, বাংলাদেশ কংগ্রেসের রেজাউল করিম (ডাব)। তিনি পেয়েছেন ৪৫১ ভোট এবং ন্যাশনাল পিপলস পার্টির সাইফুল ইসলাম (আম মার্কা)। তিনি পেয়েছেন ৩০৫ ভোট।

টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনে স্বতন্ত্র (ঈগল) প্রতীকের প্রার্থী ও সাবেক দুইবারের এমপি আমানুর রহমান খান রানা ৮২ হাজার ৭৪৮ পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ (নৌকা) প্রতীকের প্রার্থী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান খান ৬৯ হাজার ৩৫ ভোট পেয়েছেন।  

এ আসনে জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছেন চার প্রার্থী। তারা হলেন- জাতীয় পার্টি (লাঙ্গল) প্রতীকের প্রার্থী আব্দুল হালিম। তিনি পেয়েছেন ৭৮৮ ভোট, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম-নোঙ্গর) প্রতীকের প্রার্থী জাকির হোসেন। তিনি পেয়েছেন ১৫০০ ভোট, বাংলাদেশ সাম্যবাদী দল (চাকা) প্রতীকের প্রার্থী সাখাওয়াত খান সৈকত। তিনি পেয়েছেন ২৩৪ ভোট, ন্যাশনাল পিপল্স পার্টি (আম) প্রতীকের প্রার্থী হাসান আল মামুন সোহাগ। তিনি পেয়েছেন ২৫২ ভোট।  

টাঙ্গাইল-৪ (কালিহাতী) আসনে স্বতন্ত্র (ট্রাক) প্রতীকের প্রার্থী আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত সাবেক প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী ৭০ হাজার ৯৪০ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ (নৌকা) প্রতীকের প্রার্থী ও কালিহাতী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোজহারুল ইসলাম তালুকদার ঠান্ডু ৫৪ হাজার ৭৫ ভোট পেয়েছেন।

এ আসনে জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছেন সাত প্রার্থী। তারা হলেন- স্বতন্ত্র (ঈগল) প্রতীকের প্রার্থী সাখাওয়াত সিরাজ। তিনি পেয়েছেন ১০ হাজার ৭৮৭ ভোট,  জাসদ (মশাল) প্রতীকের প্রার্থী এস এম আবু মোস্তফা। তিনি পেয়েছেন ২০৩ ভোট, জাকের পার্টি (গোলাপ ফুল) প্রতীকের প্রার্থী মোন্তাজ আলী। তিনি পেয়েছেন ২৬১ ভোট, জাতীয় পার্টি ( লাঙ্গল) প্রতীকের প্রার্থী লিয়াকত আলী। তিনি পেয়েছেন ৫০৩ ভোট, তৃণমূল বিএনপি (সোনালী আঁশ) প্রতীকের প্রার্থী শহিদুল ইসলাম। তিনি পেয়েছেন ১৩৬ ভোট, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (একতারা) প্রতীকের প্রার্থী শুকুর মামুদ। তিনি পেয়েছেন ১০৩ ভোট, জাতীয় পার্টি- জেপি (বাইসাইকেল) প্রতীকের প্রার্থী সাদেক সিদ্দিকী। তিনি পেয়েছেন ১৪৭ ভোট।  

টাঙ্গাইল-৫ (সদর) আসনে স্বতন্ত্র (ঈগল) প্রতীকের প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও বর্তমান এমপি ছানোয়ার হোসেন ৭২ হাজার ২৭৬ পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগ (নৌকা) প্রতীকের প্রার্থী, কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য অ্যাডভোকেট মামুন অর রশিদ ৬৫ হাজার ৮৬৭ ভোট পেয়েছেন।  

এ আসনে জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছেন ৬ প্রার্থী। তারা হলেন- জাতীয় পার্টি (লাঙ্গল) প্রতীকের প্রার্থী মোজাম্মেল হক। তিনি পেয়েছেন ৫ হাজার ১৯১ ভোট, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম- নোঙ্গর) প্রতীকের প্রার্থী তৌহিদুর রহমান চাকলাদার। তিনি পেয়েছেন ৬৫৭ ভোট, তৃণমূল বিএনপি (সোনালী আঁশ) প্রতীকের প্রার্থী শরিফুজ্জামান খান। তিনি পেয়েছেন ৩১৪ ভোট, বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (একতারা) প্রতীকের প্রার্থী হাসরত খান ভাসানী। তিনি পেয়েছেন এক হাজার ৫৪ ভোট, স্বতন্ত্র (কেটলি) প্রতীকের প্রার্থী খন্দকার আহসান হাবিব। তিনি পেয়েছেন এক হাজার ৫৮৪ ভোট ও স্বতন্ত্র (ট্রাক) প্রতীকের প্রার্থী জামিলুর রহমান মিরন। তিনি পেয়েছেন ৯৭ ভোট। তবে মিরন প্রতীক বরাদ্দের দিনই নৌকা প্রার্থীকে সমর্থন দিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান।  

টাঙ্গাইল-৬ (নাগরপুর-দেলদুয়ার) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত (নৌকা) প্রতীকের প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক ও বর্তমান এমপি আহসানুল ইসলাম টিটু এক লাখ ১২ হাজার ৬৮৪ পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র (ঈগল) প্রতীকের প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি তারেক শামস খান হিমু ৩১ হাজার ২৯২ ভোট পেয়েছেন।  

এ আসনে জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছেন ছয় প্রার্থী। তারা হলেন- বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টি (একতারা) আব্দুল করিম। তিনি পেয়েছেন ১২৪ ভোট, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম-নোঙ্গর) প্রতীকের প্রার্থী খন্দকার ওয়াহিদ মুরাদ। তিনি পেয়েছেন এক হাজার ৪৮২ ভোট, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন (ফুলের মালা) প্রতীকের প্রার্থী মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন। তিনি পেয়েছেন ১৮৯ ভোট, স্বতন্ত্র (ট্রাক) প্রতীকের প্রার্থী মুহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম। তিনি পেয়েছেন ছয় হাজার ৫৫৬ ভোট, জাতীয় পার্টি (লাঙ্গল) প্রতীকের প্রার্থী আবুল কাশেম। তিনি পেয়েছেন ছয় হাজার ৬২৫ ভোট ও স্বতন্ত্র (বাঁশি) প্রতীকের প্রার্থী সৈয়দ মাহমুদুল ইলাহ্। তিনি পেয়েছেন ৫৮০ ভোট।  

টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত (নৌকা) প্রতীকের প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমান এমপি খান আহমেদ শুভ ৮৮ হাজার ৩৯৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী মির্জাপুর উপজেলা পরিষদের পদত্যাগকারী চেয়ারম্যান মীর এনায়েত হোসেন মন্টু পেয়েছেন ৫৭ হাজার ২৩১ ভোট।

এ আসনে জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছেন ৬ প্রার্থী। তারা হলেন- বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি (হাতুড়ি) প্রতীকের প্রার্থী গোলাম নওজব চৌধুরী। তিনি পেয়েছেন ২৬৫ ভোট, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ (গামছা) প্রতীকের প্রার্থী আরমান হোসেন তালুকদার। তিনি পেয়েছেন এক হাজার ৩৪০ ভোট, জাতীয় পার্টি (লাঙ্গল) প্রতীকের প্রার্থী জহিরুল ইসলাম জহির। তিনি পেয়েছেন ৩৬৮ ভোট, জাসদ (মশাল) প্রতীকের প্রার্থী মঞ্জুর রহমান মজনু। তিনি পেয়েছেন ১৫৩ ভোট, জাকের পার্টি (গোলাপ ফুল) প্রতীকের প্রার্থী মোক্তার হোসেন। তিনি পেয়েছেন ৫১২ ভোট ও বাংলাদেশ কংগ্রেস (ডাব) প্রতীকের প্রার্থী রুপা রায় চৌধুরী। তিনি পেয়েছেন ১০৫ ভোট।  

টাঙ্গাইল-৮ (বাসাইল-সখীপুর) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত (নৌকা) প্রতীকের প্রার্থী সখীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক এমপি অনুপম শাজাহান জয় ৯৬ হাজার ৪০১ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের (গামছা) প্রতীকের প্রার্থী ও দলটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী বীর উত্তম পেয়েছেন ৬৭ হাজার ৫০১ ভোট।

এ আসনে জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছেন ৪ প্রার্থী। তারা হলেন- জাতীয় পার্টি (লাঙ্গল) প্রতীকের প্রার্থী রেজাউল করিম। তিনি পেয়েছেন ৪৬৯ ভোট, বিকল্পধারা বাংলাদেশ (কুলা) প্রতীকের প্রার্থী আবুল হাশেম। তিনি পেয়েছেন ২১৭ ভোট, তৃণমূল বিএনপি (সোনালী আঁশ) প্রতীকের প্রার্থী পারুল। তিনি পেয়েছেন ৫৬৯ ভোট, বাংলাদেশ কংগ্রেস (ডাব) প্রতীকের প্রার্থী মোস্তফা কামাল। তিনি পেয়েছেন ১০৯।  

উল্লেখ্য, টাঙ্গাইলের আটটি আসনে ১২টি উপজেলার ১১টি পৌরসভা ও ১২০টি ইউনিয়ন এবং একটি ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের এক হাজার ৫৬টি কেন্দ্রের ছয় হাজার ৮১০টি ভোট কক্ষ রয়েছে। জেলার ৩১ লাখ ৪৬ হাজার ৬৭২ জন ভোটার রয়েছে। এর মধ্যে পুরুষ ১৫ লাখ ৭৭ হাজার ৬০৩ আর নারী ১৫ লাখ ৬৯ হাজার ৪৯ জন। এ ছাড়া ২০ জন তৃতীয় লিঙ্গের ভোটার রয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৯, ২০২৪
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।