ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

নির্বাচন ও ইসি

বরিশাল-৬

জাপার সঙ্গে নৌকার আরেক উদ্বেগ দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০২৩
জাপার সঙ্গে নৌকার আরেক উদ্বেগ দলীয় স্বতন্ত্র প্রার্থী

বরিশাল: টানা ২২ বছর পর দলীয় মনোনয়ন পেয়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে বরিশাল-৬ (বাকেরগঞ্জ) আসনে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী প্রচারণার মাঠে ভোট চাচ্ছেন।

তবে জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য নাসরিন জাহান রতনার পাশাপাশি বাকেরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় এ আসনে জয়ী হওয়ার পথটা মসৃণ হবে না নৌকার প্রার্থীর।

হিসাব বলছে, স্বাধীন বাংলাদেশে ১৯৭৩ সালে এই আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী। এরপর টানা ২৩ বছর পর ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নির্বাচিত সংসদ সদস্য হন। মাঝের ২২ বছরে ৪ বার বিএনপি ও একবার জাতীয় পার্টির প্রার্থী এ আসনে নির্বাচিত হন। আর ১৯৯৬ সালের পর ২০০১ সালেও বিএনপির প্রার্থী নির্বাচিত হন, এরপর টানা তিনবার এ আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা নির্বাচিত হয়েছেন। ফলে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যন্ত সর্বোচ্চ ৫ বার বিএনপি, এরপর ৪ বার জাতীয় পার্টি ও দুই বার আওয়ামী লীগের প্রার্থী আসনটি থেকে নির্বাচিত হয়েছেন।

নির্বাচনী ফলাফলের হিসাবে, এক সময়ের বিএনপির ঘাঁটি খ্যাত বাকেরগঞ্জ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে জাতীয় পার্টির হাতে চলে যায়। যদিও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা বলছেন, সংসদ নির্বাচনে জোটের স্বার্থে আসনটি গত তিন বার জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। ফলে স্থানীয় আওয়ামী লীগকেও জাতীয় পার্টির প্রার্থীর পক্ষে কাজ করতে হয়েছে।

স্থানীয়দের দাবি, আওয়ামী লীগে ভর করেই জাতীয় পার্টিকে বিগত তিন সংসদ নির্বাচনে জয়ী হতে হয়েছে। বাকেরগঞ্জ জাতীয় পার্টির ঘাঁটি হলে, উপজেলা কিংবা পৌর নির্বাচনে জোটের সহযোগিতা ছাড়াই নৌকার প্রার্থীরা বিপুল ভোটে বিজয়ী হতে পারতেন না।

তবে টানা তিন বার জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার ও তার স্ত্রী জাতীয় পার্টির প্রেসিডয়াম সদস্য নাসরিন জাহান রতনা এই আসনের সংসদ সদস্য থাকায় তাদের অবস্থানের সঙ্গে দলেরও অবস্থান বেশ জোরালো হয়েছে বলে দাবি স্থানীয় জাতীয় পার্টির নেতাদের।

হিসাব বলছে, ভোটের দিনের আগে মাত্র একটি উপজেলা নিয়ে গঠিত এ সংসদীয় আসনে নিজ দলের কোন্দল মেটাতে হবে নৌকার প্রার্থীকে। তা না হলে সংসদ নির্বাচনের জন্য সদ্য অব্যাহতি নেওয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শামসুল আলম গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়াতে পারেন। কারণ ২০০৯ ও ২০১৪ সালে সালে বাকেরগঞ্জ উপজেলায় তিনি বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান হয়েছিলেন, আর ২০১৯ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়ই নির্বাচিত হন উপজেলা আওয়ামী লীগের একযুগের এই সভাপতি। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের একাংশ বলছেন, ২ লাখ ৯৫ হাজার ৫১২ ভোটের আসন বাকেরগঞ্জ উপজেলার সংসদীয় আসনের যে সীমানা, উপজেলা নির্বাচনেরও সমীনা তাই, আর এ হিসেবে মোহাম্মদ শামসুল আলম ভোটের মাঠের পাকা খেলোয়াড় এখন। নৌকাকে জিততে হলে জাতীয় পার্টির পাশাপাশি স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ শামসুল আলমের সঙ্গেও হিসাবটা চুকিয়ে নিতে হবে।

উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি স্বতন্ত্র প্রার্থী মোহাম্মদ শামসুল আলম বলছেন, দলের নেতাকর্মীরা তাকে সাপোর্ট দিচ্ছেন এবং দেবেন। নেত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করতে চান তিনি। আর নির্বাচন সুষ্ঠু হলে বিপুল ভোটে বিজয়ী হবে তিনি। যদিও জাতীয় পার্টির প্রার্থী এখনই কিছু বলতে নারাজ, তবে জয়ের বিষয়ে আশাবাদী তার কর্মী-সমর্থকরা।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবদুল হাফিজ মল্লিক বলছেন, তার সঙ্গেও স্থানীয় আওয়ামী লীগের সবাই আছেন এবং যারা নেই তারাও অচিরে নৌকার পক্ষে কাজ শুরু করে দেবেন।

তিনি বলেন, উপজেলার সভাপতি নৌকার বিপক্ষে গিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। আমার মনে হয়, নৌকার বিপক্ষে গিয়ে এ দেশে কোনো লাভ হয় না। সবাইকে নৌকার পক্ষে আসতে হবে। আর এলাকার সাধারণ মানুষ জানে উন্নয়নের প্রতীক নৌকা, তাই নৌকার সঙ্গে দলমত নির্বিশেষে সবাই থাকবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০২৩
এমএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।