ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

শিক্ষা

তাপদাহে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়ে ভাবনায় ‘তিন বিকল্প’

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩২৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০২৪
তাপদাহে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়ে ভাবনায় ‘তিন বিকল্প’

ঢাকা: আবারও তিন দিনের ‘হিট অ্যালার্ট’ জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এই তিন দিন শেষে তাপমাত্রা কমবে কি না, তারও সুখবর নেই।

এ অবস্থায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়ে তিন বিকল্পের কথা ভাবা হচ্ছে। তাপদাহ কমে গেলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা, না কমলে মর্নিং স্কুল কার্যক্রম অথবা অনলাইনে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচলনা—এই তিন ভাবনা শিক্ষা সংশ্লিষ্ট নীতি নির্ধারকদের।

বৃহস্পতিবার (২৪ এপ্রিল) আবহাওয়াবিদ মো. শাহীনুল ইসলাম জানিয়েছেন, দেশের ওপর দিয়ে চলমান তাপপ্রবাহ আজ থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা অব্যাহত থাকতে পারে। এছাড়া জলীয়বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তি বৃদ্ধি পেতে পারে।

এ দিন দুপুরে সচিবালয়ে শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী শামসুন নাহার জানিয়েছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়বে কি না, তা শনিবারের মধ্যে জানিয়ে দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, তাপমাত্রা আপ-ডাউন হয়। আমাদের হাতে দুদিন সময় আছে। শিক্ষামন্ত্রী দেশের বাইরে আছেন। তিনি ফিরলে সিদ্ধান্ত জানানো হবে।

স্কুল বন্ধ না করে অনলাইনে শ্রেণি কার্যক্রম চালানো যায় কি না—জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, অনলাইন তো পরে দেখব। আমাদের গ্রাম পর্যায়ে স্কুল আছে, তারা অনলাইনে অভ্যস্ত না। সব কিছু চিন্তা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

ঈদুল ফিতরসহ অন্যান্য ছুটি শেষে গত ২১ এপ্রিল স্কুল-কলেজ খোলার কথা থাকলেও তাপদাহের কারণে এক সপ্তাহ পিছিয়ে ২৮ এপ্রিল ক্লাস চালুর কথা রয়েছে। কিন্তু তাপদাহ কমার বিষয়ে সুখবর না আসায় ভাবনায় ফেলেছে শিক্ষাপ্রসানকে। তাপদাহে স্বাস্থ্যখাত নিয়েও ঝুঁকি তৈরির আশঙ্কা স্বাস্থ্য সংশ্লিষ্টদের। এই অবস্থায় চাপ কিংবা ঝুঁকি নিতে চায় না কেউ।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, খুলনা বিভাগসহ দিনাজপুর, নীলফামারী, রাজশাহী, পাবনা, ফরিদপুর ও গোপালগঞ্জ জেলাগুলোর ওপর দিয়ে তীব্র অপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ময়মনসিংহ, মৌলভীবাজার, রাঙ্গামাটি, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী ও বান্দরবান জেলাসহ বরিশাল বিভাগ এবং রংপুর, রাজশাহী ও ঢাকা বিভাগের অবশিষ্টাংশের ওপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকবে। সারা দেশে দিন এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে। আর জলীয় বাষ্পের আধিক্যের কারণে অস্বস্তিভাব বিরাজ থাকবে।

আবহাওয়ার এই প্রতিকূল অবস্থায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও আবহাওয়া অধিদপ্তরের সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানিয়েছেন কর্মকর্তারা।

শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুইজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ঈদের ছুটিসহ তাপদাহে সাত দিন ছুটি মিলে প্রায় এক মাস ধরে শিক্ষার্থীরা ক্লাসের বাইরে। কাজেই পড়াশেনায় তাদের মনোযোগ ধরে রাখতে হবে। এ বিষয়টিও চিন্তা করা হচ্ছে। অন্যদিকে, গরমের কারণে যাতে তাদের ক্ষতি না হয় সেজন্য শ্রেণি কার্যক্রমের সময় কমিয়ে মর্নিং শিফট চালু করা কিংবা অনলাইনে ক্লাস চালানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এসব বিকল্প মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

তারা আরও জানান, হয়তো আগামী শনিবার এ বিষয়ে নেওয়া সিদ্ধান্তের ঘোষণা আসবে।

তীব্র তাপদাহের কারণে এক সপ্তাহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়ানোর দাবি তুলেছিল অভিভাবক ঐক্য ফোরাম। ছুটি শেষ হওয়ায় এই ফোরামের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. জিয়াউল কবির দুলু বলেন, শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিবেচনায় এবং হিটস্ট্রোক থেকে রক্ষা পেতে অনলাইনের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করা যেতে পারে। অনলাইনে শ্রেণির কার্যক্রম পরিচালনায় বন্ধের সময়ের শিক্ষার ঘাটতি পূরণে অনেকটাই সহায়তা হবে বলে মনে করেন অভিভাবক ঐক্য ফোরাম সভাপতি।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০২৪/আপডেট: ১৫০২ ঘণ্টা
এমআইএইচ/এমএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।