ঢাকা, রবিবার, ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

বাড়ছে মৌসুমি সবজির সরবরাহ, কমছে দাম 

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৩৬ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭, ২০১৮
বাড়ছে মৌসুমি সবজির সরবরাহ, কমছে দাম  বাজারে শীতের সবজি-ছবি-বাংলানিউজ

ঢাকা: রাজধানী জুড়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজারে দাম স্থিতিশীল রয়েছে প্রায় মাসখানেক ধরে। ব্যবসায়ীদের মতে, এর পেছনে মূল কারণ হিসেবে রয়েছে মৌসুমি সবজির আধিক্য। সামনে দাম আরও কমবে বলে জানিয়েছেন তারা। তবে খুচরা বাজারে অতিরিক্ত দাম নেওয়ার অভিযোগ করেছেন ক্রেতারা।

শুক্রবার (৭ ডিসেম্বর) রাজধানীর মিরপুর-১০, শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও, বউবাজার এলাকা ঘুরে এসব তথ্য জানা গেছে।  

বাজারগুলোতে দেখা গেছে শীতকালীন সবজির পর্যাপ্ত চালান।

পাইকারি ব্যবসায়ীদের মতে, সবজির চালান বেশ বেড়েছে। সামনের সপ্তাহে আরও বাড়বে। তখন দাম আরও কমবে।

বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি টমেটো ৭০ থেকে ৮০ টাকা, কাঁচা টমেটো ৩০ টাকা, শিম ৪০ থেকে ৬০ টাকা, ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে শসা ও কাঁচা মরিচ। এছাড়া প্রতি কেজি গাজর ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০, মূলা ৩০ টাকা, বেগুন ৪০ থেকে ৬০ টাকা, কচুর লতি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, করলা ৪০ থেকে ৬০ টাকা, শালগম ৩০ টাকা ও কাকরোল ৩৫ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।

এছাড়া বাজারে প্রতি পিস বাঁধাকপি ও ফুলকপি ২০ থেকে ৩০ টাকায়, লাউ ৩০ থেকে ৪০ টাকা এবং জালি কুমড়া ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি আঁটি কলমি শাক, লাল শাক ৭ থেকে ১০ টাকা, লাউ শাক ২০ থেকে ২৫ টাকায়, পালং শাক,  পুঁই শাক ১৫ থেকে ২০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে।  


মিরপুর-১০ এলাকায় বাজার করতে আসা বেসরকারি কোম্পানিতে কর্মরত শফিক বাংলানিউজকে জানান, বাজারে শীতকালীন সবজির যে পরিমাণ আধিক্য রয়েছে, সে তুলনায় দাম আরও কম হওয়া উচিৎ।  

এদিকে গত সপ্তাহ থেকে চালের দাম ৫  থেকে ৭ টাকা করে বেড়েছে। হঠাৎ করে এই দাম বাড়ার কোনো কারণ বলতে পারেনি ব্যবসায়ীরা। তবে অনেকে অভিযোগ করেছেন, সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দাম বাড়ানোর এটি একটি কৌশলমাত্র।  

বাজারে প্রতি কেজি সিরাজ মিনিকেট ও মিনিকেট চাল ৫৭ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। স্বর্ণ চাল ৩৮, মোটা চাল ৩৫, সাকি-২৮ ৪৪ থেকে ৫০, আমিন-২৮ ৪০ থেকে ৪৮টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি মসুর ডাল (দেশি) ১০০ টাকায়, মসুর ডাল মোটা ৭০ টাকায়, মুগ ডাল ১২০ টাকায়, ভোজ্যতেল প্রতি লিটার খোলা ৯০ টাকায় ও  বোতলজাত ১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।  

আবার দাম কমেছে বাজারে আসা মৌসুমের নতুন আলুর। কেজি প্রতি ৪০ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে  যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০টাকা। তাছাড়া  প্রতি কেজি আদা ১৪০ টাকায়, রসুন ভারতীয় প্রতি কেজি ৫০ টাকায় ও দেশি রসুন ৮০ টাকা, পেঁয়াজ (দেশি) ৪০ টাকা, ভারতীয় ৩০ টাকা এবং পুরনো  আলু ৩০ টাকা কেজি দরে পাওয়া যাচ্ছে।

দীর্ঘদিন ধরে দামের পরিবর্তন হচ্ছে না মাছ-মাংসের বাজারে। তবে কৌশলে দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়া মাছের বাজার সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। আগারগাঁও এলাকার মাছ বিক্রেতা রবিন  জানান, বাজারে এখন মাছ-মাংসের চাহিদা কম। যদিও চালান ভালো। আর পাইকারি ব্যবসায়ীরা দাম না বাড়ালে আমরা কখনই দাম বাড়ায় না।  

বাজারে প্রতি ৮০০ থেকে ৯০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের জোড়া ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকা, ৭০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের হালি ১০০০ থেকে ১১৫০ টাকা, ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ প্রতি জোড়া ৭০০ থেকে ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এসব বাজারে মাছের আকারভেদে প্রতি কেজি ট্যাংরা মাছ ৩৫০ থেকে ৫৫০ টাকা, শিং ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা, পাবদা ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা, চিংড়ি ৫০০ থেকে ৯০০ টাকা, পাঙ্গাস ১০০ থেকে ১২০ টাকা, কৈ ১৬০ থেকে ২০০ টাকা, তেলাপিয়া ১২০ থেকে ১৬০ টাকা, কাচকি ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, মলা ২৭০ টাকা থেকে ৩৫০ টাকা, নলা ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা, রুই ১৮০ থেকে ২৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।  

তবে মাংসের বাজারে নেই অতিরিক্ত দাম। প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৩০ থেকে ২৫০ টাকায়, গরুর মাংস ৪৮০ থেকে ৫০০ টাকায় ও খাসির মাংস ৭৫০ থেকে ৭৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

মিরপুরের বৌ-বাজার এলাকায় মাংস কিনতে আসা হালিমা বেগম বাংলানিউজকে জানান, মাছ-মাংসের বাজারের দাম কখনও কমে না। এখন যে দামটি রয়েছে এটিকে স্বাভাবিক দাম ধরা হয়। এটা থেকে বাড়ে বৈ কমে না। এ পরিস্থিতি পরিবর্তন না হলে স্বস্তি ফিরবে না।

এদিকে রাজধানীর মিরপুর এলাকার সুপার শপগুলোতে দামের আধিক্য রয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে একাধিক ক্রেতার কাছ থেকে। শেওড়াপাড়ার একটি সুপার শপে বাজার করতে আসা রেজোয়ান-সুমি দম্পতি বাংলানিউজকে বলেন, সুপার শপে একটি সুবিধা সবকিছু একসঙ্গে সহজে পাওয়া যায়। কিন্তু ইদানীং লক্ষ করছি আগের থেকে দাম সবজির ক্ষেত্রে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়ে গেছে। কিন্তু কাঁচাবাজারে তো দাম বাড়েনি। তাই আমরা সবজি কাঁচাবাজার থেকে কিনছি এখান থেকে নিচ্ছি অন্যান্য দ্রব্য। সুপার শপের ম্যানেজারকে জিজ্ঞেস করেছিলাম কেন দাম বাড়লো? তারা উত্তরে সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ দেখাতে পারেনি, শুধু বলেছে পাইকারি বিক্রেতারা দাম বাড়িয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ১০৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৭, ২০১৮
এমএএম/আরআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।