ঢাকা, শুক্রবার, ৯ মাঘ ১৪৩১, ২৪ জানুয়ারি ২০২৫, ২৩ রজব ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

মেঘনায় ইলিশ মিলছে কম, জাটকার মণ ৪০ হাজার!

মুহাম্মদ মাসুদ আলম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০২৫
মেঘনায় ইলিশ মিলছে কম, জাটকার মণ ৪০ হাজার! বুধবার (২২ জানুয়ারি) চাঁদপুর সদরের বহরিয়া বাজারের আড়তে গিয়ে মিলল মাত্র কয়েকটি ইলিশ

চাঁদপুর: শীত মৌসুমে প্রতিবছরই মেঘনায় ইলিশের প্রাপ্যতা কম থাকে। তবে এ বছর জালে ইলিশ মিলছে খুবই কম।

দিন ও রাতে জেলেরা নদী চষে বেড়ালেও বড় ইলিশের দেখা মিলছে না। তবে ১০ ইঞ্চির কম আকারের ইলিশ (জাটকা) পাওয়া গেলেও দাম চড়া। এই জাটকা-ই বিক্রি হচ্ছে ৩৮-৪০ হাজার টাকা মণ দরে।

চাঁদপুর সদরের বিভিন্ন বাজার, মাছঘাট ও হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী সবচাইতে বড় মাছের আড়ত ঘুরে ইলিশের দর দাম এবং মেঘনায় ইলিশের বিচরণের বিভিন্ন তথ্য জানা গেল।

শহরের ওয়ারলেস মাছবাজার ঘুরে দেখা গেল, কয়েকজন ব্যবসায়ী জাটকা বিক্রি করছেন। ৭-৮ ইঞ্চি আকারের। প্রতিকেজি ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা দরে বিক্রি করবেন বলে জানালেন এক বিক্রেতা। আরেক ব্যবসায়ী বিক্রি করছেন প্রতিকেজি ১ হাজার টাকা দরে।  

রাবেয়া বেগম নামে এক ক্রেতা জানালেন, বাজারে ইলিশ দেখছি না তেমন। যে কারণে এক কেজি জাটকা কিনেছেন ৮৫০ টাকা দিয়ে।

সদর উপজেলার বহরিয়া মাছঘাটে গিয়ে দেখা গেল ইলিশ নেই। শুধু ছোট চিংড়ি পোনা বিক্রি হচ্ছে। ওই ঘাটের ইলিশের আড়তগুলো ফাঁকা পড়ে আছে।

হাইমচর চরভৈরবী মাছঘাট এলাকার জেলে করিম মিয়া ও শাহাবুদ্দিন বলেন, নদীতে পানি কম। সারাদিন নদীতে থাকলেও ইলিশ পাওয়া যায় না। যে কারণে এখন ছোট মাছ ধরি। ঋণ আছে, তাই ছোট মাছ ধরেই সংসার চালাচ্ছি।

হরিণা ফেরিঘাট সংলগ্ন মাছঘাটে রয়েছে প্রায় ১৪টি ইলিশের আড়ত। কিন্তু সব আড়ত-ই এখন নীরব। কিছু জেলে জাটকা ইলিশ নিয়ে এসেছেন। মুহূর্তেই সেসব জাটকা হাঁকডাক দিয়ে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে।  

এই আড়তের পাইকার ব্যবসায়ী বিল্লাল হোসেন জানান, বড় সাইজের ইলিশ নেই। ছোট সাইজের প্রতি হালি ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা।

ইলিশের সরবরাহ না থাকায় চরভৈরবী মাছঘাটের আড়ত এখন ফাঁকা

হাইমচর উপজেলার চরভৈরবী মাছঘাটের ব্যবসায়ী বাবুল মিয়া বলেন, শীত মৌসুমে নদীতে পানি কমে যায় এবং নদীর বিভিন্ন স্থানে চর জেগে ওঠে। যে কারণে ইলিশ কম পাওয়া যায়। এখন ছোট বিভিন্ন প্রজাতির মাছ বিক্রি করেই আমাদের আড়তগুলো চালু আছে। আমাদের নদীতে এখন ইলিশ নাই বললেই চলে। ছোট সাইজের কিছু ইলিশ পাওয়া গেলেও দাম অনেক বেশি। সারাদিনে প্রায় ২০টি আড়তে দুই থেকে তিন মণ ইলিশ বিক্রি হয়।

নদীতে মিলছে না ইলিশ।  তাই জেলেদের অবসর সময়ে কাটছে জাল মেরামত করে

চাঁদপুর মাছঘাটের আড়তদার ওমর ফারুক বলেন, শীত মৌসুমে মেঘনায় ইলিশ খুবই কম। সব আড়ত মিলিয়ে এখন ১০ থেকে ১২ মণ ইলিশ বিক্রি হয়। তাও সাইজে ছোট। জাটকা সাইজের ইলিশের মণও ৩৮ থেকে ৪০ হাজার টাকা।

চাঁদপুর সদর উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মির্জা ওমর ফারুক বলেন, প্রতিবছরই শীত মৌসুমে নদীতে ইলিশ কম থাকে। যে কারণে ছোট-বড় যে সাইজের ইলিশই জেলেরা ধরে আনেন, তার দাম চড়া হয়। তবে আগামী মে মাসের পর থেকে ইলিশ পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। কারণ তখন জাটকাগুলো সাইজে বড় হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩, ২০২৫
এসএএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।