ঢাকা, সোমবার, ১ পৌষ ১৪৩১, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

অর্থনীতি-ব্যবসা

সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে ধস, ভেঙে টাকা তুলছেন গ্রাহকরা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৩ ঘণ্টা, জুলাই ৫, ২০২৩
সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে ধস, ভেঙে টাকা তুলছেন গ্রাহকরা

ঢাকা: গ্রাহকেরা নতুন করে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করছেন না। বরং আগে কেনা সঞ্চয়পত্র মেয়াদ শেষে ভেঙে টাকা তুলে নিয়ে যাচ্ছেন।

জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

তথ্য বলছে, ২০২২-২৩ অর্থ বছরের জুলাই–মে মাসে গ্রাহকরা সঞ্চয়পত্র কিনেছেন ৭৪ হাজা ৭১৯ কোটি টাকার। একই সময়ে মেয়াদ শেষে সঞ্চয়পত্র ভেঙে তুলে নিয়ে গেছেন ৭৭ হাজার ৭৭৮ কোটি টাকা। বছর শেষে সরকারের কোষাগার থেকে বা পূর্বের সঞ্চয়পত্র বিক্রির টাকা থেকে এই টাকা শোধ করতে হয়েছে। বছরের ১১ মাসে গ্রাহকদের বাড়তি ৩ হাজার ৫৯ কোটি টাকা ফেরত দিতে হয়েছে।

বাজেট ঘাটতি পূরণে সরকার জাতীয় সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে গ্রাহকদের কাছে থেকে অর্থ সংগ্রহ করে। এ জন্য সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে আকর্ষণীয় সুদ দেয় সরকার।

সামাজিক নিরাপত্তা, নারীকে সঞ্চয়মুখী করা, চাকরি শেষে আর্থিক নিরাপত্তা, প্রবাসীদের দেশে প্রবাসী আয় পাঠানোর মতো লক্ষ্য সামনে রেখে সঞ্চয়পত্র বিক্রির ডিজাইন ঠিক করে সরকার। ফলে সঞ্চয়পত্র বিক্রি বেড়ে যায়। সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে করে অর্থ সংগ্রহ করার যে লক্ষ্য ঠিক করা হয়, তার চেয়ে কয়েকগুণ বেড়ে যায়।

গত কয়েক বছরের সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে এমন চিত্র ফুটে উঠে। জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পায় সঞ্চয়পত্র বিক্রি। এ জন্য সরকারকে বিপুল পরিমাণ সুদ গুনতে হয় সঞ্চয়পত্রে। সামাজিক নিরাপত্তাকে লক্ষ্য করে সঞ্চয়পত্র যে অভীষ্ট, তা বিঘ্নিত হয়। এরপর সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে জাতীয় পরিচয়পত্র, ট্যাক্স সনাক্তকরণ নম্বর, একক ব্যক্তির জন্য ক্রয়ের সিলিংতে বেঁধে দেওয়ার মতো নিয়ন্ত্রণমূলক বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়। ফলে কমতে থাকে সঞ্চয়পত্র বিক্রি।

সঞ্চয়পত্র বিক্রির কমে আসার পেছনে অস্বাভাবিক মূল্যস্ফীতিও কাজ করছে বলে মনে করছে অর্থনীতিবিদরা। পর্যবেক্ষণেও বিষয়টি ওঠে আছে। জীবন নির্বাহের মানুষের ব্যয় বেড়েছে। নিত্যদিনের ব্যয় সামাল দিতে সঞ্চয় ভেঙে মানুষ খরচ করছে। এতে চাপ পড়ছে সঞ্চয়ে। মেয়াদ শেষে সঞ্চয় ভেঙে টাকা তুলে নিয়ে যাচ্ছে, নতুন করে সঞ্চয়পত্র কিনতে পারছে না। সঞ্চয়পত্র বিক্রির হালনাগাদ প্রতিবেদনে এমন চিত্র উঠে এসেছে।

বাজেট ঘাটতিতে পূরণে ২০২২-২৩ অর্থবছরে জন্য সঞ্চয়পত্র বিক্রি লক্ষ্য ঠিক করে ২০ হাজা কোটি টাকা। এর বিপরীতে ১১ মাসে নিট ৩ হাজার ৫৯ কোটি টাকা পরিশোধ করতে হয়। এই টাকা সরকার ব্যাংক থেকে বাড়তি সুদ দিয়ে সংগ্রহ করে পরিশোধ করে।

সদ্য বিদায়ী ২০২২-২৩ অর্থবছরের শেষ মাসের তথ্য যখন আসবে, তখন সরকারের কোষাগার থেকে সঞ্চয়পত্র বিক্রির টাকা পরিশোধ দ্বিগুণ হতে পারে বলে মনে করছেন জাতীয় সঞ্চয়পত্র অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্টরা।

চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে ঘাটতি মেটাতে সঞ্চয়পত্র বিক্রি লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে ১৮ হাজার কোটি টাকা।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪৯ ঘণ্টা, জুলাই ৫, ২০২৩
জেডএ/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।