ঢাকা, শুক্রবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

কলকাতার ইফতারে হালিমও কম যায় না

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭৪২ ঘণ্টা, জুন ২১, ২০১৭
কলকাতার ইফতারে হালিমও কম যায় না কলকাতার একটি হালিমের দোকান

কলকাতা: পবিত্র রমজান মাস এলেই কলকাতার রেস্তোরাঁ থেকে স্ট্রিটফুডের খাবারে কিছু বৈচিত্র্য আসে। সর্বত্র এমন কিছু খাওয়ারের স্বন্ধান মেলে যা অন্য সময় মুষ্টিমেয় কিছু দোকানে পাওয়া যায়। তার মধ্যে অন্যতম হলো হালিম। 

নানা ধরনের সুস্বাদু ডালের মধ্যে ভাসমান বা ডুবন্ত গোসের টুকরো। তার ওপর চিকন করে কাটা ধনেপাতা,পেঁয়াজের বেরেস্তা, কাঁচা মরিচ ও আদা কুচির সঙ্গে একটু লেবুর রস।

ব্যস। এক চামচ মুখে দিলেই স্বর্গীয় অনুভূতি! রমজান মাস এলেই এর স্বাদ যেন দ্বিগুণ বেড়ে যায়।

ইফতারে হালিম যে শুধু সুস্বাদু খাদ্য তাই নয়, এর পুষ্টিগুণও অসাধারন। রমজান মাস উপলক্ষে কলকাতায় প্রতিদিন দুপুরের পর থেকে হালিম পাওয়া যায় দোকানগুলিতে। একটু বেলা পড়তেই পার্সেলের ভিড় বাড়ে। আর যারা অরোজাদার, বর্ষাকালেও কলকাতার ৩৬ ডিগ্রি গরমে রেস্তোরাঁর ভেতরে গিয়ে এসির ঠাণ্ডা হাওয়ায় চেখে নিচ্ছে হালিমের স্বাদ।

নাখোদা মসজিদের সামনে এক হালিম রাঁধুনির সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, একাধিক স্বাদের ডাল (যেমন মুগ, মসুর, বুট ইত্যাদি) আর সুগন্ধি চাল তার সঙ্গে মেশে প্রায় কয়েক প্রকারের মশলা। এর প্রস্তুতি চলে নাকি আগের দিন রাত থেকে। একাধিক ডাল আর সুগন্ধি চাল আগের দিন রাত থেকে পানিতে ভিজিয়ে নরম করে পাটায় দিয়ে আধা ভাঙ্গা করে নিতে হয়। তারপর প্রতিটা স্বাদের ডাল ও চাল আলাদা করে রান্না করে নিতে হয়। গোসও আলাদা করে রান্না করে নিতে হয়। এরপর একটি বড়ো পাতিলে সব মিশিয়ে মাঝারি আঁচে চুলায় রেখে জ্বাল দিতে হয় এবং মাঝে মাঝে নাড়তে হয় যাতে নিচে লেগে না যায় অর্থাৎ পুড়ে না যায়। হালিম হালকা ঘন হয়ে আসতে নামিয়ে ফেলে। চুলা থেকে একটু পাতলা অবস্থাতেই নামানোর পর এমনিতেই ধীরেধীরে ঘন হয়ে যায়। আর ঘি ও রকমারি মশলার সংমিশ্রণতো আগে পড়ে আছেই।

কলকাতার আশপাশ সহ নাখোদা মসজিদের সামনে নানা স্বাদের হালিম পাওয়া যায় — চিকেন শাহি হালিম, মাটন শাহি হালিম, বিফ শাহি হালিম, ইরানি হালিম, হায়দরাবাদি হালিম, আফগানি হালিম, লক্ষ্ণৌ স্পেশাল হালিম, এবং কলকাতা স্পেশাল হালিম। প্রত্যেকটির ক্ষেত্রে আলাদা করে গোস রান্নার পদ্ধতি রয়েছে। কোনওটায় কোফতা ব্যবহার হয়, কোনওটায় কিমা, কোনটায় বোটি এবং কোনওটায় বড় গোসের টুকরো। দামও আহামরি কিছু নয়। স্ট্রিটফুডের দোকানগুলোয় এক প্লেট হালিম ২৫ রুপি থেকে শুরু। আবার রেস্তোরাঁয় এক প্লেটের দাম ১১০ থেকে ১৮০ রুপি।

ঈদ পর্যন্ত হালিম কমবেশি সব রেস্তোরাঁয় পাওয়া যায়। তাই এর মধ্যে কলকাতায় কোনো বাংলাদেশি এলে, রসনা তৃপ্তি করতে একবার কলকাতার হালিমের স্বাদ চেখে নিতেই পারেন। কথা দিলাম খারাপ লাগবে না।

বাংলাদেশ সময়:১৩১৬ ঘণ্টা, ২১ জুন, ২০১৭
ভি.এস/আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।