ঢাকা, বুধবার, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

দিল্লি, কলকাতা, আগরতলা

রমজানে কলকাতায় আতরের চাহিদা ব্যাপক, যাচ্ছে বাংলাদেশেও

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০২২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ৫, ২০২৩
রমজানে কলকাতায় আতরের চাহিদা ব্যাপক, যাচ্ছে বাংলাদেশেও

কলকাতা: ‘আল্লাহর নবী (সা.) ফুল ভালোবাসতেন, ভালোবাসতেন খুশবু। ’ চলছে পবিত্র রমজান।

এই মাসে আতরের চাহিদা বেড়ে যায়। আতরে থাকে না কোনো অ্যালকোহল। তাই রোজাদার নামাজি, মুসল্লিরা মসজিদে বা কোনো ইসলামী অনুষ্ঠান বা মজলিসে যাওয়ার আগে কিংবা এমনিতেও ব্যবহার করেন সুগন্ধি আতর। কলকাতার একটি কোম্পানি ‘গরিব নওয়াজ পারফিউমারি’, বহু বছর ধরে আতর তৈরি করছে। ইতোমধ্যে বাংলার বাজারে বেশ সুনামও করেছে। যাচ্ছে বাংলাদেশেও।

আসন্ন ঈদ উপলক্ষে প্রতিদিনই ইফতারের পর কেনাকাটায় জমে উঠছে কলকাতার নাখোদা মসজিদ এলাকায়। জাকারিয়া স্ট্রিট এবং রবীন্দ্র সরণি-এই দুই সড়কের মধ্যে অবস্থিত বাংলার ঐতিহ্যবাহী নাখোদা মসজিদ।  

বলা যেতে পারে, কলকাতার বড়বাজার এই অঞ্চল থেকেই শুরু। শহরের সবচেয়ে যানজট প্রবণ এলাকায় এখন ব্যস্ততা বেড়েছে ঈদের কেনাকাটায়। সেই নাখোদা মসজিদ সংলগ্ন ট্রাম লাইনের উপর ৯২ নং, রবীন্দ্র সরণিতে রয়েছে এই আতর কোম্পানির দোকানটি। তবে ঠিক সড়কের উপরে নয়, পাশে একটু গলির মধ্যে।

সেখানে যেতেই স্বাগত জানালেন, মিষ্টি হাসি তরুণ স্বত্বাধিকারী শফিক আলম। এখানে না এলে বোঝাই যেত না এই খুশবুদার সংস্থাটি আসলে যেন রমজানের একটি ডিপার্টমেন্টাল স্টোর! শফিক জানালেন, তাদের আঁতরে রয়েছে বিস্তৃত সম্ভার। আর তা তারা 'আরহাম মক্কা পারফিউমারি' নামে বাজারজাত করেন। একইসঙ্গে স্টোরে রয়েছে বাংলাদেশ, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়ার টুপিসহ নানা মন পসন্দ সামগ্রী। সাধারণ থেকে বাহারিটুপি সবই রয়েছে এখানে। এছাড়া তারা তৈরি করেন ভালো মানের পাঞ্জাবিও।

এখানে এসেই জানা গেল, বাংলার জেলাগুলোর কাছে অতি পরিচিত ‘গরিব নওয়াজ পারফিউমারি’ ও ‘আরহাম মক্কা পারফিউমারি’। বিভিন্ন জেলা থেকে মানুষ এসেছেন কেনাকাটি জন্য। অনেকেই পরিবারের জন্য কেনাকাটা করছেন। তবে সিংহভাগ এসেছেন ব্যবসায়িক কারণে। রমজানে নিজস্ব জেলায় ঈদের বাজার ধরার জন্য এসেছেন উত্তর দিনাজপুর, হুগলি, উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪পরগনা, পূর্ব এবং পশ্চিম দুই মেদিনীপুর জেলার ব্যবসায়ীরা।

সেসব জেলার ব্যবসায়ীরা বলেন, আমরা দুই ঈদে এখান থেকেই পাইকারিহারে খরিদ করে মফস্বলে নিয়ে যাই। তাছাড়া আমরা অন্য সময়ও এখান থেকে কেনাকাটি করি। এ স্টোরের সবচেয়ে ভালো বিষয় হলো, এখানে এলে ঠকতে হয় না। জিনিসপত্রের মানও খুব উন্নত। উত্তর দিনাজপুরের ব্যবসায়ী মফিজুল ইসলাম বলেন, আমার এলাকায় তো আরহাম আতরের বাধা ধরা খদ্দের রয়েছে। এবারের তাদের জন্য আরহাম ও গরিব নওয়াজ পারফিউমারী আতর নিতে এসেছি। সুগন্ধি অথচ দামও সাধ্যের মধ্যে।

স্টোরের কর্ণধার শফিক আলম বলেন, শুধু দিনাজপুর বা কোচবিহার নয়, আমাদের আতর যায় আসামের শিলচরেও। এছাড়া করিমগঞ্জ, ধুবড়ি ও ভারতের অন্যান্য স্থানেও। এবং বাংলাদেশেও। বাংলাদেশে আতর এর সঙ্গে যায় সুরমা। ১৫ রোজার পর থেকে বাংলাদেশের লোক এ অঞ্চলে আবার বেশি দেখা যাবে। তবে বাংলাদেশে যারা ব্যবসার জন্য নেন। তারা এক মাস আগেই নিয়ে গেছেন।

শফিক আরও বলেন, সৎ ভাবে বহুদিনের ব্যবসা। তাই আমরা সবার আস্থা অর্জন করতে পেরেছি। আমাদের আরও একটি ব্রাঞ্চ রয়েছে কলুটলা মসজিদের কাছে। এই ব্যবসা শুরু করেছিলেন আমার আব্বা। আর তিনিই ব্যবসাকে আরও মজবুত করছেন।

ফলে বিজ্ঞাপনে বিশ্বাসী না হলেও শফিকের আতরের খবর ছড়িয়ে গেছে বাংলাসহ ভারতের দূর-দূরান্তে। এমনকী বাংলাদেশও।

বাংলাদেশ সময়: ০২১৮ ঘণ্টা, এপিল ০৫, ২০২৩
ভিএস/আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।