ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ক্রিকেট

লজ্জার ব্যাটিং বিপর্যয়, নিজেদের টেস্ট ইতিহাসের সর্বনিম্ন স্কোর ভারতের

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০২০
লজ্জার ব্যাটিং বিপর্যয়, নিজেদের টেস্ট ইতিহাসের সর্বনিম্ন স্কোর ভারতের ছবি: সংগৃহীত

দুই অজি পেসার প্যাট কামিন্স ও জশ হ্যাজেলউডের বিধ্বংসী বোলিংয়ে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ৩৬ রান তুলতেই গুটিয়ে গেছে ভারত। নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে এটিই ভারতের সর্বনিম্ন স্কোর।

 এর আগে টেস্টে এক ইনিংসে ভারতের সবচেয়ে কম রানে অলআউট হওয়ার রেকর্ড ছিল ৪২ রানের।  ১৯৭৪ সালে লর্ডসে ইংল্যান্ডের কাছে পাওয়া সেই লজ্জার রেকর্ড এখন কোহলির দলের দখলে। এমনকি গত ৬৫ বছরের মধ্যেই এটা সর্বনিম্ন টেস্ট স্কোর।

প্রথম ইনিংসে ৫৩ রানের লিড ছিল ভারতের। কোনোমতে দ্বিতীয় ইনিংসে ২০০ রান করতে পারলেও স্বাগতিকদের চাপে ফেলা যেত। কিন্তু গোপালি বলের সুইং সামলাতে ব্যর্থ সফরকারী দলের কোনো ব্যাটসম্যানই দুই অংক ছুঁতে পারলেন না। ভারতীয় ব্যাটসম্যানদের ইনিংসগুলো পরপর সাজালে দাঁড়ায়- ৪, ৯, ২, ০, ৪, ০, ৮, ৪, ০, ৪, ১। তবে শেষ ব্যাটসম্যান মোহাম্মদ শামি রিটায়ার্ড হার্ট হয়ে ফিরেছেন। ফলে ভারত আসলে উইকেট হারিয়েছে ৯টি।

শেষ পর্যন্ত সিরিজের প্রথম দিবারাত্রির টেস্টে অজিদের সামনে ভারত লক্ষ্য দিতে পেরেছে মাত্র ৯০ রানের। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে বিনা উইকেটে ১৫ রান তুলেছে স্বাগতিকরা। জিততে হলে টিম পেইনের দলকে করতে হবে মাত্র ৭৫ রান।

টেস্ট ইতিহাসে ভারতের এই ৩৬ রানের ইনিংস সবমিলিয়ে যৌথভাবে পঞ্চম সর্বনিম্ন। তবে সমান ৩৬ রান আছে আরও দুই দলের। মাঝে ৩০ রানে দুবার অলআউট হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। সেই হিসেবে ভারতের বর্তমান অবস্থান সপ্তম।  

১৯৫৫ সালের ২৫ মার্চ ইংলিশদের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের মাত্র ২৬ রানে গুটিয়ে যাওয়া সর্বনিম্ন ইনিংসের রেকর্ডের তালিকায় শীর্ষে অবস্থান করছে। ৩০ রান নিয়ে তালিকার দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে আছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এই লজ্জার কীর্তিতে তারা যথাক্রমে ১৮৯৬ ও ১৯২৪ সালে নাম লিখিয়েছে।  

ভারতের মতোই সমান ৩৬ রানে অলআউট হওয়ার রেকর্ড আছে অস্ট্রেলিয়ারও। তবে সেটা ১৯০২ সালের ২৯ মে'র ঘটনা। প্রতিপক্ষ ছিল ইংল্যান্ড। একই লজ্জায় ডুবেছে দক্ষিণ আফ্রিকাও (১৯৩২ সালে)। এছাড়া ১৮৯৯ সালের ১ এপ্রিল ৩৫ রানে (ইংলিশদের বিপক্ষে) অলআউট হয়েছিল প্রোটিয়ারা। অর্থাৎ, সর্বনিম্ন ইনিংসের তালিকায় প্রথম সাতটির চারটিই দক্ষিণ আফ্রিকার দখলে।

শনিবার অ্যাডিলেডে কামিন্স-হ্যাজেলউডের সামনে পাত্তাই পাননি কোহলিরা। আগের দিনের শেষে দলীয় ৯ রানের মাথায় পৃথ্বী শ (৪) বিদায় নিয়েছিলেন। বাকি ব্যাটসম্যানরা তৃতীয় দিনের শুরুতেই সেই পথ ধরলেন। শুরুটা হলো জসপ্রীত বুমরাহকে দিয়ে। দলকে ১৫ রানে রেখে কামিন্সের বলে বোলারের হাতেই ক্যাচ তুলে দেন ভারতীয় নাইট-ওয়াচম্যান।  

বুমরাহ তবু ব্যাটসম্যান নন, ফলে তার বিদায় অস্বাভাবিক কিছু নয়। কিন্তু এরপর যেন তাসের ঘরের মতো হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ল ভারতীয় ইনিংস। ওই ১৫ রানেই একে একে বিদায় নিলেন চেতেশ্বর পূজারা, ময়াঙ্ক আগারওয়াল এবং আজিঙ্কা রাহানে। বিরাট কোহলি একটা বাউন্ডারি হাঁকিয়ে পাল্টা আক্রমণ শানাতে চাইলেও কামিন্সের বলেই তার লড়াইয়ের সমাপ্তি ঘটে। ভারতীয় অধিনায়ক মাত্র ৪ রান করেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন।

কোহলি বিদায় নেওয়ার পর বাকিরাও সেই পথে পা বাড়াতে দেরি করেননি। একে একে সাজঘরে ফিরতে শুরু করেন হনুমা বিহারি, ঋদ্ধিমান সাহা, অশ্বিনরাও। অজি পেসার হ্যাজেলউড একাই তুলে নিয়েছেন ৫ উইকেট। ৫ ওভারে ৩ মেডেনসহ রান খরচ করেছেন মাত্র ৮! কামিন্স অবশ্য ১০.২ ওভারে ২১ রান খরচ করেছেন, কিন্তু উইকেট তুলে নিয়েছেন ৪টি।

বাংলাদেশ সময়: ১২৩৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০২০
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।