ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ক্রিকেট

ইনজুরি জুজু ক্রিকেটে! সমাধান কোন পথে 

সাজ্জাদ খান, স্পোর্টস করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৮, ২০১৭
ইনজুরি জুজু ক্রিকেটে! সমাধান কোন পথে  আঘাত পেয়ে অ্যাম্বুলেন্সে মাঠ ছাড়তে হয়েছে মুশফিকুর রহিমকে

ইনজুরিতে পড়েননি এমন খেলোয়াড় পাওয়া যাবে না পৃথিবীর কোথাও। খেলতে গেলে আঘাত পাবেনই। অন্যান্য খেলার চেয়ে ক্রিকেট কম ঝুঁকির হলেও ইনজুরিতে পড়েন ক্রিকেটাররা। আর একবার ইনজুরিতে পড়লে শতভাগ ফিট হয়ে ওঠা কঠিন হয়ে পড়ে।

বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমের ওপর যেনো এই ইনজুরির জুজুই এখন চেপে বসেছে।  

সবশেষ এক নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়েই ইনজুরিতে পড়েছেন মোস্তাফিজ-‍মাশরাফি-তামিম-ইমরুল-মুশফিক।

এর মধ্যে মোস্তাফিজ ছাড়া সবারই আঘাতজনিত ইনজুরি।  

এ ধরণের ইনজুরি এড়িয়ে যাওয়া হয়তো সহজ নয়। কিংবা নিতান্তই দুর্ঘটনা। কিন্তু খেলার মাঠে ইনজুরিকে মেনে নিয়েই খেলোয়াড় এগিয়ে চলে। আর বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, খেলোয়াড়ের ফিটনেস যত বেশি, ইনজুরি তত কম হবে।  
কঠোর পরিশ্রম, দক্ষতা-সচেতনতা বৃদ্ধি ও স্বশিক্ষিত হওয়ার মাধ্যমেও কমিয়ে আনা যায় এর হার।

বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী গত ৮ বছরে ক্রিকেটারদের ইনজুরি নিয়ে কাজ করেছেন। আকরাম খান-হাবিবুল বাশার থেকে শুরু করে একালের মোস্তাফিজুর রহমানের ইনজুরি হ্যান্ডল করছেন তিনি।
 
বাংলানিউজের সঙ্গে আলাপে দীর্ঘ অভিজ্ঞতা থেকে তুলে ধরেছেন ক্রিকেটে ইনজুরির নানা দিক। যা জেনে উপকৃত হতে পারেন ভবিষ্যত ক্রিকেটাররা। আঘাত পেয়ে মাঠ ছাড়তে হয়েছে ইমরুল কায়েসকেওক্রিকেটে ইনজুরি 
দেবাশীষ চৌধুরী বলেন, ফুটবল, হকি কিংবা বাস্কেটবলে তাৎক্ষণিক ইনজুরি হয় মাঠের মধ্যে। ক্রিকেট কিন্তু অত ফাস্ট ফেস গেম না। ক্রিকেটে বেশিরভাগ মুভমেন্ট সরলরেখায় চলে। বোলিং, ব্যাটিং, ফিল্ডিং একটা নির্দেশনাতেই হয়। অন্য গেমে যে কোনো সময় টার্ন করতে হয়। একটা সেকেন্ড আগেও প্লেয়ারটি জানেন না পরের স্টেপটা কী হবে। নির্ভর করবে বিপক্ষ দলের প্লেয়ারের মুভমেন্টের উপর। ক্রিকেটে ‘রানিং বিটুইন দ্য উইকেট’ এর সময় একটু হেরফের হয়। সেসব হিসেবেই ক্রিকেট ঝুঁকিহীন খেলার তালিকায়। কিন্তু এখানে সমস্য হলো অতি ব্যবহার, বলেন অভিজ্ঞ এই ফিজিশিয়ান।  

তিনি বলেন, ক্রিকেটে একই কাজ ক্রিকেটারদের বার বার করতে হয়। একজন বোলার বল করছে দিনে ধরেন ১০ ওভার। মানে অন্তত ৬০টি বল। ফলে একই কাজ কিন্তু তাকে বার বার করতে হচ্ছে। এটা আবার অন্য স্পোর্টসে নেই।  

ক্রিকেটের ইনজুরি সম্পূর্ন আলাদা। যে বোলারদের অতি ব্যবহার করা হয় তাদের ইনজুরির নিরাময় করা ফাস্ট গেম খেলতে গিয়ে পড়া ইনজুরির চেয়েও কঠিন হয়ে পড়ে।

কিন্তু বোলারকেতো বল কম করতে বলা যাবে না।  তাই এটি একটি জটিল প্রক্রিয়া।  

পেছনের অভিজ্ঞতা থেকে তিনি বলেন, ৩০ বছর আগে দৌলত জামান বা শামীমদের মতো ক্রিকেটাররা নেটে একটানা ২০ ওভার বল করতেন। তবে তখন তাদের খেলা থাকতো বছরে তিন-চার মাস। ওভার ইউজড (অতি ব্যবহার) হতেন না। কিন্তু এখন সারা বছর খেলা থাকে। আগে থেকেই নির্ধারণ করে দেওয়া হয় কে কত ওভার বল করবে। আর যারা ভালো বল করেন তাদের পুরো দশ ওভারই করতে হয়। টেস্ট হলেতো আরও বেশি।  

টেস্ট খেললে মাঠে পাঁচ দিন থাকতে হয়। পরিবেশগত কারণেও কিন্তু ইনজুরি হতে পারে। সাধারণ একজন মানুষকে একটা জায়গায় ঘন্টার পর ঘন্টা কাটালে তারও খারাপ অনুভূতি হতে পারে। রোদের একটা প্রভাব তো থাকেই।  

অন্য কোনো খেলা দেড়-দুই ঘন্টার বেশি হয় না। ক্রিকেট লম্বা একটা সময় ধরে চলে। বোলিং, ফিল্ডিং, ব্যাটিং করতে হয়। সেই সঙ্গে পরিবেশের প্রভাব তো থাকেই।

আঘাতপ্রাপ্ত মুশফিকুর
পরের অংশ পড়ুন>>
হেড ইনজুরি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।