ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ক্রিকেট

যুব বিশ্বকাপে ভারতের শুভ সূচনা

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০১৬
যুব বিশ্বকাপে ভারতের শুভ সূচনা ছবি: শোয়েব মিথুন/বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

মিরপুর থেকে: আয়ারল্যান্ডকে ৭৯ রানে হারিয়ে আইসিসি অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে শুভ সূচনা করেছে এবারের আসরের শিরোপা প্রত্যাশী দল ভারত। ভারতের দেয়া ২৬৯ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ৫ বল বাকি থাকতেই ১৮৯ রানে অলআউট হয় আয়ারল্যান্ড।



বৃহস্পতিবার (২৮ জানুয়ারি) মিরপুর শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আইরিশদের বিপক্ষে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামে ভারতের যুবারা। ব্যাটিংয়ে নেমে ৯ উইকেটে ২৬৮ রানের সংগ্রহ পায় ভারত। দলটির হয়ে সরফরাজ খান খেলেছেন ৭০ বলে ৭৪ রানের ইনিংস।

ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম ওভারে জশুয়া লিটলের অফস্ট্যাম্পের বাইরের তৃতীয় বলটি ইশান কিষাণের ব্যাট ছুঁয়ে উইকেটরক্ষক টাকারের গ্লাভসবন্দি হলে  দলীয় ১ রানে উইকেট হারায় ভারত। আর কিষাণ ফেরেন ব্যক্তিগত ০ রানে। ফলে শুরুতেই বিপাকে পড়ে ভারত।

খেলার ঊষালগ্নে বিপাকে পড়া ভারতকে দ্বিতীয় উইকেটে রিসহাব প্যান্ট ও রিকি ভুই কিছুটা ধীর গতিতে খেলে বড় সংগ্রহের দিকে নিয়ে যেতে চান। তবে, ১২তম ওভারের পঞ্চম বলে রবি আন্দ্রেসের অফস্ট্যাম্পে একেবারে লাগোয়া বলটি খেলতে গেলে আবার টাকারের হাতে ধরা পড়ে দলীয় ৪৬ ও ব্যক্তিগত ৬ রানেই নিজের ইনিংসের সমাপ্তি টানেন ওপেনার রিসহাব প্যান্ট। রিসহাব আউট হয়ে গেলেও এর আগেই রিকি ভুই’র সঙ্গে গড়েন ৪৬ রানের জুটি।

৪৬ রানে দুই ওপেনারকে হারিয়ে কিছুটা ব্যাকফুটে থাকা ভারত তৃতীয় উইকেট জুটি দিয়ে খেলায় ফিরতে চাইলেও আইরিশদের পেস আক্রমণে তা হয়ে উঠেনি। রিসহাবের ফিরে যাবার পর, ১৪তম ওভারে আন্দ্রেসের দারুণ ডেলিভারি রিকি ভুই হাঁকাতে গেলে কাভার অঞ্চলে ডিনিসনের হাতে ধরা পড়লে দলীয় ৪৮ রানে তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে ভারতের ইনিংস। অবশ্য ততক্ষণে ভুই ব্যক্তিগত ৩৯ রান খেলে প্রথম তিন ব্যাটসম্যানের মধ্যে সর্বোচ্চ সংগ্রহ করেছেন।

তৃতীয় উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া ভারত চতুর্থ উইকেট জুটিতে আরমান জাফর ও সরফরাজের ব্যাটে চেয়েছিল ছন্দে ফিরতে। কিন্তু তা আর হলো কই! প্রথম তিন উইকেট আইরিশ পেসারদের দখলে থাকার পর এবারও আবার সেই পেস আঘাত। ম্যাকক্লিনটক তেমনই এক ঘাতকের নাম। ১৭তম ওভারের পঞ্চম বলটি তিনি একেবারে ফুল লেংথের ডেলিভারি দিয়েছিলেন। আরমান জাফর বলটি ড্রাইভ করতে গেলে ব্যাটের কানায় লেগে উইকেটরক্ষকের তালুবন্দি হয়ে ফিরে যান ব্যক্তিগত ৪ ও দলীয় ৫৫ রানে। দলীয় ৫৫ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে রীতিমতো দিশেহারা হয়ে পড়ে ভারত।

ওয়াশিংটন সান্ডার ও সরফরাজ খানের অনবদ্য ১১০ রানের জুটিতে বেশ বড় সংগ্রহের পথেই হাঁটছিল ভারত। কিন্তু ৩৫তম ওভারে টেকটরের ভালো ডেলিভারিতে ব্যক্তিগত ৭০ বলে ৭৪ রানের ইনিংস খেলে স্ট্যাম্পড হয়ে ফিরে যান প্যাভিলনে। ততক্ষণ ভারতের সংগ্রহ ৫ উইকেটে ১৫৫ রান।

সরফরাজের ফিরে যাবার পর কিছুটা প্রতিরোধ গড়তে চেয়েছিলেন সান্ডার। কিন্তু ৪৬তম ওভারে আন্দ্রেসের দ্বিতীয় বলটিতে ডেনিসনের হাতে ক্যাচ তুলে দিয়ে ব্যক্তিগত ৬২ রানে থামে তার ইনিংস।

এরপর, মহিপাল লমররের ১৭, জিশান আনসারির ৩৬ ও আভেষ খানের ৮, রাহুল বাথামের ৭ ও খলিল আহমেদের অপরাজিত ১ রানে ৯ উইকেটে ২৬৮ রানের সংগ্রহ পায় ভারত।

আইরিশদের হয়ে জশুয়া লিটল, ররি আন্দ্রেস ৩টি আর গ্যারি ম্যাকক্লিনটক ও হ্যারি টেকটর নেন ১টি করে উইকেট।

জবাবে, জয়ের জন্য ২৬৯ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে রান আউটের ফাঁদে পড়ে দলীয় ৮ রানে ফিরে যান দুই ওপেনার জ্যাক টেকটর ও স্টিফেন ধোনি। এরপর তৃতীয় উইকেটে ব্যক্তিগত ২০ ও দলীয় ৩৯ রানে রাহুল বাথামের অফস্ট্যাম্পের বাইরের এক্সট্রা বাউন্সার বলটি ডেনিসন থার্ড ম্যান অঞ্চলে খেলতে চাইলে ব্যাটের কাঁনায় লেগে উইকেটরক্ষকের গ্লাভস থেকে বের হয়ে গেলেও প্রথম স্লিপ থেকে তা তালুবন্দি করেন রিকি ভুই। ফলে ব্যক্তিগত ২০ রান করে ফিরে যান টপ অর্ডারের অ্যাডাম ডেনিসন।

ডেনিসন নিজের ইনিংসের সমাপ্তি টানার পর দলীয় ৪৫ ও ব্যক্তিগত ১৭ রানে আবার ওই বাথামের শর্ট লেংথের বল থেকে ভুই’র হাতে স্লিপে ক্যাপ দিয়ে ড্রেসিং রুমের দিকে হাঁটা শুরু করেন গ্যারি ম্যাকক্লিনটক।

গ্যারির উইকেট হারিয়ে চাপে পড়া আয়ারল্যান্ডকে টেনে তোলার জন্য পঞ্চম উইকেট জুটিতে লরক্যান টাকার ও উইলিয়াম ম্যকক্লিনটক বেশ দৃঢ় হাতে ব্যাট চালিয়েছেন। তাতে ফলাফলও আসে ইতিবাচক। একদিকে যেমন দুই ব্যাটসম্যানই বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচেই অর্ধশতক তুলে নিয়েছেন তেমনি দলও উঠে এসেছে লো-স্কোরে অলআউটের লজ্জা থেকে। তবে, খুব বেশিদূর দলকে নিয়ে যেতে পারেননি।

৪২তম ওভারে লেগ স্পিনার জিশান আনসারির তৃতীয় স্লোয়ার ডেলিভারির বলটি ডাউন দ্য উইকেটে এসে খেলতে চাইলে বলের লাইন মিস করেন। উইকেটরক্ষক রিসবাহ প্যান্ট স্ট্যাম্পের বেলস উঠিয়ে দিলে ব্যক্তিগত ৫৮ ও দলীয় ১৫৯ রানে রানে ক্রিজ ছাড়তে হয় উইলিয়ামকে। পঞ্চম উইকেটে এই দুই ব্যাটসম্যান ১১৩ রানের জুটি গড়েন।

এর ঠিক তিন ওভার পর আভেষ খানের শর্ট বল কিছুটা উঠে গিয়ে হ্যারি টেকটরের গায়ে আঘাত করতে চাইলে তিনি ঢাল হিসেবে ব্যাটকে ব্যবহার করতে চেয়েছিলেন, অবশ্য তাতে তার শরীর বাঁচলেও ব্যাটের কাঁনায় লেগে প্রথম স্লিপে সরফরাজ খান বলটি তালুবন্দি করলে ব্যক্তিগত ৩ রানে উইকেটের বিসর্জন দিয়ে প্যাভিলনের পথে হাঁটা শুরু করেন।

এর পরের গল্প অবশ্য শুধুই আইরিশদের যাওয়া আসার। ভারতের বোলিং তোপে যেন উইকেটে থাকা দায় হয়ে দাঁড়িয়েছিল। ফলে টেলএন্ডাররা কোন বড় সংগ্রহের স্বপ্ন না দেখে ব্যক্তিগত ৬ রানে ভারুণ চোপরা, শূন্য রানে জো লিটল, ৪ রানে স্ট্যানটম ও শূন্য রানে ররি আন্দ্রেস ফিরে গেলে সব উইকেট হারিয়ে ১৮৯ রানে থেমে যায় আইরিশদের ইনিংস।

তবে, দলটির হয়ে বেশ লড়াকু ৫৭ রানের ইনিংস খেলেছেন লরক্যান টাকার। পরে অবশ্য লমরোরের বলে আউট হয়েছেন। কিন্তু তাতে কী, তার ব্যাটেইতো এমন সংগ্রহের দেখা পায় আইরিশরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৬ ঘণ্টা, ২৮ জানুয়ারি ২০১৬
এইচএল/এমআর

** আইরিশদের ২৬৯ রানের লক্ষ্য দিল ভারত

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।